ক্যারিয়ার এবং ওহমের সূত্রের সামঞ্জস্যতা

ক্যারিয়ার মানবজীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ছাত্রজীবন শেষ হলেই শুরু হয় ক্যারিয়ার বিনির্মাণের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে সফল হতে গেলে খুব ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং পরিশ্রমের প্রয়োজন। কারণ কথায় আছে “কঠিন প্রশিক্ষণ সহজ যুদ্ধ”।

ক্যারিয়ার সম্পর্কিত অনেক আর্টিকেল আগে নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন কিন্তু আজকের আর্টিকেলটি একটু ব্যতিক্রম। এখানে টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহার করে বাস্তবজীবনের সাথে সামঞ্জস্যতার প্রচেষ্টা করা হয়েছে মাত্র।

মনে করুন, আপনি ইলেকট্রন এবং আপনার ক্যারিয়ারে সফলতার গন্তব্যে পাড়ি দেয়া পথটি পরিবাহী। ভোল্টেজ প্রয়োগ করার পূর্বে যেমন ইলেকট্রনগুলো স্থির থাকে কোন গতি/বেগ থাকেনা তেমনি বিএসসি/ডিপ্লোমা কমপ্লিট করার পর আপনি শুরুতে কিছুই বুঝে উঠতে পারবেন না যে কোথায় যাবেন, কি করবেন? এর পেছনে একটাই কারণ। ইইই জব ফিল্ড নিয়ে পরিছন্ন ধারণা না থাকা। নিজেকে নিজে মূল্যায়ন করতে না পারা।

তাহলে এক্ষেত্রে ভোল্টেজ সোর্স কে?

এক্ষেত্রে ভোল্টেজ সোর্স হল আপনার ক্যারিয়ার যুদ্ধে সফল হওয়া অগ্রজরা যারা আপনাকে মোটিভেশনের মাধ্যমে জাগিয়ে তুলবেন। এরাই আপনাকে উদ্দীপিত করার জেনারেটর বা ব্যাটারির মত কাজ করবে।

ক্যারিয়ার এর ভোল্টেজ সোর্স
মোটিভেশন

আপনার ক্যারিয়ারের কঠিন পথ পাড়ি দিতে ভোল্টেজ হিসেবে কাজ করবে কোনটি?

এবার ভোল্টেজ/পটেনশিয়াল হল আপনার মধ্যে থাকা ইচ্ছাশক্তি, প্রতিভা, শ্রমশক্তি, ধৈর্য, মনোবল। আর চাকরি পেতে হলে ঘুম, আলস্য সব কিছুকে শত্রু বানিয়ে ফেলা উচিত। নিরলসভাবে প্রস্তুতি নিলেই কোন না কোন জায়গায় ঠাই হবে নিশ্চিত।

ক্যারিয়ার যুদ্ধে ভোল্টেজ
ভোল্টেজ

বেসরকারি জবের জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নিব?

বেসরকারি/প্রাইভেট জবের জন্য আপনাকে মূল তত্ত্বীয় জ্ঞানের পাশাপাশি কিছু প্র‍্যাক্টিক্যাল কাজের দক্ষতাও থাকা জরুরি। আর এজন্য আপনি নিজ উদ্যেগে অথবা কলেজ বা ভার্সিটির কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্টের সুযোগ তৈরি করতে পারেন।

ক্যারিয়ারের যুদ্ধে সাফল্যের ক্ষেত্রে রোধ/বাধা কোনটি?

আপনার এই ক্যারিয়ারের চলার পথে রোধ থাকবেই। এখানে রোধ হিসেবে ঘুম, আলস্য, কোটা সিস্টেম, আত্নীয়প্রীতি কাজ করবে। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের রোধের মান বেশি।

ক্যারিয়ার এর পথে বাধা
ঘুম

ক্যারিয়ারের পথ পাড়ি দিতে ওহমের সূত্র কিভাবে সাহায্য করবে?

ক্যারিয়ারের পথ চলায় বাধা বা রোধ থাকবেই। তাই বলে বসে থাকলে বা নেতিয়ে পড়লে চলবেনা। আর এক্ষেত্রে আপনার পটেনশিয়ালিটি আরো বাড়াতে হবে। নিজেকে আরো বহুগুণে স্কিলড এবং যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। কারণ ভোল্টেজ যত বাড়ে, কারেন্ট তথা আপনার ক্যারিয়ারের কঠিন পথ পাড়ি দেয়ার ইচ্ছাশক্তি ততই বাড়বে। যেটি ওহমের সূত্রের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়।

গন্তব্যে পৌছে যাওয়া কিংবা যুদ্ধে সাফল্য

অবশেষে একটা সার্কিট লুপ যেমন একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে গ্রাউন্ডিং করা হয় তেমনি আপনি ক্যারিয়ারের এই দুর্গম পথ সফল হবার পর একটি বিন্দুতে বিজয়ের পতাকা গ্রাউন্ডে স্থাপন করবেন। নিউট্রাল দিয়ে যেমন কারেন্ট পুনরায় সোর্সে ফিরে যায় ঠিক সেভাবে আপনি সফল হবার পর অগ্রজের ভূমিকা নিয়ে আপনার অনুজদের মোটিভেশন দিবেন যেমনটি আপনার অগ্রজরা আপনাকে দিয়েছিল। আরেকটি মূল্যবান উক্তি হল, “No resistance can drop your potential” যখনই মনোবল হারিয়ে ফেলবেন এই উক্তিটি স্মরণ করবেন। দেখবেন পুনরায় মনোবল ফিরে পাবেন ইনশাল্লাহ।

সবশেষে বলব চাকরি পাবার জন্য যেই জিনিসগুলা লাগবে সেগুলো হলঃ

  • পড়াশুনা
  • পরিশ্রমী মনোভাব
  • উদ্যমী এবং আত্নবিশ্বাস
  • নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন এর যোগ্যতা
  • সুযোগ থাকলে ট্রেনিং নিয়ে নিজেকে কিছু বিশেষ কাজে পারদর্শী করে তোলা

আর এই ৫ টি গুণ আপনার মধ্যে না থাকলে বা অর্জন করার ইচ্ছা না থাকলে সোজাসুজি বলব চাকরি আপনার জন্য নয়। হয় ব্যবসা কিংবা অন্য পথ দেখুন। ভাল থাকবেন।

ক্যারিয়ার নিয়ে আরো কিছু পোস্ট

কিভাবে একজন দক্ষ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়?

ভাইবা বোর্ড মোকাবেলায় কিছু নিঞ্জা টেকনিক