এস এস সি পরীক্ষা উত্তীর্ণ হবার পর যারা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশুনার কথা ভাবছেন তাদের জন্য মূলত এই লেখাটি। ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Engineering) পড়াশুনা প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা থেকে একটু ভিন্ন।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে কারিগরি শিক্ষার চাহিদা ব্যাপক। এস এস সি পাশ করার পরেই চার বছর ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী লাভ করে খুব দ্রুত ক্যারিয়ার শুরু করা যায়।
যারা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে চাচ্ছেন তাদের জন্য কিছু কথাঃ
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Engineering):
ইঞ্জিনিয়ার বলতে বুঝায় মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রয়োগ। ডিপ্লোমা হলো একটি ডিগ্রী যেখানে ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক বিষয় সমান গুরুত্বদিয়ে পড়াশুনা করানো হয়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ৪ বছর মেয়াদি কোর্স। এস এস সি পরীক্ষা দেবার পর ছাত্র-ছাত্রী ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হবার যোগ্যতা লাভ করে থাকেন।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বিভিন্ন জেলা শহরে অবস্থিত সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাড়াও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিক, গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সার্ভে ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Engineering) পড়াশুনার সুবিধা সমূহঃ
- চার বছরে ডিপ্লোমা ডিগ্রী শেষ করে খুব দ্রুত চাকুরি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- যুগে যুগে ইন্ড্রাস্ট্রি সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে যেখানে ইঞ্জিনিয়ার শিক্ষার্থীদের চাকুরীর সুযোক অনেক বেশি।
- ডিপ্লোমা শিক্ষার্থিদের জন্য সরকারী চাকুরীর ক্ষেত্রে অনেক সার্কুলার হয়ে থাকে।
- দেশের বাহিরে চাকুরী করার অনেক সুযোক রয়েছে।
- সেশনজটের কোন সম্ভাবনা নেই।
- ডিপ্লোমা পাশ করার পর B.Sc ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ ছাড়াও ২ বছরের A.M.I.E তে পরে IEB মেম্বারশিপ অর্জন করার সুযোক রয়েছে।
- জেনারেল শিক্ষার চেয়ে কারিগরি শিক্ষা বেশ জনপ্রিয় এবং মর্যাদাপূর্ণ।
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর মর্যাদাপূর্ণ চাকরি অথবা পছন্দমত ব্যবসা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
ডিপ্লোমা ছাত্র-ছাত্রীরা চাকুরী পেতে হলে যেভাবে নিজেকে তৈরি করবেন তা পড়ুন
- ব্যবহারকি কাজ শেখার অনেক মাধ্যমে রয়েছে। পলিটেকনিকে অনেক ইনস্ট্রুমেন্ট রয়েছে যেখানে ব্যবহারিক ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীরা চাইলেই খুব সহজে অনেক কিছু শিখতে পারবেন।
- ডিপ্লোমা কোর্সের সার্টিফিকেট সারা বিশ্বে স্বীকৃত।
- এছাড়া মেধাগত যোগ্যতা অনুসারে বৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে।
- কিছু কিছু প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোতে বিকালের শিফট ব্যবস্থা আছে যেখানি চাকুরীর পাশাপাশি পড়াশুনা করার সুবিধা রয়েছে।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Engineering) পড়াশুনার অসুসবিধা সমূহঃ
- উচ্চ শিক্ষার (BSc) ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থিদের জন্য সরকারি ইউনভার্সিটি শুধুমাত্র ডুয়েট। ডুয়েট ছাড়া অন্য পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে চান্স নেওয়ার কোন সুযোক নেই।
- প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবার সুযোক থাকলেও কিছু কিছু ভার্সিটি আছে যেখানে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের সুযোক নেই।
- ডিপ্লোমা ৪ বছরের ডিগ্রী, ব্যাচেলার অফ সাইন্স (BSc) ৪ বছরের ডিগ্রী; সর্বমোট ৮ বছর। যেখানে এইচ এস সি ২ বছর, ব্যাচেলার ডিগ্রী ৪ বছর; সর্বমোট ৬ বছর। এক্ষেত্রে ডিপ্লোমা করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করতে চাইলে বয়স বেড়ে যাবে।
- এইচ এস সি শিক্ষার্থীর জন্য ব্যাচেলার ডিগ্রী পড়তে অনেকগুলো পাবলিক ভার্সিটি রয়েছে যেখানে ডিপ্লোমাদের জন্য শুধুমাত্র ডুয়েট।
ডুয়েটে চান্স পেতে হলে যে সকল বিষয় আপনার জেনে রাখা উচিত তা পড়ুন
- অনেক পাইভেট ভার্সিটি রয়েছে যেখানে ৩ বছরের ব্যাচেলার ডিগ্রী, কিন্তু এর সংখ্যা খুবই কম। আবার অনেক প্রাইভেট ভার্সিটি রয়েছে যেখানে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রেডিট কম। ভালো ভার্সিটিগুলোতে এক্ষেত্রে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী নিবে কিন্তু তা ৪ বছর মেয়াদি এবং এইচ এস সি শিক্ষার্থীদের সাথে একই ব্যাচে।
- কিছু কিছু IEB অন্তর্ভুক্ত ভার্সিটিগুলোতে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে কিন্তু তারা এক্ষেত্রে কোন ক্রেডিট ছাড় পাবেনা এবং কোর্স সময়সীমা ৪ বছর ও এইচ এস সি শিক্ষার্থীদের সাথে একই ব্যাচে ক্লাস করতে হবে।