সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী বিস্তারিত আলোচনা

ইলেকট্রনিক্স নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমে যে বিষয় আসে তা হলো সেমিকন্ডাক্টর। সেমিকন্ডাক্টরের গুরুত্ব কতটুকু তা জানতে একটা সংজ্ঞা যথেষ্ট।

ইঞ্জিনিয়ারিং এর যে শাখায় ভ্যাকুয়াম টিউব, গ্যাস টিউব এবং সেমিকন্ডাক্টরের মধ্যদিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহ সম্বন্ধে আলোচনা করা হয় বা গবেষণা করা হয় সেই শাখাকে ইলেকট্রনিক্স বলে।

ডায়োড ও সেমিকন্ডাক্টর সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়ুন

এই লেখাটিতে যেসকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছেঃ

  1. সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী কাকে বলে?
  2. সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী বৈশিষ্ট্য
  3. সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী প্রকারভেদ
  4. খাঁটি (ইনট্রিনসিক)  সেমিকন্ডাক্টর কি?
  5. ভেজাল মিশ্রিত (এক্সট্রেনসিক) সেমিকন্ডাক্টর কি?
  6. পি-টাইপ এবং এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টর কি?
  7. পি এন জাংশন বলতে কি বুঝায়?
  8. মেজরিটি চার্জ ক্যারিয়ার এবং মাইনরিটি চার্জ ক্যারিয়ার কি?
  9. ডোপিং কি?
  10. ডোপিং কেন করা হয়?

সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী কাকে বলে?

সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী এমন একটি পদার্থ যার কন্ডাক্টিভিটি কন্ডাক্টরের তুলনায় কম এবং ইন্সুলেটরের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ এটি পরিবাহী না এবং অপরিবাহীও নয়। সেমিকন্ডাক্টরের রেজিস্ট্যান্স (রোধ) ০.৫ ওহম থেকে ৫০ ওহমের মধ্যে হয়ে থাকে। উদাহরনঃ সিলিকন, জার্মেনিয়াম, কার্বন ইত্যাদি।

সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী বৈশিষ্ট্য

  • সেমিকন্ডাক্টরের রেজিস্টিভিটি কন্ডাক্টর এবং ইন্সুলেটরের মাঝামাঝি।
  • এর শেষ স্তরে চারটি ইলেকট্রন থাকে।
  • এর কন্ডাক্টিভিটি কন্ডাক্টরের তুলনায় কম এবং ইন্সুলেটরের তুলনায় বেশি।
  • সেমিকন্ডাক্টরের প্রয়োজনীয় পদার্থ মিশ্রিত করে কারেন্ট প্রবাহ কমানো বা বাড়ানো যায়।

সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী প্রকারভেদ

সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী মূলত দুই প্রকার

  • খাঁটি সেমিকন্ডাক্টর।
  • ভেজাল মিশ্রিত সেমিকন্ডাক্টর।

ভেজাল মিশ্রিত সেমিকন্ডাক্টর আবার দুই প্রকার

  • পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর
  • এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টর

খাঁটি (ইনট্রিনসিক)  সেমিকন্ডাক্টর কি?

সিলিকন এবং জার্মেনিয়াম কে খাঁটি সেমিকন্ডাক্টর বলা হয়। খাঁটি সেমিকন্ডাক্টরে কোন ভেজাল মেশানো থাকে না।

ভেজাল মিশ্রিত সেমিকন্ডাক্টর (Extrinsic Semiconductor)

খাঁটি সেমিকন্ডাক্টরের সাথে উপযুক্ত পরিমান অন্য কোন ভেজাল পদার্থ মিশ্রিত করে ভেজাল সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা হয়।  ত্রিযোজী এবং পঞ্চযোজী মৌল গেলিয়াম, ইন্ডিয়াম ইত্যাদির সাথে সেমিকন্ডাক্টর পদার্থ মিশ্রিত করলে অনেক ফ্রী ইলেকট্রন উৎপন্ন হয়।

পি-টাইপ এবং এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টর কি?

পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর

পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর হল এমন এক ধরনের সেমিকন্ডাক্টর যার হোলের সংখ্যা ইলেকট্রনের সংখ্যার চেয়ে বেশি।

সেমিকন্ডাক্টর কি

এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর

যে সব সেমিকন্ডাক্টর হোলের সংখ্যা ইলেকট্রনের সংখ্যার চেয়ে কম তাকে এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টর বলে।

সেমিকন্ডাক্টর কি

পি-এন জাংশন বলতে কি বুঝায়?

একটি পি-টাইপ এবং একটি এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর উভয়ই একত্রে সংযুক্ত করলে যে একটি জাংশনের সৃষ্টি হয় তাকেই পি-এন জাংশন বলে।

সংকেতঃ

সেমিকন্ডাক্টর কি

মেজরিটি চার্জ ক্যারিয়ার এবং মাইনরিটি চার্জ ক্যারিয়ার কি?

মেজরিটি চার্জ ক্যারিয়ার

খাঁটি সেমিকন্ডাক্টরের ডোপিং মিশ্রিত করে ভেজাল সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা হয়। এদের মাঝে ফ্রী ইলেকট্রন ও হোলের মাঝে যেটির পরিমান বেশি থাকে সেটিকে মেজরিটি ক্যারিয়ার বলে।

এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে ফ্রী ইলেকট্রন এবং পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে হোল হলো মেজরিটি ক্যারিয়ার।

মাইনরিটি চার্জ ক্যারিয়ার

আমরা জানি খাঁটি সেমিকন্ডাক্টরের ডোপিং মিশ্রিত করে ভেজাল সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা হয়। এই ভেজাল মিশ্রিত সেমিকন্ডাক্টরের মাঝে ফ্রী ইলেকট্রন এবং হোল উভয়ই বিদ্যমান থাকে। এই ফ্রী ইলেকট্রন এবং হোল যেটির পরিমান কম থাকে তাকেই মাইনরিটি চার্জ ক্যারিয়ার বলে।

ডোপিং কি?

খাঁটি সেমিকন্ডাক্টরের মধ্যে ভেজাল মিশিয়ে ফ্রী ইলেকট্রন বা হোল উৎপাদনকারী সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করার পদ্ধতিকে ডোপিং বলে।

ডোপিং কেন করা হয়?

ডোপিং করার মাধ্যমে যে কোন ডিভাইসের কারেন্ট প্রবাহ কমানো-বাড়ানো যায়।

ডায়োড ও সেমিকন্ডাক্টর সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়ুন