ইলেকট্রিক্যাল বিষয়ে পড়াশুনা করতে প্রথমে যে টপিক গুলো আসে তাদের মধ্যে কারেন্ট, ভোল্টেজ, পাওয়ার ইত্যাদি দেখা যায়। এইগুলো সম্পর্কে সবারই জানার আগ্রহ অনেক বেশি। এই লেখাতে আমরা এই সাধারণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
- কারেন্ট কাকে বলে ও কত প্রকার?
- এম্পিয়ার কি ও কিভাবে এম্পিয়ার মাপে?
- ভোল্টেজ কাকে বলে?
- ভোল্টেজ কিভাবে মাপা হয়ে থাকে?
- পাওয়ার কাকে বলে?
- ওয়াট কাকে বলে?
- ওয়াট কিভাবে মাপে?
- এনার্জি বা শক্তি কাকে বলে?
কারেন্ট কাকে বলে ও কারেন্ট কত প্রকার?
সহজ ভাষায় ইলেকট্রিক চার্জের প্রবাহকেই কারেন্ট বলে অর্থাৎ কন্ডাক্টর বা পরিবাহী মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনের প্রবাহই কারেন্ট।
কারেন্ট কে চিহ্নিত করা হয় I দ্বারা এবং এর একক কুলম্ব/সেকেন্ড বা এম্পিয়ার (Ampere) A
প্রকারভেদ
কারেন্ট কে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
- অল্টারনেটিং কারেন্ট বা এসি (Alternating current)
- ডাইরেক্ট কারেন্ট বা ডিসি (Direct Current)
অল্টারনেটিং কারেন্টঃ সময়ের সাথে যে কারেন্টের মান পরিবর্তিত হয় তাকে সাধারণত অল্টারনেটিং কারেন্ট বলে।
ডাইরেক্ট কারেন্টঃ ডিসি বা ডাইরেক্ট কারেন্ট যার মান সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় না।
নিচে অলটারনেটিং ও ডাইরেক্ট কারেন্টের চিত্র দেখানো হয়েছে।
এম্পিয়ার কি ও এম্পিয়ার কিভাবে মাপে?
এম্পিয়ারঃ কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে এক কুলম্ব চার্জ এক সেকেন্ড সময় ধরে প্রবাহিত হলে ঐ পরিমান চার্জকে ১ এম্পিয়ার বলে।
কারেন্ট পরিমাপ করা হয় এম্পিয়ার দ্বারা।
এম্পিয়ার কিভাবে পরিমাপ করা হয়ঃ এম্পিয়ার সাধারণত মাপা হয় এমিটার (এম্পিয়ার মিটার) দিয়ে। কারেন্ট মাপা হয় সাধারণত লোডের সাথে সিরিজে। নিচে চিত্র দেখানো হয়েছে। চিত্রের ন্যায় সংযোগ করে লোডের কারেন্ট পরিমান করা যায়।
ভোল্টেজ কাকে বলে?
ভোল্টেজ হল এক ধরনের বৈদ্যুতিক চাপ। পরিবাহীর অভ্যন্তরীণ থাকা ইলেকট্রন (ঋণাত্মক কনিকা) সমূহকে স্থানচ্যুত করতে যে ফোর্স বা চাপের প্রয়োজন হয় তাকে ভোল্টেজ বলে।
ভোল্টেজের প্রতীক হলো V এবং এর একক হলো ভোল্ট (Volt)
ভোল্টেজ পরিমাপ করে কিভাবে?
ভোল্টেজ পরিমাপ করা হয় ভোল্টমিটার দিয়ে। ভোল্টমিটারের দুটি প্রোবকে বৈদ্যুতিক সোর্সের সাথে প্যারালালে সংযুক্ত করে ভোল্টেজ পরিমাপ করা হয়। নিচে চিত্রের ন্যায় সংযোগ করে ভোল্টেজ পরিমাপ করা যাবে।
পাওয়ার কাকে বলে?
একটি সার্কিটের মধ্যে দিয়ে যে হারে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়ে কাজ সম্পন্ন করে তাকে ইলেকট্রিক পাওয়ার বলে। একে সাধারণত P দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
এর একক work/time = কাজের একক জুল এবং সময়ের একক সেকেন্ড অর্থাৎ জুল/সেকেন্ড এর SI একক ওয়াট (watt)। ইলেকট্রিক পাওয়ার পরিমাপ করা হয় ওয়াটে।
P=work done per unit time
P=V * Q / t
P = V * I * t / t (Q=I*t)
P= V * I
এখানে Q = ইলেকট্রিক চার্জ কুলম্বে
t = সময় সেকেন্ডে
I = কারেন্টের এম্পিয়ারে
V = পটেনশিয়াল ভোল্টেজ ভোল্টে
ওয়াট কাকে বলে?
আমরা জেনেছি যে ক্ষমতার SI একক ইউনিট। যেকোন যন্ত্রের চলার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়। কোন লোড নির্দিষ্ট সময়ে যতটুকু শক্তি খরচ করে কোন কাজ সম্পন্ন করে সেই হিসাবকেই ওয়াট বলে।
এভাবে ও বলা যায়, যে ক্ষমতায় প্রতি সেকেন্ডে এক জুল পরিমান কাজ সম্পন্ন হয় তাকে ওয়াট বলে।
ওয়াট কিভাবে মাপা হয়?
ওয়াট পরিমাপ করার জন্য সাধারণত ওয়াট মিটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে নিচের সূত্রের সাহায্যেও ওয়াট বের করা যায় যায়।
যেমনঃ
- P = V * I * Cosθ
- P = I2 * R * Cosθ
- P = (V2 * Cosθ)/R
P = Power, এর একক ওয়াট
I = Current, এর একক হলো এম্পিয়ার
V = Voltage, এর একক হলো ভোল্ট
R = Resistance যার একক হলো ওহম
Cosθ = Power factor যা ফেজ এঙ্গেলের মান
এনার্জি বা শক্তি কাকে বলে?
বৈদ্যুতিক ক্ষমতা বা পাওয়ার একটি সার্কিটে যতক্ষন কাজ করে, পাওয়ারের সাথে উক্ত সময়ের গুনফলকে বৈদ্যুতিক শক্তি বা এনার্জি বলে। এনার্জি একক সাধারণত watt-hour বা Kilowatt-hour
অর্থাৎ এনার্জি, W = P * T
P = Power
T = Time
এনার্জি মিটারের সাহায্যে সাধারণত এনার্জি পরিমাপ করা যায়।
এই লেখাটি পিডিএফ ডাউনলোড করুনঃ কারেন্ট, ভোল্টেজ, পাওয়ার, ওয়াট, এনার্জি সহজ ভাষায় আলোচনা.pdf