সেন্সর হলো একধরনের যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা পরিবেশের কোন পরিস্থিতি (শব্দ, তাপ, আলো) ইত্যাদি প্রতি সাড়া দিতে পারে।
Sensor হচ্ছে এক ধরনের কনভার্টার যা পরিবেশগত কোন পরিবর্তনকে সিগন্যালে পরিণত করে। মানুষ তার চোখ, কান, নাক দিয়ে পরিবেশ থেকে বিভিন্ন অনুভূতি নিতে পারে কিন্তু যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। যন্ত্রপাতি পরিবেশের কোন ঘটনাকে বৈদ্যুতিক সিগন্যালে রূপান্তরিত করতে পারে।
অর্থাৎ Sensor এমন একটি ডিভাইস যা ফিজিক্যাল প্রপারটিকে (তাপ, শব্দ, আলো ইত্যাদি) কে সনাক্ত করে এবং তথ্যগুলোকে সিগন্যালে রূপান্তরিত করে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে প্রেরন করে থাকে। Sensor ফিজিক্যাল প্যারামিটার(তাপ, শব্দ, আলো ইত্যাদি) কে কনভার্ট করে সিগন্যালে যা ইলেক্ট্রিক্যালি মেজার করা করা যায়।
Sensor প্রকারভেদ
Sensor মূলত দুই প্রকার যথাঃ
- Analog Sensor
- Digital Sensor
Analog Sensor
- পিটি – ১০০
- থার্মোকাপল
Digital Sensor
- পি এন পি
- এন পি এন
পি এন পি, এন পি এন
- Photo Sensor
- Proximity Sensor
এনালগ সেন্সর
পিটি-১০০ (Platinum resistance thermometers)
Pt বলতে বুঝায় যে সেন্সরটি প্লাটিনামের তৈরি আর ১০০ বলতে বুঝায় যে 0’C এ সেন্সরের ১০০ ওহম রেজিস্ট্যান্স আছে। এই সেন্সরের প্রধান কাজ হলো প্ল্যাটিনাম এলিমেন্টের রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করা। অর্থাৎ টেম্পারেচার বাড়লে রেজিস্ট্যান্স বাড়বে।
থার্মোকাপল
তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য থার্মোকাপল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই থার্মোকাপলে একটি হলুদ এবং একটি লাল তার ব্যবহার করা হয়েছে। থার্মোকাপল টেম্পারেচারের উপর নির্ভর করে ভোল্টেজ তৈরি করে।
ডিজিটাল সেন্সর
ফটোসেন্সর
এটি এমন এক ধরনের Sensor যা আলোকে সেন্স করতে পারে এবং সুইচিং করে থাকে।
প্রক্সিমিটি সেন্সর
প্রক্সিমিটি Sensor হলো এক প্রকার Sensor যা কোনো রকম স্পর্শ ছাড়াই নিকটবর্তী বস্তু শনাক্ত করতে পারে। সাধারনভাবে এই ধরনের Sensor একটি তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরী করে বা তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ নিঃসরণ করে এবং তার পরিবর্তন থেকে বস্তু কতটা কাছে, দূরে বা এর প্রকৃতি কি তা নির্ধারণ করে।
নানা ধরনের Proximity Sensor নানা ধরণের বস্তুর প্রকৃতি নির্ণয় করতে ব্যবহার করা হয়, যেমন Capacitive Sensor ব্যবহার করা হয় প্লাস্টিক, কাঠ বা নানা অপরিবাহী/পরিবাহী বস্তু সনাক্ত করতে। Inductive Sensor ব্যবহার করা হয় ধাতব চৌম্বকীয় পদার্থ সনাক্ত করতে ইত্যাদি।
প্রক্সিমিটি Sensor (Proximity sensor) এর তিনটি তার থাকে ব্ল্যাক, ব্লু, ব্রাউন।
BK= Black হল আউটপুট
BR= Brown হল পজেটিভ
BU= Blue হল নেগেটিভ
প্রক্সিমিটি সেন্সর (Proximity sensor) দুই প্রকার যথাঃ
- PNP
- NPN
PNP SENSOR এর সুইচিং হয় নেগেটিভ থেকে এবং NPN SENSOR এর সুইচিং হয় পজেটিভ থেকে।
PNP Sensor এর কানেকশন:
NPN সেন্সরের কানেকশন:
ইলেকট্রনিক্স প্রজেক্টে ব্যবহিত বিভিন্ন সেন্সর
ইলেকট্রনিক্স কাজে বেশ কিছু Sensor ব্যবহার করা হয় যেমনঃ
- টেম্পারেচর Sensor
- দূরত্ব Sensor
- প্রক্সিমিটি Sensor
- টাচ Sensor
- ফটো ট্রানজিস্টর
- ফটো ডায়োড
- প্রেসার Sensor
- চুম্বক Sensor
- আদ্রতা Sensor
- মোশন বা মুভমেন্ট Sensor
এল ডি আর (LDR)
LDR হলো Light Dependable Resistor অর্থাৎ আলোর উপর নির্ভরশীল রেজিস্টর। আলোর উপর নির্ভর করে LDR মান কম বেশি হয়।
এর নির্দিষ্ট কোন ভ্যালু থাকেনা। তবে এর সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন ভ্যালু থাকে। এর আরো একটি জনপ্রিয় নাম ফটো রেজিস্টর। সাধারণত ছোট এলডিআর গুলোর ১ মেগা ওহম পর্যন্ত রেজিস্ট্যান্স হয় যেখানে বড় গুলোর রেজিস্ট্যান্স ১০০ কিলো ওহম বা এর আশেপাশে হতে পারে।
উল্লেখ্য যে বাজারে দুই ধরণের এলডিআর পাওয়া যায় যেমনঃ
- আলো পড়লে রেজিস্ট্যান্স কমে
- আলো পড়লে রেজিস্ট্যান্স বাড়ে
ডিসটেন্স সেন্সর বা Sonar Sensor
দূরত্ব মাপার জন্য বিভিন্ন রোবট, পথে কোন ধরনের বাধা আছে কিনা বা পানির নিচে কমিউনিকেশনের জন্য সোনার Sensor ব্যবহার করা হয়।
তাপমাত্রা সেন্সর (LM 35)
এ ধরনের সেন্সর তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে হাই ভোল্টেজ দিয়ে থাকে আর কমার সাথে সাথে লো ভোল্টেজ দিয়ে থাকে। এ ধরনের Sensor দিয়ে তাপমাত্রার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রজেক্ট তৈরি করা যায় এছাড়া রুম টেম্পারেচার কন্ট্রোলার, রোবট ইত্যাদি স্থানে ব্যবহার করা হয়।
ফটো-ট্রানজিস্টর
এটা একধরনের ট্রানজিস্টর, এর উপর যখন আলো পড়ে তখনি এটা কাজ করে। আলো ট্রানজিস্টরের বেস পিনের ন্যায় কাজ করে। এটি সুইচের মত কাজ করে, যখন আলো পরে তখন কারেন্ট প্রবাহিত হয়, কিন্তু অন্ধকারে হয় না।
টাচ সেন্সর
এটা এমন এক ধরনের Sensor যেখানে স্পর্শ করা মাত্র তা থেকে সিগন্যাল বের হয়।স্পর্শকতার যেকোন কিছু বানাতে এটা কাজে লাগে।
প্রেসার সেন্সর
এটি এমন এক ধরনের Sensor যেখানে চাপ প্রয়োগ করলে চাপের উপর নির্ভর করে এটি বিভিন্ন সিগন্যাল জেনারেট করে থাকে। বাতাসের চাপ পরিমাপ করার জন্য এটা খুব ভালো কাজে লাগে।
ম্যাগনেটিক সেন্সর
চুম্বকের উপস্থিতিতে এটার সিগন্যাল ভ্যালু পরিবর্তিত হয়। যেসকল প্রজেক্টে ম্যাগ্নেট ব্যবহার আছে যেমনঃ অটোমেটিক ডোর লকিং সিস্টেম – এমন জায়গায় ম্যাগ্নেটিক Sensor ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
হিউমিডিটি সেন্সর
বাতাসের আদ্রতা পরিবর্তনের সাথে সাথে এর সিগন্যালও পরিবর্তন হয়ে থাকে। এই ধরনের সেন্সরের সাহায্যে আদ্রতা পরিমাপ করা যায়।
মোশন বা মুভমেন্ট সেন্সর
ইলেকট্রনিক্স মজার প্রজেক্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে এই Sensor টি খুব ভালো ব্যবহার হয়। সামনে কোন জিনিশ নড়তে দেখলেই এটা একটিভ হয়ে সাথে সিগন্যালে ভোল্টেজ প্রেরণ করে দেয়। এই ধরনের Sensor সিকিউরিটি সিস্টেম থেকে শুরু করে ট্রাফিক কন্ট্রোল ও বিভিন্ন প্রজেক্টে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।