এই লেখাটি পড়ার পূর্বে আমাদের বেশ কিছু বিষয় জেনে রাখা উচিত। যেমন রেক্টিফায়ার, হাফ ওয়েভ রেক্টিফায়ার, ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার এর সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন টপিক। আমরা পূর্বের লেখাতে এই সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তাই ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার ও ব্রিজ রেক্টিফায়ার সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়ার পূর্বে নিচের দুটি আর্টিকেল দেখে নিতে পারেন। আর যারা রেক্টিফায়ার সম্বন্ধে জানেন তারা নিচের আর্টিকেল গুলো না দেখলেও চলবে।
ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার
ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার মানে পূর্ণ তরঙ্গ কে রেকটিফাই করবে। অর্থাৎ ফুল ওয়েভ রেক্টিফায়ারের ইনপুটে যখন পূর্ণ সাইকেল দেওয়া হবে তখন পজিটিভ সাইকেলের জন্য ও নেগেটিভ সাইকেলের জন্য এর আউটপুটে কারেন্ট ফ্লো হবে।
এই কাজটি করবে মূলত দুটি ডায়োডের সাহায্যে। ইনপুট ভোল্টেজের পজিটিভ হাফ সাইকেলের জন্য একটি ডায়োড কাজ করবে ও নেগেটিভ হাফ সাইকেলের জন্য অপরটি ডায়োডটি কাজ করবে। অর্থাৎ কারেন্ট সবসময় একই ডিরেকশনে লোডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে।
ফুল ওয়েভ রেক্টিফিকেশনের জন্য দুই ধরনের সার্কিট সচরাচর ব্যবহার করতে দেখা যায়।
- সেন্টার টেপ ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার
- ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ার
সেন্টার টেপ ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার
সেন্টার টেপ ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার তৈরি করতে যা যা লাগবেঃ
- এসি সাপ্লাই
- ট্রান্সফরমার
- ডায়োড ২ টি
- লোড রেজিস্টর
উপরের চিত্রে ইনপুট এসি সিগন্যাল দেখানো হয়েছে এবং আউটপুটে ডিসি সিগন্যাল দেখানো হয়েছে। ট্রান্সফরমারের সেকেন্ডারি উয়াইন্ডিং এ সেন্টার টেপ করে লোড রেজিস্টর বা আউটপুটের সাথে যুক্ত করা হয়েছে যে কারনে একে সেন্টার টেপ ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার বলা হয়ে থাকে। উপরের চিত্রে দুটি ডায়োড ব্যবহার করা হয়েছে ডায়োড D1 & D2.
এখানে,
I = কারেন্ট
D = ডায়োড
RL = লোড রেজিস্টর
T = ট্রান্সফরমার
+ = পজেটিভ হাফ সাইকেল
– = নেগেটিভ হাফ সাইকেল
A & B = দুটি প্রান্ত
অপারেশনঃ
পজেটিভ হাফ সাইকেলের ক্ষেত্রে, সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর A প্রান্ত পজেটিভ হবে এবং B প্রান্ত নেগেটিভ হবে। এক্ষেত্রে A প্রান্তের ডায়োড ফরোয়ার্ড বায়াস হবে (কন্ডাকশনে যাবে ডায়োডের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী) এবং B প্রান্তের ডায়োড রিভার্স বায়াস হবে (কোন কারেন্ট ফ্লো হবে না)।
অর্থাৎ যখন ডায়োড D1 ফরোয়ার্ড বায়াস বা কন্ডাকশনে যাবে তখন ডায়োড D2 রিভার্স বায়াস হবে। এমন অবস্থায় কারেন্ট ফ্লো হবে ডায়োড D1 দিয়ে ও লোড রেজিস্টর RL দিয়ে যা এরো –> দিয়ে সার্কিটে দেখানো হয়েছে।
নেগেটিভ হাফ সাইকেলের ক্ষেত্রে, সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর B প্রান্ত পজেটিভ ও A প্রান্ত নেগেটিভ। এক্ষেত্রে B প্রান্তের ডায়োড D2 ফরোয়ার্ড বায়াস ও A প্রান্তের ডায়োড D1 রিভার্স বায়াস। এমন অবস্থায় D2 দিয়ে কারেন্ট ফ্লো হবে এবং D1 রিভার্স বায়াস হবে।
ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেক্টিফায়ার
উপরের চিত্র লক্ষ্য করলে দেখতে পাবো যে ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ারে চারটি ডায়োড, একটি ট্রান্সফরমার, একটি লোড রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়েছে। চারটি ডায়োড D1, D2, D3 & D4 সাধারণত এমনভাবে সংযুক্ত আছে যা দেখতে অনেকটা ব্রিজ এর মত। A এবং B প্রান্তের সাথে লোড রেজিস্টর সংযুক্ত রয়েছে।
অপারেশনঃ
পজেটিভ হাফ সাইকেলের ক্ষেত্রে, সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর P প্রান্ত পজেটিভ ও Q প্রান্ত নেগেটিভ হবে। ফলে ডায়োড D1 & D3 ফরোয়ার্ড বায়াস হবে যেখানে ডায়োড D2 & D4 রিভার্স বায়াস। একারনে মূলত ডায়োড D1 & D3 কন্ডাকশনে যাবে। এই দুটি ডায়োড D1 & D3 লোড রেজিস্টরের সাথে সিরিজে সংযুক্ত থাকবে। কারেন্ট ফ্লো হবে A থেকে B দিকে।
নেগেটিভ হাফ সাইকেলের ক্ষেত্রে, সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর P প্রান্ত নেগেটিভ ও Q প্রান্ত পজেটিভ হবে। ফলে ডায়োড D2 & D4 ফরোয়ার্ড বায়াস হবে যেখানে ডায়োড D1 & D3 রিভার্স বায়াস। একারনে মূলত ডায়োড D2 & D4 কন্ডাকশনে যাবে। ফলে পুনরায় কারেন্ট ফ্লো হবে A থেকে B দিকে।