1G, 2G, 3G, 4G বলতে কি বুঝায়? এদের মধ্যে পার্থক্য কি?

1G, 2G, 3G এই টার্মগুলো আমাদের নিত্যদিনের পরিচিত। আমরা মূলত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি। আমাদের চারদিকে তাকালেই দেখা যাবে জিপি, রবি, বাংলালিংক, টেলিটক ও বিভিন্ন রেডিও ও ডিশ কোম্পানির এন্টেনা বা সেল টাওয়ার। যারা প্রতিনিয়ত রেডিও সিগন্যাল বিকিরণ করেই যাচ্ছে। আর আমরা বিভিন্ন প্রকার প্রযুক্তিতে তাদের ব্যবহার করছি। ইন্টারনেট ডাটা স্পীড, প্রযুক্তির বহুমুখী ব্যবহারের ভিত্তিতে আমরা মূলত এই টার্মগুলো ব্যবহার করে থাকি।

আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা নিম্নোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে পরিষ্কার ধারণা তৈরি করবঃ

  • 1G, 2G, 3G বলতে কি বুঝায়?
  • 1G, 2G, 3G এর মধ্যে পার্থক্য কি?

1G, 2G, 3G, 4G বলতে কি বুঝায়?

অনেকের মনে মনে একটা প্রশ্ন কাজ করছে, এই টার্মগুলোর মধ্যে “G” দিয়ে কি বুঝায়? এখানে, “G” দিয়ে Generation বুঝায়। বংশধারার ক্ষেত্রে আমরা এই জেনারেশন শব্দটা ব্যবহার করে থাকি। লক্ষ্য করলে দেখবেন, এক জেনারেশনের সাথে এক জেনারেশনের আচরণ, চালচলনে অনেক পার্থক্য। একইভাবে প্রযুক্তিগত দিক থেকেও 1G, 2G, 3G এর মধ্যে অনেক পার্থক্য। চলুন পার্থক্যগুলো জেনে নেয়া যাক।

1G, 2G, 3G, 4G এর মধ্যে পার্থক্য কি?

1G:

1G হল মোবাইল সেলুলার সিস্টেমের প্রথম ধাপ যা 1980 সালে আবিষ্কার করা হয় । যার সর্বোচ্চ ব্যান্ডউইথ ছিল 14.4kb/s । এটাতে সার্কিট সুইচিং ডাটা ব্যবহার করা হত। এই 1G নেটওয়ার্ক দিয়ে শুধুমাত্র অডিও কল করা যেত। কিন্তু কোনো এস এম এস করা যেত না এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেত না। 1G নেটওয়ার্ক যেসব সিস্টেম অনুসরণ করে তা হল-

  • AMPS (Advanced Mobile Phone System)। এই প্রযুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহার করা হত।
  • NMT (Nordic Mobile Telephone)
  • TACS (Total Access Communications System)। এই প্রযুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহার করা হত।

2G:

আমরা জানি, প্রযুক্তি পরিবর্তনশীল। 1G নেটওয়ার্ককে 1990 সালে আরো একটু উন্নত করা হয় এবং তার নামকরণ করা হয় 2G (Second Generation)। এটার সর্বোচ্চ স্পীড ছিল 144 kb/s। 2G-র অন্যতম বড় বৈশিষ্ট্য ছিল যে এই নেটওয়ার্কের সাহায্যে ভয়েস কলের পাশাপাশি এস এম এস পাঠানো যেত এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেত । 2G নেটওয়ার্ক যেসব সিস্টেম অনুসরণ করে তা হল-

– GSM (2G)/Global System For mobile

– CDMA/Code Division Multiple Access

– TDMA/Time Division Multiple Access

আর 2G তে Circuit Data-র পরিবর্তে প্যাকেট ডাটা সুইচিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। যার দরুন GPRS ব্যবহার করা যায়। এতে EDGE (Enhanced Data Rates for GSM Evolution) প্রযুক্তিও ব্যবহার করা যায়। যার ব্যান্ডইথ 200kb/s পর্যন্ত হতে পারে।

3G:

3G হল সেলুলার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের ৩য় ধাপ। এটার সর্বোচ্চ স্পীড হল 200kb/s – 1 mb/s। এই প্রযুক্তির বড় বৈশিষ্ট্য হল যে এটার সাহায্যে ভিডিও কনফারেন্স করা যায় এবং ডাটা স্পীড আগের চেয়ে অনেক বেশি। 3G নেটওয়ার্ক যেসব প্রটোকল ব্যবহার করে তা হলঃ

  • UMTS (Universal Mobile Telecommunications System), CDMA2000, EDGE
  • HSPA (High Speed Packet Access), shorter Transmission Time Interval (TTI)
  • HSPUA (High Speed Uplink Packet Access)

4G:

4G হল Fourth Generation Cellular System। এটা সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পন্ন নেটওয়ার্ক। যার স্পীড হল 100mb/s। এটা 3G থেকে অনেক অনেক বেশি স্পীড সম্পন্ন ।আর 3G থেকে অনেক অনেক বেশি স্পীড হওয়ার কারনে 4G দিয়ে High Quality Television দেখা যায়।

আজকের এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে। আগামীতে এরকম আরো মজার মজার টেলিকমিউনিকেশন আর্টিকেল নিয়ে হাজির হবো ইনশাল্লাহ।

আরো কিছু আর্টিকেল

ঈদের আগে কতজন লোক ঢাকা ছাড়ল তা কিভাবে হিসেব করা হয়? | সেলুলার মোবাইল নেটওয়ার্ক

টাওয়ারের এন্টেনা ডিজাইন কিভাবে করা হয় বিস্তারিত পড়ুন

সেলুলার নেটওয়ার্ক ও লোকাল কল সম্বন্ধে মজার তথ্য জেনে নিন