Power factor Correction বা Power Factor Improvement বলতে আমরা সহজে বুঝি কোন একটা সিস্টেমে Reactive পাওয়ার এর পরিমান কমিয়ে Active পাওয়ার এর পরিমান বাড়ানো। আপনার কোম্পানিতে পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান বেশি কমে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান জরিমানা করতে পারে। কারণ নিম্ন মানের পাওয়ার ফ্যাক্টরের ক্ষমতা সরবরাহ করলে সরবরাহ লাইনের তড়িৎ প্রবাহ বেড়ে যায়। আর জরিমানার জন্য ধার্যকৃত চার্জকে বলে প্যানাল্টি চার্জ। তাই অতিরিক্ত পাওয়ার ফ্যাক্টর কোম্পানির বেশ মাথা ব্যথার কারণ বটে।
কিভাবে পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান বৃদ্ধি করা যায়?
আমরা সাধারণত ক্যাপাসিটর ব্যাংক বা সিনক্রোনাস কন্ডেন্সার বা ফেজ এডভান্সার ব্যবহার করে পাওয়ার ফ্যাক্টর Correction ও improve করে থাকি। কোম্পানিতে আলাদাভাবে Power Factor Improvement প্যানেল ব্যবহার করা হয় শুধুমাত্র প্যানাল্টি চার্জ এবং যাবতীয় সমস্যা রোধ করার জন্যই।
পাওয়ার ফ্যাক্টর কম হলে কি কি সমস্যার উদ্ভব ঘটে?
- কোনো একটি সিস্টেমের পাওয়ার ফ্যাক্টর যদি কম হয়, তবে ঠিক একই পরিমাণ ক্ষমতা (P) পেতে হলে আপনাকে বেশী kVA রেটিং এর যন্ত্রের প্রয়োজন হবে। যে যন্ত্রের kVA রেটিং বেশী, সেটি বেশি ব্যয়বহুল। অর্থাৎ খরচ বেড়ে যাবে।
- আর যদি আপনি একই যন্ত্র ব্যবহার করে থাকেন (অর্থাৎ S এবার fixed) তাহলে নিম্ন পাওয়ার ফ্যাক্টরের কারণে আপনার Active power বা কার্যকর ক্ষমতা (P) কমে যাবে।
- নিম্ন মানের পাওয়ার ফ্যাক্টরের ক্ষমতা সরবরাহ করলে সরবরাহ লাইনের তড়িৎ প্রবাহ বেড়ে যায়।
- আর তড়িৎ প্রবাহ বেশী হলে সিস্টেম লস অর্থাৎ সরবরাহ লাইনে বিদ্যুতের অপচয় হবে (Ploss=I2×R)।
- অধিক বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য তারের পুরুত্ব বাড়াতে হবে। এতে খরচ বেড়ে যায়। একারণে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা আপনাকে চার্জ করতে পারে।
এ পর্যন্ত বিভিন্ন সাইটে, গ্রুপে স্ট্যাটিক ক্যাপাসিটর ব্যাংক ব্যবহার করে কিভাবে পাওয়ার ফ্যাক্টর বৃদ্ধি করা যায় সে ব্যাপারে ব্যাপক আলোচনা করা হয়েছে। আজ একটু ভিন্ন স্বাদ নেয়া যাক। আজ কিভাবে সিনক্রোনাস কন্ডেন্সার বা সিনক্রোনাস মোটর ব্যবহার করে পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান বৃদ্ধি করা যায় সে ব্যাপারে আলোকপাত করব। প্রথমে সিনক্রোনাস কন্ডেন্সারের সংজ্ঞাটা জানব তারপর কিভাবে এর মাধ্যমে পাওয়ার ফ্যাক্টর উন্নত করা যায় তা জানব।
সিনক্রোনাস কন্ডেন্সার
একটি সিনক্রোনাস মোটর যখন ওভারএক্সাইটেড হবে তখন কারেন্ট লিডিং এ থাকে এবং ক্যাপাসিটরের মতো কাজ করে। আর যখন এ ওভারএক্সাইটেড সিনক্রোনাস মোটরকে লোডবিহীন অবস্থায় পাওয়ার ফ্যাক্টরের উন্নীতকরণের জন্য লাইনে সংযুক্ত করে অপারেট করা হয়, তখন তাকে সিনক্রোনাস কন্ডেন্সার বলে।
এক্সাইটেশন মূলত কি?
এক্সাইটেশন শব্দটি থেকেই অনুমান করা যাচ্ছে যে, উদ্দীপিত বা উত্তেজিত করার কোন প্রক্রিয়া। মনে করুন, আপনার একজন বন্ধু আছে যে পড়াশোনায় বেশ অমনোযোগী। সারাদিন মোবাইল গেম আর ঘুম নিয়েই সে ব্যস্ত থাকে। বই এর কাছে যেন তার যেতেই ইচ্ছে করেনা। কিন্তু পরীক্ষার যখন তারিখ নির্ধারণ করা হয় তখন সে বই নিয়ে পড়তে বসে। এখানে তার পড়তে বসার ক্ষেত্রে উদ্দীপনা হিসেবে কাজ করেছে পরীক্ষা। কাজেই বলা যায়, পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার বন্ধুর পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরির জন্য এক্সাইটেশন সিস্টেমের নাম হল এক্সাম। এক্সাম না নেয়া হলে হয়ত সে বই নিয়েই বসত না।
তেমনিভাবে সিনক্রোনাস মেশিনের রোটর উইন্ডিংয়ের প্রয়োজনীয় ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড সরবরাহ করার জন্য এতে আলাদা সোর্সের মাধ্যমে কারেন্ট সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যে সিস্টেমটি ব্যবহৃত হয়, এই জাতীয় সিস্টেমকে এক্সাইটেশন সিস্টেম বলা হয়। এখানে এক্সটার্নাল সোর্সকে এক্সাম এবং রোটর উইন্ডিংকে আপনার অমনোযোগী ছাত্র ভেবে নিতে পারেন।
সিনক্রোনাস কন্ডেন্সার ব্যবহারের সুবিধা
- ফিল্ড এক্সাইটেশনকে পরিবর্তন করে কারেন্টের মানকে নির্ধারিত মানকে নির্ধারিত মানে নিয়ে আসা যায়।
- মোটর উইন্ডিং এর থার্মাল স্ট্যাবিলিটি বেশি এবং সহজে ত্রুটি দূর করা যায়।
এই পদ্ধতির অসুবিধা
- যেহেতু এটি মোটর তাই আনুপাতিক হারে পাওয়ার লস হতে পারে।
- মেরামত খরচ বেশি।
- আওয়াজের সৃষ্টি করে।
- রেটিং এর ক্ষেত্রে ৫০০ কে ভি এ এর উপরে গেলে স্ট্যাটিক ক্যাপাসিটর এর চেয়ে খরচ বেশি পড়ে।
- তাছাড়া একে স্টার্ট দেয়ার জন্য সাহায্যকারী ডিভাইসের দরকার হয়।
আরো কিছু পোস্ট