ধরুন, বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ চলছে। আপনার হাতে এক প্যাকেট লেইস চিপস আছে। আর আমরা জানি, চিপসের প্যাকেটে পুরোপুরিভাবে চিপস থাকেনা। কিছু অংশে বায়ুপূর্ণ থাকে। যদি চিপসের পুরো প্যাকেটটা এপারেন্ট পাওয়ার হয়, চিপস যতটুকু অংশ জুড়ে আছে সেইটুকু যদি রিয়েল পাওয়ার হয় তাহলে বায়ুপূর্ণ অংশ হবে রিয়েক্টিভ পাওয়ার। আজ রিয়েক্টিভ পাওয়ার পরিমাপ পদ্ধতি নিয়ে আলাপ হবে।
রিয়েক্টিভ পাওয়ার কাকে বলে?
সার্কিটে যদি Inductive অথবা Capacitive কম্পোনেন্ট থাকে তবে এরা কিছু পরিমাণ পাওয়ার সঞ্চয় করে রাখে। কারণ আমরা জানি, Capacitor এবং Inductor চার্জ সঞ্চয় করে রাখতে পারে। লক্ষণীয় ব্যাপার হল এ শক্তি কিন্তু খরচ হচ্ছে না (মানে রূপান্তরিত হচ্ছে না)।
Capacitor কিংবা Inductor যখন discharge হবে তখন তা ফেরত পওয়া যাবে। এ কারণে এ পাওয়ারকে বলা হয় Reactive power বা, পুনরায় ফেরতযোগ্য পাওয়ার। Reactive power অনবরত source থেকে load এবং load থেকে Source এ ঘুরপাক খেতে থাকে।
কিভাবে রিয়েক্টিভ পাওয়ার পরিমাপ করা হয়?
আমরা জানি, রিয়েক্টিভ পাওয়ারের ক্ষেত্রে ভোল্টেজ এবং কারেন্ট out of phase এ থাকে। আর নিচের সূত্রের সাহায্যে রিয়েক্টিভ পাওয়ার পরিমাপ করা যায়।
রিয়েক্টিভ পাওয়ার পরিমাপ খুবই জরুরি কেননা রিয়েক্টিভ পাওয়ার সিস্টেমের মোট লস হিসেবে সহায়তা করে। রিয়েক্টিভ পাওয়ার বেশি হলে লোডের পাওয়ার ফ্যাক্টর আরো কমে যায় এবং সিস্টেমে আরও ক্ষতি হয়। আর এই রিয়েক্টিভ পাওয়ার পরিমাপের কাজে VARmeter ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
প্রকারভেদ
ফেজ অনুসারে VARmeter দুই প্রকার। যথাঃ
- সিংগেল ফেজ VARmeter
- পলিফেজ VARmeter
Single Phase VARmeter
সিংগেল ফেজ পাওয়ার সাপ্লাই সিস্টেমের রিয়েক্টিভ পাওয়ার পরিমাপ করতে সিংগেল ফেজ ভিএআর মিটার ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত ইলেকট্রোডায়নামিক ওয়াটমিটার। এই ওয়াটমিটারটির প্রেসার কয়েল মাত্রারিক্ত ইন্ডাক্টিভ ধর্ম বহন করে থাকে। মাত্রারিক্ত ইন্ডাক্টিভ বলতে প্রেসার বা ভোল্টেজ কয়েলের ভোল্টেজ, কারেন্ট কয়েলের কারেন্টের সাথে ৯০ ডিগ্রী ল্যাগিং এ থাকে। কারেন্ট কয়েলের মধ্যে যে প্রবাহ থাকে সেটি হল লোড কারেন্ট। আর লোড কারেন্ট এবং সাপ্লাই ভোল্টেজের সাথে ৯০ ডিগ্রী ফেজ পার্থক্য থাকবে। যদি ভি এ আর মিটারে হারমোনিক্স বিদ্যমান থাকে তাহলে পারফেক্ট রেজাল্ট পাওয়া যায়না। পরিমাপের আগে মিটারটি ক্যালিব্রেশন করাটা জরুরি।
Poly Phase VARmeter
কোন সার্কিটে যখন ভোল্টেজ এবং কারেন্টের মধ্যে ফেজ ডিফারেন্স তৈরি হয় তখন উক্ত সার্কিটে রিয়েক্টিভ পাওয়ার বিদ্যমান থাকে। এক্ষেত্রে ফেজ শিফটিং ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে এই ফেজ শিফট তৈরি হতে পারে। ফেজ শিফট ট্রান্সফরমার দুটো ওপেন সার্কিট ট্রান্সফরমার নিয়ে গঠিত যারা ওপেন ডেল্টা কনফিগারেশনে থাকে। কারেন্ট কয়েলটি লাইনের সাথে সিরিজে সংযুক্ত থাকে এবং প্রেসার কয়েলটি দুটো অটো ট্রান্সফরমারের কমন টার্মিনালের সাথে সংযুক্ত থাকে। ওয়াটমিটারটির প্রেসার কয়েলটি অটো ট্রান্সফরমারের ৫৭% ট্যাপিং এর সাথে সংযুক্ত এবং ৪৩% বাকি অংশের সাথে যুক্ত থাকে।
প্রেসার কয়েলের মধ্যে আবিষ্ট ভোল্টেজ লাইন ভোল্টেজের সমান থাকে কিন্তু তার ৯০ ডিগ্রী শিফটিং ঘটে। একইভাবে ২য় ওয়াটমিটারেও ভোল্টেজের ৯০ ডিগ্রী শিফটিং ঘটে। এই দুটো ওয়াটমিটারের রিডিং একত্রে রিয়েক্টিভ পাওয়ার প্রদান করে থাকে।
থ্রি-ফেজ ব্যালান্সড সার্কিটের ক্ষেত্রে রিয়েক্টিভ পাওয়ারের পরিমাণ
থ্রি-ফেজ ব্যালান্সড সার্কিটের ক্ষেত্রে রিয়েক্টিভ পাওয়ার পরিমাপের জন্য সিংগেল ওয়াটমিটার মেজারিং মেথড ব্যবহার করা হয়। ওয়াটমিটারের প্রেসার কয়েল একটি ফেজ লাইনের সাথে এবং কারেন্ট কয়েল অপর একটি ফেজের সাথে সংযুক্ত থাকে।
ধরা যাক, কারেন্ট কয়েলের মধ্যে প্রবাহিত কারেন্টের পরিমাণ -I2
ভোল্টেজ কয়েলের মধ্যে আবিষ্ট ভোল্টেজের পরিমাণ -V13
তাহলে, ওয়াটমিটারের রিডিং হবে = V13*I2*Cos(90+θ) = √3*VI*Cos(90+θ) = √3*VI*Sinθ
পাওয়ার নিয়ে আরো কিছু পোস্ট