টাইম ট্রাভেল মেশিন এবং বাস্তবতা | সত্যিই কি দীর্ঘ সময় নিমিষেই পাড়ি দেয়া সম্ভব?

0
465

“টাইম ট্রাভেল মেশিন” এই শব্দটি আমরা অনেকেই শুনেছি। যারা সাইন্স ফিকশন নিয়ে সময় কাটান তাদের কাছে অতিপ্রিয় টপিক হল টাইম ট্রাভেল মেশিন। কিন্তু আমরা গভীরভাবে হয়তো বিষয়টিকে অনুধাবন করতে পারিনি। আজ আপনাদের টাইম ট্রাভেল নিয়ে এক অন্যরকম অনুভূতি দেয়ার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক।

টাইম ট্রাভেল মেশিন এবং বাস্তবতা

অতীতের সময়ে পরিভ্রমণ

অতীতে টাইম ট্রাভেল
অতীতে টাইম ট্রাভেল

চোখ বন্ধ করুন। মনে করুন, আপনি নিজের মধ্যে নেই। বর্তমানের সবকিছু ভূলে যান। ফিরে যান সেই সুদূর অতীতে। সেই সোনালী দিনগুলোতে! সেইদিনগুলো ছিল সত্যিই উপভোগ্য। এখনকার মত হতাশার চাদরে ঘেরা নয়। ভাবুন, সকাল বেলার এলার্ম বাজল। আপনার স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কিন্তু আপনি এলার্ম টা অফ করে আবার ঘুমাতে গেলেন। তখন আপনার বাবা সজোরে বকা দিয়ে আপনাকে ঘুম থেকে তোলার চেষ্টা করতে লাগল। আপনি আর মাত্র ৫ মিনিট ঘুমানোর জন্য বায়না কর‍তে লাগলেন।

কিন্তু অবশেষে বাবার বকুনির কাছে হার মেনে উঠলেন স্কুলে যাবার জন্য। নাস্তা খেয়ে রেডি হয়ে বাবার সাথে স্কুলে গেলেন। স্কুলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা, দুষ্টুমি, খোলা সবুজ মাঠে খেলাধূলা আরো কত মজা করলেন। মন অস্থির হয়ে থাকত কখন যে ছুটির ঘন্টাটা বাজবে। ছুটির পর বাড়ি গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েই খেলার মাঠে বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট, ফুটবল, চোর-পুলিশ আরো কত কি খেলতেন!! মাগরিবের আযান দিলেই বাসায় ভোঁ-দৌড়। নাহলে মায়ের বকুনি খেতে হবে।

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে হালকা নাস্তা শেষে স্কুলের হোম-ওয়ার্কগুলো রেডি করতেন। অন্যথায় মাস্টার মশাই এর বকুনি খেতে হবে।

আর বর্ষাকাল এলে ত কথাই নেই। মনে মনে চাইতেন প্রতিদিন যেন বৃষ্টি হোক যাতে স্কুলে যেতে না হয় আর ক্লাস ওয়ার্ক বা স্যারের বকুনি খেতে না হয়। মুষুলধারে বৃষ্টি হলে যখন বাবা বলত আজ স্কুলে যেতে হবেনা তখন মন যেন আনন্দে নেচে উঠত। আর বৃষ্টিতে ভিজে বন্ধুদের সাথে মাঠে ফুটবল খেলতেন। আহ! কি দিনগুলোই না ছিল!

এবার চোখ খুলুন। বলুন ত আপনি কোথায়? কি ঘোর লাগছে? মোহগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন? মনে হচ্ছে যেন ফিরে গিয়েছেন বহু বছর আগে তাইনা? হ্যা, কিন্তু সময় সময়ের জায়গাতেই বসে আছে। আপনি হয়তো মনস্তাত্বিকভাবে বা কোয়ান্টাম পদ্ধতিতে অতীতে ঘুরে এসেছেন কিন্তু সময় তার আপন গতিতেই সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। এ ত গেল অতীতের স্মৃতি রোমন্থন।

৫-১০ বছর পরের পৃথিবী কেমন থাকবে?

ফিউচারে টাইম ট্রাভেল
ভবিষ্যতে টাইম ট্রাভেল

এবার আসব আরেকটা মজার পার্টে। আচ্ছা, করোনা মহামারীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। চারিদিকে হায়হুতাশ, হাহাকার তাইনা? সবার মনেই একটি প্রশ্ন কবে যাবে এই মহামারী? এ ক্ষেত্রেই কাল্পনিক টাইম মেশিন বাজিমাত করতে পারত।

যদি আপনি এক লাফে ৫-১০ বছর অতিক্রম করে ২০২৬-২০৩১ এ কি হবে এবং কেমন থাকবে পৃথিবী? আপনার ক্যারিয়ার কি অবস্থায় থাকবে? এসব জানতে পারতেন তাহলে কতই না ভাল হত তাইনা? কিন্তু এটা মোটেও সম্ভব নয়। কারণ সময় তার গতিতেই চলমান। আমরা সময়কে ডিঙিয়ে কিছুই করতে পারিনা। সবকিছু আমাদের ইচ্ছানুসারে হয়না, কিছু জিনিস অতিপ্রাকৃতিক শক্তি নির্ধারণ করে থাকে।

আর ৫-১০ বছর পর কি হবে জেনেই যেতেন তাহলে লাইফে কোন থ্রিল থাকত না। খারাপ কিছু হলে প্রতিদিন মন খারাপ করে বসে থাকতেন আর ভাল কিছু দেখলে কাজের প্রতিই আগ্রহ হারিয়ে ফেলতেন। জীবনের উত্থান পতনের মধ্যেও আলাদা একটা মজা আছে।

টাইম ট্রাভেল নিয়ে বিজ্ঞানীদের ধারণা

বিজ্ঞানীরা অনেক রিসার্চ করেছেন এই টপিক নিয়ে। স্টিফেন হকিংস সর্বপ্রথম এই থিওরি নিয়ে মত প্রকাশ করেন। বিজ্ঞানের মতে, কোন ব্যক্তি যদি আলোর বেগের তুলনায় হাজারগুণ অধিক বেগে চলতে পারে তাহলেই টাইম ট্রাভেল সম্ভব যা রীতিমত অসম্ভব এবং কাল্পনিক। সাইন্স ফিকশনেই এসব ভাল মানায়। বাস্তব জীবনে নয়।

আজকের এই চমকপ্রদ আর্টিকেলটি কেমন লাগল তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিন। আগামীতেও আপনাদের এরকম আরো মজার আর্টিকেল উপহার দিব ইনশাল্লাহ।

আরো কিছু মজাদার আর্টিকেল

মহাকাশে মৃত্যু হলে লাশের কি হবে? | মহাকাশ রহস্য

দূর থেকে চলন্ত জাহাজকে স্থির মনে হয় কেন?

নাসা কিভাবে মঙ্গলগ্রহের ছবি পৃথিবীতে নিয়ে আসে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here