বর্ষাকালে বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার কারণ এবং করণীয়

বাইরে মুষুলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। জানালার পাশে বসে চা পান করতে করতে ভাবতে লাগলাম কি আর্টিকেল লিখা যায়। হঠাৎ করে চোখ পড়ল ৩৩ কেভি পাওয়ার লাইনের দিকে। বৃষ্টি আর পাওয়ার লাইনের মেলবন্ধনের কথা মাথা আসতেই চট করে সিদ্ধান্ত নিলাম টপিকটি নিয়ে কিছু লিখব। চলুন এই মুষুলধারায় বৃষ্টিতে এই প্রয়োজনীয় আর্টিকেলটি পড়ে ফেলা যাক।

বর্ষাকাল দরজায় কড়া নাড়ছে। বলতে গেলে তার দাপট প্রায় শুরুই। আজকের দিনটিও বেশ বর্ষণমুখর। আর বর্ষাকাল এলেই প্রায়শই বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এমনকি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অনেকের প্রাণহানির ঘটনাও প্রায়শই শোনা যায়। আর একটি দূর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না। তাই আজ এই আর্টিকেলে আমি বর্ষাকালে বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনাগুলো কেন হয় এবং কিভাবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সে নিয়েই আলোকপাত করব।

বর্ষাকালে বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা কেন ঘটে?

বিদ্যুতের এক প্রাণের বন্ধুর নাম হল অবিশুদ্ধ জল। বর্ষাকাল মানেই রাস্তাঘাটে হাটু পরিমাণ পানি থাকবেই। আর এমতবস্থায় যদি কোন লাইভ লাইন পানিতে ছিড়ে পড়ে তাহলেই বিপদ।

সেই অবিশুদ্ধ পানি বিদ্যুৎ পরিবাহীর ন্যায় আচরণ করবে। এসময় যদি পানিতে নিয়ন টেস্টার ধরা হয় তাহলে আলো জ্বলবে। আর মানবদেহ সেই বিদ্যুতায়িত পানির সংস্পর্শে এলেই বিদ্যুৎ বের হবার পথ হিসেবে সেই মানবদেহকে বেছে নিবে।

ফলশ্রুতিতে একটি বৈদ্যুতিক বর্তনী সম্পূর্ণ হবে। এসময় ব্যক্তির পা দুটো ইলেকট্রোডের ন্যায় আচরণ করে এবং স্টেপ পটেনশিয়াল তৈরি করে। এখন ভোল্টেজ এবং কারেন্ট লেবেল যদি বেশি হয় তাহলে মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, যদি জুতো বা ইন্সুলেটর থাকে তাহলে কি সমস্যা হবে?

এক্ষেত্রে শকের ব্যাপারটা নির্ভর করছে কি পরিমাণ ভোল্টেজ বা কারেন্ট সেখানে রয়েছে। কারণ ইন্সুলেটরের নিজেও সহনক্ষমতা থাকে। হাইভোল্টেজ পাওয়ার লাইন হলে জুতো কাজ করবেনা।

এছাড়াও অতিরিক্ত আর্দ্রতা ক্রসআর্মের ইন্সুলেটরের ক্যাপাবিলিটি বিনষ্ট করে পোলের মেটাল বডিকে শর্ট করে দূর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

তাহলে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে?

  • বর্ষাকালে যদি কোন ছিড়া পাওয়ার লাইন মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায় তাহলে সেই স্থান থেকে ১০-২০ ফুট দূরত্ব অবলম্বন করাই উত্তম।
  • সম্ভবপর হলে স্থানীয় বিদ্যুৎ দপ্তরে ফোন দিয়ে অভিযোগ জানানো যেতে পারে। যেটা একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার অবশ্যই কর্তব্য।
  • এছাড়াও আর্দ্র অবস্থায় বৈদ্যুতিক পোল স্পর্শ করা বা তাতে হেলান দেয়া উচিত নয়।

আর্টিকেলটি শুধুমাত্র পড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখলে চলবেনা। বাস্তবেও তার প্রয়োগ করতে হবে এবং অন্যকেও সচেতন করতে হবে। এই আর্টিকেলটি শেয়ারের মাধ্যমে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।

আরো কিছু আর্টিকেল

লোডশেডিং কি ও জনসাধারণের ধারণা এবং কারিগরি বাস্তবতা | বিদ্যুৎ গেলেই কি লোডশেডিং

হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ যাদের শক করতে পারেনা | বিদ্যুৎ মানব এবং বাস্তবতা

বিদ্যুৎ নিয়ে জনমনের ভ্রান্ত ধারণা এবং সমাধান যা জেনে রাখা জরুরী