কোন এলাকার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিভাবে পরিমাপ করা হয়?

দেখতে দেখতে চলে এল বর্ষাকাল। টিভি নিউজ চ্যানেল, ওয়েবসাইটগুলোতে এখন শুধু বৃষ্টির খবর শোনা যায়। খুব ভোরেই ঘুমটা ভেংগে গেল। তারপর ফেসবুকে ঢুকে পোস্টগুলো স্ক্রল করছিলাম। তখন একটি আবহাওয়া সংক্রান্ত আর্টিকেল চোখে পড়ল। তখন ভাবলাম আজ আবহাওয়া সম্পর্কিত কোন কিছু নিয়ে লিখালিখি করব। কারণ অনেক জায়গাতেই এখন বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তাই সমসাময়িক আর্টিকেল পড়তে কার না ভাল লাগে? ভাবতে লাগলাম কি লিখা যায়? তখন শুরু হল ঝুম বৃষ্টি আর চট করেই মাথায় এল বৃষ্টির পরিমাপণ পদ্ধতি নিয়ে খুব সহজ করে একটি আর্টিকেল লিখব। চলুন আজ জেনে নেয়া যাক কিভাবে কোন এলাকার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিভাবে পরিমাপ করা হয়?

কোন এলাকার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিভাবে পরিমাপ করা হয়?

অনেকে শুনে অবাক হতে পারেন যে, বৃষ্টিপাত পরিমাপের জন্য বৃষ্টিপাতের হারকে মিলিমিটারে গণনা করা হয়। প্রশ্ন আসতে পারে যে, মিলিমিটার হল দৈর্ঘ্যের একক। তাহলে বৃষ্টিপাতের পরিমাপের একক কেন মিলিমিটার স্কেলে গণনা হবে?

মূলত ভূমি থেকে মিলিমিটার স্কেল অনুযায়ী বৃষ্টিপাতের লেভেল পরিমাপ করে হালকা, ভারী, অতি ভারী ও চরম বৃষ্টিপাতের হিসাব দেয়া হয়। এবার আসুন বৃষ্টির পরিমাপের ভিত্তিতে কিভাবে ধরন সনাক্ত করবেন?

বৃষ্টিপাত
বৃষ্টিপাত
  • এক্ষেত্রে ঘন্টায় ০.২৫ মিলিমিটার থেকে ১ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতকে হালকা
  • ৫ মিলিমিটার থেকে ১৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতকে ভারী
  • ১৬ মিলিমিটার থেকে ৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতকে অতি ভারী
  • ৫০ মিলিমিটারের অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতকে চরম বৃষ্টি আখ্যা দেয়া হয়

এবার আসা যাক মূল প্রশ্নে যে, আবহাওয়া অধিদপ্তর কিভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নির্ধারণ করে?

বৃষ্টিপাত পরিমাণ নির্ধারণের জন্য আবহাওয়া অফিস রেইন গেজ (Rain Gauge) নামক সেন্সর ব্যবহার করে থাকে। আমি খুব সংক্ষেপে রেইন গেজের কার্যপ্রণালীটি তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

রেইন গেজ (Rain Gauge) এর ফাংশন

এনালগ রেইন গেজ
এনালগ রেইন গেজ

রেইন গেজ মূলত তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথাঃ

  • ওভারফ্লো সিলিন্ডার
  • মেজারিং স্কেল
  • ফ্লানেল

ওভারফ্লো সিলিন্ডার কোণক আকৃতির ফ্লানেলকে ধারণ করে থাকে। এদের সাথে সংযুক্ত সাথে মেজারিং স্কেল যা সিলিন্ডারে মজুদকৃত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গ্রাউন্ড লেভেল ২৫ মিলিমিটার পর্যন্ত মেজার করতে পারে। তবে এটি বৃষ্টি পরিমাপের এনালগ পদ্ধতি। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রেইন গেজ আছে। সেগুলো হলঃ

  • Standard rain gauge
  • Self-recording rain gauge
  • Automatic rain gauge
  • Tipping bucket rain gauge
  • Weighing precipitation rain gauges (for snow and rain)
  • Optical rain gauge
  • Acoustic rain gauge
  • Modem/Cellular network based Rain Gauge

বর্তমানে কোন ধরনের রেইন গেজ ব্যবহৃত হচ্ছে?

  • বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। এখন ম্যানুয়াল কন্ট্রোলের থেকেও অটোমেশনকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়।
  • বর্তমানে বিভিন্ন দেশে আবহাওয়া অধিদপ্তরগুলো ডিজিটাল মডেম বেইজড রেইন সেন্সর ব্যবহার করে থাকে।
  • এই ডিভাইসটি বৃষ্টির প্রেসার, সাউন্ড পালসকে অনুধাবণ করে তার পরিমাণ, ধরণ সংক্রান্ত সব যাবতীয় তথ্য মডেম বা সেলুলার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে নিকটবর্তী আবহাওয়া স্টেশনে পাঠাতে সক্ষম।
  • আবহাওয়া স্টেশনের এন্টেনা এই তথ্য সংগ্রহ করে অপারেটরদের কাছে পৌঁছে দেয়।
ডিজিটাল রেইন গেজ
ডিজিটাল রেইন গেজ

এই আর্টিকেলটি যদি কোন বৃষ্টিস্নাত দুপুরে বা সন্ধ্যায় পড়ে থাকেন তাহলে ত ব্যাপারটি পুরাই জমে যাবে। আপনাদের ফিডব্যাক কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে পারেন। এরকম অনেক অজানা তথ্য পেতে ভোল্টেজ ল্যাবের সাথেই থাকুন।

আরো কিছু অজানা তথ্য পেতে পড়ুন

সাবমেরিন কিভাবে গভীর সমুদ্রের নীচে চলাচল করে?

রেলওয়ে সিগন্যালিং সিস্টেম কিভাবে কাজ করে? | Bangladesh Railway

বারবার রিফ্রেশ করলে কি কম্পিউটারের গতি বাড়ে?