প্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনারা নিশ্চয় ভার্সিটির প্রজেক্ট বানাতে, ল্যাবে কাজ করার সময় এবং বিভিন্ন ইন্ড্রাস্ট্রিতে বিভিন্ন ধরনের সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস (Transistor, JFET, MOSFET, Diode, IC) দেখে থাকবেন। এসমস্ত ডিভাইস নিয়ে কাজ করার সময় অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন এগুলোর গায়ের উপর একটা নাম্বারিং করা থাকে। সেসময় নিশ্চয়ই অনেকের কৌতূহল হয়েছে যে এই নাম্বারিং কিভাবে করা হয়েছে বা এর মাধ্যমে কি বুঝানো হচ্ছে?
পাঠক ভাইবোনেরা এই নাম্বারিং কিন্তু মনের ইচ্ছা অনুসারে একদম করা হয়নি। ম্যানুফেকচারারগণ কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট নীতিমালা মেনেই নাম্বারিং গুলো করে থাকেন। তাই আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য যাতে আপনারা সহজে সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস নাম্বারিং সিস্টেম নিয়ে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারেন।
আমরা ৩টি ধাপে সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস নাম্বারিং সিস্টেম সম্পর্কে জানব।
প্রথম ধাপঃ
প্রত্যেক সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইসের ৫টি Alpha-Numeric Symbols থাকে। যাতে ২টি অক্ষর এবং ৩টি সংখ্যা (যেমনঃ- AF135) অথবা ৩টি অক্ষর এবং ২টি সংখ্যা (যেমনঃ- AFX55 ) থাকে।
যখন কোন Semiconductor Device এ ২টি সংখ্যা চিহ্নিত থাকবে (যেমনঃ- AFX55 ) তখন বুঝতে হবে এটা Industrial and Professional Equipment।
আবার যখন কোন Semiconductor Device এ ৩টি সংখ্যা চিহ্নিত থাকবে (যেমনঃ- BF194 ) তখন বুঝতে হবে এটা Entertainment or Consumer Equipment।
দ্বিতীয় ধাপঃ
Semiconductor Device এর ৫টি Alpha-Numeric Symbols থাকে সেগুলোর মধ্যে Alpha Symbols অর্থাৎ যে ইংরেজি অক্ষরগুলো থাকে সেগুলোর মধ্যে ১ম অক্ষরটি Semiconductor Device এর প্রকৃতি নির্দেশ করে অর্থাৎ Semiconductor Device টি কোন material দিয়ে তৈরী বুঝায়। যেমনঃ-
- A= germanium
- B= silicon
- C= gallium arsenide
- R= Compound material (Cadmium Sulphide)
উদাহরণসরূপ, AE125 একটি germanium tunnel diode এবং BE149 একটি silicon tunnel diode ।
তৃতীয় ধাপঃ
Semiconductor Device এর Alpha Symbols অর্থাৎ ইংরেজি অক্ষরগুলোর মধ্যে ২য় অক্ষরটি Semiconductor Device এর Circuit Function অর্থাৎ ডিভাইসটি কী কাজ করে তা নির্দেশ করে। যেমনঃ-
- A= diode
- B= variable capacitance diode
- C= A.F. low powered transistor
- D= A.F. power transistor
- E= tunnel diode
- F= H.F. low powered transistor
- G= multiple device
- H= magnetic sensitive diode
- K= Hall-effect device
- L= H.F. power transistor
- M= Hall-effect modulator
- P= radiation sensitive diode
- Q= radiation generating diode
- R= thyristor (SCR or Triac)
- S= low power switching transistor
- T= thyristor (power)
- U= power switching transistor
- X= diode, multiplier
- Y= power device
- Z= zener diode ।
এখানে, A.F= audio frequency, H.F= high frequency বুঝানো হয়েছে। এবার আমরা দুটো উদাহরণের মাধ্যমে পুরো ব্যাপারটিকে ক্লিয়ার করব।
কোন ডিভাইসের গায়ে “AM132” নাম্বারিং এর মাধ্যমে কি বুঝব?
কোন অর্ধ-পরিবাহী ডিভাইসের গায়ে “AM132” নাম্বারিং এর মাধ্যমে বোঝায় ডিভাইসটি জার্মেনিয়াম দিয়ে তৈরি করা Hall-effect modulator এবং এটি একটি Entertainment or Consumer Equipment। আর বাকি তিনটি নিবদ্ধকৃত নাম্বার।
এবার “BFX55” নাম্বারিং এর মাধ্যমে কি বুঝব?
“BFX55” নাম্বারিং এর মাধ্যমে কি বুঝব ডিভাসটি নির্মিত হাই ফ্রিকুয়েন্সির লো পাওয়ারের ট্রানজিস্টর এবং একটি Industrial and Professional Equipment।
আশা করি, এই আর্টিকেলটি পড়ার পর যেকোন সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন তার ফাংশন, কোন উপাদান দিয়ে নির্মিত এবং এটি কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।
সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে আরো কিছু পোস্ট
ডায়োড ও সেমিকন্ডাক্টর ডায়োডের খুঁটিনাটি সহজ ভাষায় আলোচনা | Diode
সেমিকন্ডাক্টরের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য | Structural Properties of Semiconductors