পাওয়ার গ্রিড অটোমেশনের ক্ষেত্রে SCADA বহুলপ্রচলিত বিশ্বব্যাপী।
অটোমেশনের যুগে বাংলাদেশ, পিএলসিসহ আরো অনেক ইকুইপমেন্ট এর সহায়তায় দেশের দূরবর্তী সকল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোকে এক নেটওয়ার্ক এর আওতায় আনতে স্ক্যাডা কাজ করে।
কখনো মনে হয় কি , যে কিভাবে ১০০০০-১২০০০মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রতিদিন উৎপাদিত হচ্ছে, এর পুরোটাই ব্যবহার হয়ে যাচ্ছে নিমিষেই। বাড়তি বা কম হচ্ছে না কেন???
এর কারণ হল, প্রতিটি সাবস্টেশন থেকে লোড ডিমান্ড শুনে জেনারেটিং স্টেশন গুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ফলে সময়ভেদে সে অনুযায়ী উৎপাদন করা হয়।
পিক আওয়ারে দেশের সব পাওয়ার প্ল্যান্ট রানিং থাকে।
আবার দেশের উৎপাদিত মোট পাওয়ার রিজিওন ভেদে তৎক্ষণাৎ ডিস্ট্রিবিউট করে দেওয়া হয়। কাজটি ঘটে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে। কেননা এসি স্টোর করা যায়না।
Supervisory Control and Data Acquisition
এটা হল PLCC এর আপডেট ভার্সন -যা দ্বারা সম্পূর্ণ পাওয়ার সিস্টেমকে একছাদের নিচে নিয়ে এসে অপারেট করা হয়।
প্রতিটি প্ল্যান্ট প্রতিটি প্ল্যান্টের সাথে কানেক্টেড থাকাই হল ইন্টারকানেক্টেড গ্রিড।
এর ফলে কোন জায়গায় ডিমান্ড কত, জেনারেশন কতটুকু বাড়াতে/কমাতে হবে, কোন জায়গার লোড শিডিউলিং, প্ল্যান্ট টু প্ল্যাণ্ট ফ্রিকুয়েন্সী কিভাবে মেইনটেইন করতে হবে ইত্যাদি হিসাব করার জন্যেই SCADA বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যেসবের সমন্বয়ে SCADA কাজ করে:
- Supervisory Computers
- Programmable Logic Controllers
- Human machine Interface
- Remote Terminal Units
- Communication Infrastructure
বর্তমানে বাংলাদেশেও বহুলভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। NLDC(National Load Dispatch Centre) SCADA দ্বারাই দেশজুড়ে উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রয়োজন অনুসারে বন্টন করে থাকে, কেননা এসি- কে সংরক্ষন করা যায় না।
যা উৎপাদিত হয়, তা ওই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ব্যবহার করে ফেলতে হয়, এর ১০০% কৃতিত্ব NLDC এর।
চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক কিভাবে জেনারেশন, ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশন এ SCADA ভূমিকা রাখে:
জেনারেশন এর ক্ষেত্রে:
- ধারাবাহিকভাবে জেনারেটর, টার্বাইন ইত্যাদির স্পিড ও ফ্রিকুয়েন্সী মনিটরিং করা।
- কয়লা ডেলিভারি দেওয়া বয়লারে ও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্রসেস কন্ট্রোল করা।
- সার্কিট ব্রেকার, রিলেসহ প্রটেক্টিভ ডিভাইস গুলোর সার্বক্ষণিক তদারকি করা।
- জেনারেটিং স্টেশন এর অপারেশন প্ল্যান করার ক্ষেত্রে।
- জেনারেশনের সময় অ্যাক্টিভ ও রিয়্যাক্টিভ পাওয়ার কন্ট্রোল এ রাখার জন্যে।
- টার্বাইন প্রটেকশন এর জন্যে দরকারি উদ্যোগ নেওয়ার জন্যে।
- লোড শিডিউলিং মেইন্টেইন করার জন্যে।
- সকল জেনারেশন সম্পর্কিত প্যারামিটার গুলোর ইতিহাস পর্যালোচনা করে ডাটা প্রসেস করে রেখে স্টাডি করা।
- ডিমান্ড অনুসারে জেনারেশন বাড়ানো কমানোর জন্যে
ডিস্ট্রিবিউশন এর ক্ষেত্রে:
- একটা নির্দিষ্ট হাই পাওয়ার ফ্যাক্টর মেইন্টেইন করে পাওয়ার সিস্টেমের স্ট্যাবিলিটি বৃদ্ধি করার জন্যে।
- পিক পাওয়ার ডিমান্ড লিমিট করে।
- স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক কন্ডিশনে বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক্যাল প্যারামিটার পর্যালোচনা করে সমগ্র ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের উপর নজর রাখার ক্ষেত্রে।
- দূরবর্তী স্থানের ক্ষেত্রে পাওয়ার ক্যালকুলেশনের অতীত পর্যবেক্ষন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করে গ্রাহকের সমস্যা দূরীভূত করা।
- খুব সহজে সমস্যা বের করে তাড়াতাড়ি প্রতিকারের ব্যবস্থা করা এবং অপারেটরদের সমস্যাকবলিত স্থান চিহ্নিতকরণে সাহায্য করা।
- স্মার্ট মিটার সিস্টেমের ফলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং এর পদ্ধতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে, ফলে মিটার রিডারদের কষ্ট করে মিটার রিডিং নিতে হবে না। উপরন্তু এর ফলে মিটার রিডিং এর ক্ষেত্রে হওয়া কারিচুপি হ্রাস পাবে।
ট্রান্সমিশন এর ক্ষেত্রে:
- উৎপাদিত বিদ্যুৎ হাই ভোল্টেজ লাইনের মাধ্যেমে নির্ধারিত জায়গায় প্রেরণ এবং লোডের উদ্দেশ্য ডিস্প্যাচ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজ করে, এবিষয়ে অপারেটর দের গ্রিড লাইনের আপডেট দিয়ে থাকে, যাতে কোনো সমস্যায় খুব দ্রুত ফিডব্যাক দেওয়া যায়।
- সাবস্টেশন মনিটরিং+ বাস ভোল্টেজ কন্ট্রোল, বাস লোড ব্যালান্সিং, ওভারলোড কন্ট্রোল, ট্রান্সফর্মার প্রটেকশন, বাস ফল্ট প্রটেকশন সহ আরো অনেক সুবিধা দিয়ে থাকে।
- প্ল্যান্টে না থেকেও বাইরে থেকে প্ল্যান্ট পরিচালনা করা যায়, এতে করে প্ল্যান্ট ইফিসিয়েন্সী বৃদ্ধি সহ খরচ অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।
সংগৃহীত