১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে জার্মান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বিজ্ঞানী রুডলফ ডিজেল (Rudolf Diesel) সর্বপ্রথম ডিজেল ইঞ্জিন আবিষ্কার করেছিলেন। বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশে এই ডিজেল ইঞ্জিনকে প্রাইম মুভার হিসেবে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করা হচ্ছে, যা ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে পরিচিত।
আজকের আলোচনায় আমরা ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্ট ও এর সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করবো।
ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্ট কি?
যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করার জন্য ডিজেল ইঞ্জিনকে প্রাইম মুভার হিসেবে ব্যবহার করা হয় সেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রকে ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্ট বলা হয়। এই পাওয়ার প্ল্যান্টকে আই. সি. ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্টও বলা হয়ে থাকে।
নিচের চিত্রে একটি ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্টের সিম্পল ডায়াগ্রাম দেখানো হলোঃ
একটি ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্টে ডিজেলকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে 2 স্টোক অথবা 4 স্টোক ইঞ্জিনের সাহায্যে তাপ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রুপান্তর করা হয়। যেহেতু ইঞ্জিনের সাথে জেনারেটর শ্যাফট করা থাকে সেহেতু জেনারেটর তখন এই যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিকে রুপান্তর করে।
ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্টের সুবিধাসমূহঃ
১. এই পাওয়ার প্ল্যান্টের ডিজাইন ও লে আউট অনেক সিম্পল।
২. এই পাওয়ার প্ল্যান্ট যে কোন স্থানে স্থাপন করা যায়।
৩. স্থাপন করতে অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়।
৪. ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্ট খুব দ্রুত চালু ও বন্ধ করা যায় এবং অল্প সময়ে পিক লোড আনা যায়।
৫. অন্যান্য পাওয়ার প্ল্যান্টের তুলনায় ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্টের আনুসাঙ্গিক খরচ অনেক কম।
৬. এর ইঞ্জিনকে ঠান্ডা করতে তুলনামূলক কম পানির প্রয়োজন হয়।
৭. একই ক্যাপাসিটির স্টিম পাওয়ার প্ল্যান্টের তুলনায় এর সামগ্রিক ব্যয় অনেক কম।
৮. এর Thermal Efficiency স্টিম পাওয়ার প্ল্যান্টের তুলনায় বেশি।
৯. এই পাওয়ার প্ল্যান্ট পরিচালনা করার জন্য অন্যান্য প্ল্যান্টের তুলনায় কম সংখ্যক জনবলের প্রয়োজন হয়।
১০. এই পাওয়ার প্ল্যান্টে ছাইয়ের কোন জামেলা নেই।
১১. কোন রকম সমস্যা ছাড়াই এর লোড পরিবর্তন করা যায়।
ডিজেল ইঞ্জিন পাওয়ার প্ল্যান্টের অসুবিধাসমূহঃ
১. জ্বালানি হিসেবে ডিজেল এর মূল্য বেশি।
২. এই পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে প্রচুর শব্দ হয়, যা শব্দ দূষণের জন্য দায়ী।
৩. এই পাওয়ার প্ল্যান্টের লাইফ টাইম কম।
৪. এর লুব্রিকেটিং খরচ বেশী।
৫. এর রক্ষনাবেক্ষণ খরচও বেশী।
৬. বড় আকারে ডিজেল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা ব্যয়সাধ্য ব্যাপার।
পাওয়ার প্ল্যান্ট সম্বন্ধে অন্যান্য লেখাসমূহঃ
প্রাইম মুভারঃ সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, ব্যাখা | টারবাইন সম্বন্ধে আলোচনা।
প্রচলিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য।
বর্তমান বিশ্ব ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বাষ্প বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্বন্ধে আলোচনা।
পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইতিহাস ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
পাওয়ার প্ল্যান্টঃ সংজ্ঞা, প্রকারভেদ ও কার্যপদ্ধতি।