DPDC এর পূর্নরুপ Dhaka Power Distribution Company Ltd। ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের চাকুরিপ্রত্যাশী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটিকে চিনেনা এমন শিক্ষার্থী পাওয়া দুষ্কর। নামে পরিচিত হলেও ডিপিডিসির অবকাঠামোগত তথ্য অনেকেরই অজানা। আজ তাই ডিপিডিসি নিয়ে আপনাদের সাথে কিছু তথ্য শেয়ার করতে এসেছি। সামনে ডিপিডিসির বিভিন্ন পদে এক্সাম রয়েছে। হয়ত এই তথ্যগুলো আপনাকে আরো অনুপ্রাণিত করতে পারে।
ডিপিডিসি কি ধরনের প্রতিষ্ঠান?
ডিপিডিসি বা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোন সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান না। এটি মূলত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ২৫ অক্টোবর, ২০০৫ সালে কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর অধীনে গঠিত হয় যার অনুমোদিত শেয়ার দশ হাজার কোটি যা ১০০ কোটি ১০০ টাকা দামের সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত।
২৫ অক্টোবর, ২০০৫ থেকে ডিপিডিসি গ্রীড থেকে পাওয়ার বিক্রয় ও বিতরণ আরম্ভ করার অনুমতি লাভ করে এবং অপারেশন শুরু করে ১৪ মে ২০০৭ থেকে। DESA (Dhaka Electric Supply Authority) থেকে সকল সম্পদ ও দায় দায়িত্ব গ্রহণ করে ১লা জুলাই, ২০০৮ থেকে কোম্পানি বাণিজ্যিকভাবে অপারেশন শুরু করে।
মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হওয়ার পরেও ডিপিডিসি সরকারি প্রতিষ্ঠান না কেন?
মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হলেই যে সরকারি প্রতিষ্ঠান হবে এই কথার কোন ভিত্তি নেই। সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ার উল্লেখযোগ্য তিনটি শর্ত আছে। সেগুলো নিম্নরুপঃ
- প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় রাজস্ব খাতের আওতাভুক্ত হতে হবে।
- প্রতিষ্ঠানটির প্রথম শ্রেণীর কর্মকতারা সরকারি গেজেটভুক্ত হতে হবে।
- বিশেষ প্রয়োজনে সরকার থেকে ভর্তুকি প্রদানের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
উপরোক্ত তিনটি শর্তের কোনটিই ডিপিডিসির মধ্যে বিদ্যমান নেই। ডিপিডিসির বেতন স্কেল, নিয়ম-কানুন সব তাদের নিজস্ব বিধিমোতাবেক পরিচালিত হয়। এরপরেও বিশেষ প্রয়োজনে মন্ত্রণালয় বা সরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের ক্রিয়াকলাপে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা রাখে।
তবে এক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম আছে। কিছু কিছু কোম্পানি স্বায়ত্তশাসিত হওয়ার পরেও জাতীয় রাজস্ব থেকে স্যালারি পায় এবং ভর্তুকিও গ্রহণ করে। যেমনঃ
- Bangladesh Power Development Board
- Bangladesh Agriculture Development Corporation
- Bangladesh Rice Research Institute
- Bangladesh Rural Electrification Board
- Bangladesh River Research Institute ইত্যাদি।
ডিপিডিসির বেতনকাঠামো
ডিপিডিসিতে সহকারী প্রকৌশলীর ব্যাসিক স্যালারি ৫১,০০০ টাকা। তবে ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাসহ এই টাকা ৭০-৮০ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়।
আর উপ-সহকারী প্রকৌশলীর ব্যাসিক স্যালারি ৩৯,০০০ টাকা। তবে ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাসহ এই টাকা ৫০-৬০ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়।
প্রমোশন পদ্ধতি
ডিপিডিসিতে প্রথম শ্রেণীর পদগুলোতে প্রমোশন পেতে ৪-৭ বছর পর্যন্ত সময় লাগে।
আর উপ-সহকারী প্রকৌশলীর ক্ষেত্রে সহকারী প্রকৌশলী হতে বেশ কয়েকযুগ পেরিয়ে যেতেও পারে। তাই এক্ষেত্রে প্রমোশন গ্রোথ স্লো বললেই চলে।
ডিপিডিসি প্রথম শ্রেণীর পদগুলো হলঃ
- সহকারী প্রকৌশলী
- উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী
- নির্বাহী প্রকৌশলী
- তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী
- প্রধান প্রকৌশলী
- নির্বাহী পরিচালক
নিয়োগের চুক্তি ও শর্তাবলী
- নিয়োগ চুক্তির মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত বহাল থাকে যার প্রথম বছর শিক্ষানবিশকাল হিসেবে গণ্য হবে। এক বছরের শিক্ষানবিশকাল শেষে সন্তোষজনক পুলিশি প্রতিবেদন এবং শিক্ষানবিশকালে ভাল পারফরমেন্স পাওয়া গেলে নিয়োগ চুক্তিতে সাইন করে চাকরিতে পরবর্তী দুই বছরের জন্য যোগদান করতে দেয়া হবে।
- এই তিন বছর সম্পন্ন হলে ডিপিডিসি কতৃপক্ষের সম্মতিতে পুনরায় তিন বছরের চুক্তি নবায়ন হতে পারে। তার মানে জয়েন করা মানেই আপনি আজীবন চাকরি করতে থাকবেন ব্যাপারটা সেরকম না। প্রতি ধাপের চুক্তিতেই আপনাকে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। আপনার কর্মদক্ষতা ও পরীক্ষার মূল্যায়নই বলে দিবে আপনি কতদূর অগ্রসর হবেন।
- চাকরি চলাকালীন কোন অসাধু পন্থা নিলে আপনার বিরুদ্ধে কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারে। এমনকি চাকরিচ্যুতও হতে পারেন।
আরো কিছু পোস্ট
DPDC MCQ Test | ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ পরীক্ষা প্রস্তুতি
বাংলাদেশের পাওয়ার কোম্পানিগুলোর পরিচিতি (পর্ব-১) | BPDB, APSCL, EGCB, RPCL, NWPGCL, PGCB
বাংলাদেশের পাওয়ার কোম্পানিগুলোর পরিচিতি পর্ব-২ | BPDB, DPDC, DESCO, NESCO, WZPDCL, BREB