আমরা মেশ এনালাইসিস করে খুব সহজেই একাধিক ভোল্টেজ সোর্সযুক্ত সার্কিট সমাধান করতে পারি। কিন্তু মাঝে মধ্যে এমন কিছু জটিল সার্কিটের সম্মুখীন হতে হয় যেখানে একাধিক ভোল্টেজ সোর্সের পাশাপাশি কারেন্ট সোর্সও থাকে। সেসব সার্কিট সুপার মেশ এনালাইসিস করে সমাধান করতে হয়। আর এই সুপার মেশ এনালাইসিস হচ্ছে মেশ এনালাইসিসের একটি বিশেষ অবস্থা। আমরা ইতিমধ্যে মেশ এনালাইসিস নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকে আমরা সুপার মেশ এনালাইসিস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করবো।
“মেশ এনালাইসিস সম্বন্ধে পড়ুন “
আজকের আলোচনায় থাকছেঃ
- সুপার মেশ এনালাইসিসের ব্যবহার ও প্রয়োগ ক্ষেত্র।
- সুপার মেশ এনালাইসিস প্রয়োগ করার ধাপ সমূহ।
- সার্কিটের সাহায্যে সুপার মেশ এনালাইসিস ব্যখ্যা।
সুপার মেশ এনালাইসিসের ব্যবহার ও প্রয়োগ ক্ষেত্রঃ
যেসব সার্কিটে দুটি মেশের মধ্যবর্তী স্থানে কারেন্ট সোর্স থাকে সেসব সার্কিট হতে কারেন্ট নির্ণয় করার জন্য সুপার মেশ এনালাইসিস প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া ওহমের সূত্র ব্যবহার সেখান থেকে ভোল্টেজও নির্ণয় করা যায়
সুপার মেশ এনালাইসিস প্রয়োগ করার ধাপ সমূহঃ
ধাপ ১: প্রথমে সার্কিট হতে মেশ সংখ্যা বের করতে হবে।
ধাপ ২: প্রতিটি মেশে মেশ কারেন্টকে ঘড়ির কাটার দিকে অথবা ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে I1, I2, I3 ইত্যাদি দ্বারা চিহ্নিত করতে হবে।
ধাপ ৩: মেশ কারেন্ট অনুসারে সকল রেজিস্টরের পোলারিটি বা দিক নির্ধারন করে নিতে হবে।
ধাপ ৪: কারেন্ট সোর্স যে দুটি নোড এর মধ্যে যুক্ত থাকে তার যে কোনো একটিতে কার্শফের কারেন্ট সূত্র (KCL) এপ্লাই করতে হবে।
ধাপ ৫: কারেন্ট সোর্সকে বাদ দিয়ে কার্শফের ভোল্টেজ সূত্র (KVL) এপ্লাই করতে হবে এবং প্রাপ্ত সমীকরণ গুলোকে সমাধান করতে হবে।
সার্কিটের সাহায্যে সুপার মেশ এনালাইসিস ব্যখ্যা:
উপরের ৫ টি ধাপ প্রয়োগ করে আমরা নিচের সার্কিটের আলকে সুপার মেশ এনালাইসিস ব্যাখ্যা করব। সার্কিটি লক্ষ্য করি-
প্রথমে আমরা সার্কিট হতে মেশ সংখ্যা বের করবো। দেখতে পাচ্ছি, উপরের সার্কিটে মোট দুইটি মেশ রয়েছে। আমরা এই দুইটি মেশের মেশ কারেন্টকে I1 ও i2 দ্বারা উভয়কে ঘড়ির কাটার দিকে চিহ্নিত করলাম। এবার মেশ কারেন্ট অনুসারে আমরা রেজিস্টর সমূহের পোলারিটি চিহ্নিত করলাম এবং নিম্নরুপ সার্কিট পেলাম।
ইতিমধ্যে আমরা প্রথম ৩ টি ধাপ শেষ করেছি। এবার ধাপ ৪ অনুসারে কারেন্ট সোর্স যে দুটি নোড এর মধ্যে যুক্ত আছে তার যেকোনো একটিতে KCL এপ্লাই করব।
আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সার্কিটে মোট ২ টি নোড রয়েছে যা নিচের চিত্রে a ও b দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে।
আমরা যদি নোড a তে KCL এপ্লাই করি তাহলে নিম্নরুপ সমীকরণ পাবো,
I1 = I2 + I
এবার ধাপ ৫ অনুসারে কারেন্ট সোর্স I বাদ দিয়ে টোটাল সার্কিটে KVL এপ্লাই করতে হবে। সার্কিটে KVL এপ্লাই করার সময় R1 এর সন্নিকটে I1 পরিমাণ কারেন্টকে ধরবো এবং R2 এর সাথে I2 পরিমাণ কারেন্টকে ধরে এদের ভোল্টেজ ড্রপের মান বের করবো। এরপর KVL এপ্লাই করার পর একটি সমীকরণ পাবো। সমীকরণটি হবে নিম্নরুপ,
V1+R1I1+R2I2-V2 = 0 .
এবার আমরা যদি KCL ও KVL হতে প্রাপ্ত সমীকরণ দুটি সমাধান করি তাহলে I1 ও I2 মেশ কারেন্ট পাবো।
এভাবে আমরা সার্কিটে সুপার মেশ এনালাইসিসের ৫ টি ধাপ কমপ্লিট করে সার্কিট সমাধান করতে পারবো।
সুপার মেশ এনালাইসিসকে আরো ভালোভাবে বুঝতে নিচের ভিডিওটি দেখে নিনঃ
References:
Objective of Electrical Technology By V.K Mehta