Thomas Alva Edison প্রথম ফিউজ আবিষ্কার করেছিলেন, কিন্তু বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে তার আবিষ্কার কে বিভিন্নভাবে আপডেট করে বিভিন্ন প্রকার ফিউজ বাজারে পাওয়া যায়। এই লেখাটিতে ফিউজ কত প্রকার ও বিভিন্ন প্রকার বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের সাথে সংযুক্ত লোড গুলোকে পুড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং মূল্যবান জীবনকে বিপদমুক্ত রাখার জন্য ফিউজ বা কাট-আউটের একান্ত প্রয়োজনীয়তা আছে।
আমরা পূর্বে ফিউজ সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনেছি, পূর্বের লেখাটি পড়ুন বিস্তারিত নিচের লিংকে থেকে।
ফিউজ কত প্রকার?
ফিউজ কত প্রকার হয়ে থাকে তা নিম্মে ছকের সাহায্যে তা দেখানো হলো।
সাধারণত ফিউজ দুই প্রকারঃ
- ডিসি ফিউজ
- এসি ফিউজ
১। ডিসি ফিউজ
ডিসি ফিউজের আকার অনেক বড় হয়ে থাকে। আমরা জানি ডিসি সাপ্লায়ে সাধারণত একই লেভেলে ভোল্টেজ প্রবাহিত হয় অর্থাৎ ডিসি সাপ্লায়ে ০ ভোল্টের উপরে কনস্ট্যান্ট লেভেলে থাকে। একারনে এই ধরনের ফিউজ বন্ধ করতে ইলেকট্রিক আর্কের সৃষ্টি হয়। এই ধরনের আর্ক থেকে মুক্তি পাবার জন্য বড় দূরত্বে ইলেকট্রোড স্থাপন করা হয় যেকারনে ডিসি ফিউজের সাইজ অনেক বড় হয়।
২। এসি ফিউজ
এসি ফিউজের সাইজ অনেক ছোট। আমরা জানি এসি সাপ্লাই প্রতি সেকেন্ডে ৫০ বা ৬০ সাইকেল পার সেকেন্ডে মিনিমাম থেকে ম্যাক্সিমামে যায়। একারনে এই ধরনের ফিউজে আর্ক সৃষ্টি হবার কোন সম্ভাবনা থাকে না।
এসি ফিউজকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
- লো-ভোল্টেজ ফিউজ
- হাই-ভোল্টেজ ফিউজ
লো-ভোল্টেজ ফিউজ
কার্টিজ ফিউজ
কার্টিজ ফিউজ একটি চীনামাটি বা কাচের তৈরী নল বিশেষ। এই নলের মধ্যে ফিউজ তার লাগিয়ে সিলিকা গুড়ো দ্বারা ভর্তি করে এর উভয় মাথায় টুপি দ্বারা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উভয় মাথা হতে বের হওয়া টার্মিনাল পাতের সংগে সংযোগ করে দেওয়া হয়। এই পাত দুইটির শেষ মাথায় ছিদ্র থাকে, যা স্ক্রু সাহায্যে মেইন সুইচের সঙ্গে সংযোগ করে দেওয়া হয়। এই ফিউজ পড়ে গেলে কাচের নলের ভিতর দিকে কালো ধোয়ার দাগ দেখা যায়।
কার্টিজ ফিউজ আবার দুই প্রকার যথা-
- D-type fuse
- Link-type fuse or HRC fuse
HRC – High Rupturing Capacity Fuse
এটি একটি উচ্চ বিদারন ক্ষমতা সম্পন্ন ফিউজ। এই ফিউজের তার সাধারণত রূপার তারের তৈরী হয়। কাচ বা চীনামাটি নলের মধ্যে ফিউজ তার পুড়ে নলের উভয় প্রান্তই পিতল বা তামার ক্যাপ দ্বারা আটকিয়ে দেওয়া হয়, এই হাতলের সাহায্যে কার্টিজ ফিউজটি লাগানো ও খোলা যায়।
এই ধরনের ফিউজ 2A থেকে 800A এম্পিয়ার মানের হয়ে থাকে।
রিওয়্যারেবল ফিউজ
এটি সাধারন ফিউজ। চীনামাটি দ্বারা ফিউজ বেজ এবং ফিউজ হোল্ডার তৈরী করা হয়। ফিউজ হোল্ডারে স্ক্রু যুক্ত সংযুক্তকারী দুইটি টার্মিনাল এবং দুইটি টার্মিনাল স্ক্রু থাকে, যার সাহায্যে বৈদ্যুতিক সার্কিটকে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সাথে সংযোগ করে দেওয়া হয়।ফিউজ ব্রিজ বা ফিউজ হোল্ডার এই দুইটি কন্টাক্ট থাকে। যা ফিউজ হোল্ডারে নির্দিষ্ট খাজে বসানো থাকে।
ফিউজ তার ফিউজ বেজে দুইটি কন্টাক্ট টার্মিনাল স্ক্রুর সাথে আটকানো থাকে। যা ফিউজ বেজের দুইটি কন্টাক্টে সংযুক্ত করে দেয়। এই ধরনের ফিউজ 1 Ampere থেকে 300 Ampere পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফিউজ তারের সাইজ ফুল লোড কারেন্টের দেড় গুন হবে।
ড্রপ-আউট ফিউজ
এই ধরনের ফিউজগুলো আউটডোর ট্রান্সফরমারের প্রোটেকশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যখন সিস্টেমে ত্রুটি দেখা দেয় তখন ফিউজটি পুড়ে মাটিতে পরে যায়।
হাই ভোল্টেজ ফিউজ
হাই ভোল্টেজ ফিউজ ফিউজ ব্যবহার করা হয় ১.৫ কেভি থেকে ১৩৮ কেভি রেটেড ভোল্টেজ পর্যন্ত। এই ভোল্টেজে ছোট, বড় অনেক ট্রান্সফরমার প্রটেকশন হিসেবে এই ধরনের ফিউজ ব্যবহার করা হয়। এই ফিউজগুলো লো-ভোল্টেজ টাইপ ফিউজের মতই কিন্তু ডিজাইনিং ফিচারস ভিন্ন।
এছাড়া যেধরনের ফিউজ রয়েছে-
স্যালোলাইট ফিউজ
সাধারনত যেসব সার্কিটে কম কারেন্ট প্রবাহিত হয় সে সার্কিটে এই ধরনের ফিউজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দুই পার্শের কন্টাক্ট পাওয়ার জন্য মেটাল ক্যাপ থাকে। এটিকে মাইক্রো ফিউজও বলে। এটি সাধারণত ১ থেকে ৫০ এম্পিয়ার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্লাগ ফিউজ
এই ধরনের ফিউজ দেখতে প্লাগের মত। এর মধ্যে সিলিকা আছে এবং ফিউজ তার দিয়ে সংযোগ দেওয়া থাকে। এর মাথায় থ্রেড কাটা এবং চীনামাটির তৈরী হয়ে থাকে। এটি 1A থেকে 50A পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এইগুলো ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফিউজ বাজারে পাওয়া যায়।
ফিউজের প্রকারভেদ বিস্তারিত পড়ুনঃ Most common type of fuse