আমরা পূর্বের লেখাতে রেজিস্টর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই লেখাটিতে রেজিস্টরের কালার কোড নিয়ে আলোচনা করা হবে।
আমরা এই যুগে সবাই ডিজিটাল মাল্টিমিটার ব্যবহার করে থাকি। ডিজিটাল মাল্টিমিটারের সাহায্যে সহজে ভ্যালু পাওয়া যায় এবং এর একুরেসি ও অনেক ভালো।
আলোচ্য বিষয়সমূহঃ
রেজিস্টর সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়ুন
- রেজিস্টরের মান নির্ণয়।
- ডিজিটাল মাল্টিমিটার ব্যবহার করে রেজিস্টরের মান নির্ণয়
- কালার কোড ব্যবহার করে রেজিস্টরের মান নির্ণয়
- কালার কোড চার্ট
- মান নির্ণয় এর সূত্র
- রেজিস্টরের মান যেভাবে লিখতে হয়
রেজিস্টরের মান নির্ণয়
রেজিস্টরের মান দুইভাগে নির্ণয় করা যায়।
- ওহম মিটার / এনালগ মাল্টিমিটার / ডিজিটাল মাল্টিমিটার ব্যবহার করে।
- কালার কোড এর সাহায্যে।
মিটারের মাধ্যমে
ওহম মিটার এবং এনালগ মাল্টিমিটার:
শুরুতে মিটারকে দেখতে হবে যে মিটারের কাটাটি জিরো এডজাস্টমেন্ট এ আছে কিনা। না থাকলে মিটারের জিরো এডজাস্টমেন্ট স্ক্রু সাহায্যে কাটাকে জিরো পজিশনে আনতে হবে।
এরপরে মিটারের সিলেক্টিং নবকে ওহম পজিশনে নিতে হবে। মিটার দুটি ক্যাবল(প্রুব) কে রেজিস্টরের দুই প্রান্তে সংযুক্ত করতে হবে। এতেই মিটারটির কাটা একটি পাঠ দিবে যেটিই হবে রেজিস্টরের মান।
ডিজিটাল মাল্টিমিটারের সাহায্যেঃ
এটি বর্তমান যুগে বহুল ব্যবহিত মিটার। এর সাহায্যে খুব সহজে মান পাওয়া যায়। প্রথমে সিলেক্টিং নবকে ওহমে নিতে হবে। এরপরে রেজিস্টরের দুই প্রান্ত মিটারের দুই প্রান্তের সাথে স্থাপন করলে যে পাঠ পাওয়া যাবে তাই হবে রেজিস্টরের মান।
কালার কোড এর সাহায্যে মান নির্ণয়ঃ
কালার কোড দ্বারা খুব সহজেই আমারা রেজিস্টরের মান নির্ণয় করতে পারি। এখন প্রশ্ন হলো কালার কোড কি? রেজিস্টরের গায়ে বিভিন্ন প্রকার রঙ দ্বারা চিহ্নিত করা থাকে এগুলোকে কালার কোড বলে। কালার কোড এক একটি প্যাচকে ব্যান্ড বলে।
রেজিস্টরে সাধারণত সর্বনিম্ম চার ব্যান্ড থাকে। এছাড়া ৫ ও ৬ ব্যান্ডের কালার কোড রেজিস্টর পাওয়া যায়। এতে সর্বমোট ১২ প্রকার কালার ব্যবহিত হয়ে থাকে। প্রতিটি কালারে মান আছে তা চার্টের মাধ্যমে দেওয়া হলো।
Resistor color code মনে রাখার বিশেষ পদ্ধতি:
মানগুলো ক্রমিক অনুসারে মনে রাখার বিশেষ পদ্ধতি
বাংলাতেঃ কা, বা, লা, ক, হ, স, নী, বে, ধূ, সা।
ইংরেজিতেঃ BB ROY Good Boy Very Good Worker
BB B = Black (কালো) B=Brown()
ROY R=Red, O=Orange, Y=Yellow
Good G=Green
Boy B=Blue
Very V=Violet
Good G=Gray
Worker W=white
এবার অতি সহজে মান নির্ণয় পদ্ধতি দেখবো
১ম কালারের মান লিখব, ২য় কালারের মান লিখব, ৩য় কালারের মান যত হবে ততগুলো শুন্য দিবো, ৪র্থ কালার সাধারণত সোনালী বা রুপালি কালর হয়ে থাকে।
৪র্থ কালার ব্যান্ড কে টলারেন্স হিসেবে ধরা হয়। এখন প্রশ্ন আসতে পারে টলারেন্স কি???
টলারেন্স শুধুমাত্র সোনালী বা রুপালী হয়ে থাকে। কালার কোডের শেষ ব্যান্ড হলো টলারেন্স যা রেজিস্টরের মানের ভারসম্য রক্ষা করে। আমরা অনেকে ইরর সম্বন্ধে পরিচিত। কোন একটি মান যখন আমরা পেয়ে থাকি তখন সেটা যেকোন কারনে হুবহু নাও হতে পারে।
ঠিক তেমনি রেজিস্টরের ক্ষেত্রে মান তাপমাত্রার কারনে কম বেশি হতে পারে। এই টলারেন্সের রেঞ্জ কোন মানের +,- বুঝায়। আশা করি উদাহরন টি দেখলে আমরা পুরোপুরি বুঝতে পারবো।
উদাহরনঃ ধরি একটা রেজিস্টরের গায়ের কালার যথাক্রমে হলুদ, বেগুনী, বাদামী, সোনালী
তাহলে হলুদ এর জন্য লিখবো ৪
বেগুনির জন্য লিখবো ৭
বাদামীর জন্য ১ , তাহলে ১*১০=১০
সোনালী টলারেন্স (+-৫%)
রেজিস্টর এর মান আসবে, ৪৭*১০=৪৭০ ওহম বা ৪৭০/১০০০=০.৪৭ কিলোওহম।
উদাহরনঃ ২। সবুজ, নীল, কমলা, সোনালী
সবুজ=৫, নীল=৬, কমলা = ১*১০০০=১০০০, সোনালী= +-৫%
তাহলে মান আসবে=৫৬*১০০০=৫৬০০০ ওহম এবং টলারেন্স বা মান কম বেশি হবে +-৫%
কিলোওহমে নিতে চাইলে, ৫৬০০০/১০০০=৫৬ কিলোওহম।
মান লেখা হয় যেভাবেঃ
আগে মান লেখা হতো ৫০Ω, ৬০KΩ, ১MΩ । কিন্তু এখন লেখা হয় ৫০R, ৬০K, ১ M। এই ক্ষেত্রে R থাকলে ওহম, K থাকলে কিলোওহম, M দ্বারা মেগাওহম বুঝায়।
পূর্বের রেজিস্টর (রেজিস্টর কি এবং এর বিস্তারিত আলোচনা) নিয়ে লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কালার কোড রেজিস্টরের মান নির্ণয় ভিডিও
এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত ইংরেজিতে পড়ুনঃ How to calculate the Resistor color code?