অটো-ট্রান্সফরমার এর গঠন ও কার্যনীতিসহ বিস্তারিত আলোচনা

আমরা সবাই কম বেশি ট্রান্সফরমার সম্বন্ধে জানি। কিন্তু গঠনগত দিক দিয়ে অটো-ট্রান্সফরমার একটু ভিন্ন। তাই এর ভিন্নতা সম্পর্কে একটু ধারনা থাকা উচিত। আমি এখন অটো-ট্রান্সফরমার এর গঠন ও কার্যপ্রণালী নিয়ে আলোচনা করবো।

ট্রান্সফরমার সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়ুন 

অটো-ট্রান্সফরমার এই আর্টিকেলে যা থাকছেঃ

  • গঠন ও কার্যনীতি
  • সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ

অটো-ট্রান্সফরমার গঠন ও কার্যনীতিঃ

অটো-ট্রান্সফরমার অটো-ট্রান্সফরমার

অটো-ট্রান্সফরমারে কেবলমাত্র একটি কয়েল থাকে। এর কিছু অংশ প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উভয়ের মধ্যে কমন থাকে। অর্থাৎ অটো-ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উভয় কয়েলই ইলেকট্রিক্যালি এবং ম্যাগনেটিক্যালি সংযুক্ত থাকে।

তারপরও একে ট্রান্সফরমার বলা হয়, কারণ এর কার্যকলাপ ও আচরণ দুই ওয়াইন্ডিং ট্রান্সফরমারের মতো। চিত্রে এই ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি কয়েল দেখানো হলো, যার AC হলো প্রাইমারি এবং এর কিছু অংশ BC হলো সেকেন্ডারি অর্থাৎ এর BC অংশ প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উভয়ের জন্য কমন(Step Down এর ক্ষেত্রে)। আবার, AC হলো সেকেন্ডারি এবং BC অংশ হলো প্রাইমারি ও উভয়ের জন্য কমন(Step Up এর ক্ষেত্রে)।

সেকেন্ডারিতে প্রয়োজনীয় ভোল্টেজ পাওয়ার জন্য Continuous কয়েল হতে নির্দিষ্ট পয়েন্ট নির্ধারণ করতে হয় এবং উক্ত পয়েন্ট হতে সেকেন্ডারি ভোল্টেজ নেয়া হয়। এ ট্রান্সফরমারে সম্পূর্ণ সেকেন্ডারি পাওয়ার ট্রান্সফরমার অ্যাকশনে উৎপন্ন হয় না, কিছু পাওয়ার ট্রান্সফরমার অ্যাকশনে এবং কিছু কন্ডাক্টরের মাধ্যমে সরাসরি স্থানান্তরিত হয়।

ট্রান্সফরমার অ্যাকশনে স্থানান্তরিত পাওয়ারকে ট্রান্সফরমড পাওয়ার বলে। আর কন্ডাক্টরের  মাধ্যমে স্থানান্তরিত পাওয়ারকে কন্ডাক্টেড পাওয়ার বলে।  এ ট্রান্সফরমারের KVA rating কেবলমাত্র  VsIs এর উপর নির্ভর করে। অটো-ট্রান্সফরমার দুইভাবে গঠন করা হয়।

প্রথমত, একটি সম্পূর্ণ ওয়াইন্ডিং হতে সুবিধামত স্থানে টেপিং করে সেকেন্ডারিতে ভোল্টেজ নেয়া হয়।    দ্বিতীয়ত, দুটি ওয়াইন্ডিংকে বৈদ্যুতিক(Electrically) ও চুম্বকীয়ভাবে(Magnetically) সংযোগ করে সেকেন্ডারিতে প্রয়োজনীয় ভোল্টেজ নেয়া হয়।

অটো-ট্রান্সফরমার

চিত্রে AC কয়েল প্রাইমারি হিসেবে কাজ করছে। এর কিছু অংশ BC সেকেন্ডারি হিসেবেও কাজ করে। ধরি AC অংশে 100V সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। BC অংশ AC অংশের ঠিক অর্ধেক বলে BC অংশে 50 ভোল্ট পাওয়া যাবে। এখন লোড হিসেবে যদি 2.5 ওহম সংযোগ করা হয়, তবে এতে 20A লোড কারেন্ট (I=50/2.5=20A) প্রবাহিত হবে। এটিই লোড কারেন্ট।

এ অবস্থায় সেকেন্ডারি পাওয়ার (50×20)= 1000 W হবে। ট্রান্সফরমারের নিয়মানুযায়ী প্রাইমারি পাওয়ার 1000 ওয়াট। প্রাইমারি কারেন্ট Ip= 1000/100= 10A। কারসফের সুত্রমতে BC কয়েলের কারেন্ট হবে (Is-Ip)=10A। অতএব, অটো-ট্রান্সফরমারের লোড পাওয়ারের সম্পূর্ণটা  ট্রান্সফরমার অ্যাকশনে স্থানান্তরিত হয় না।

সুবিধা ও অসুবিধাঃ

সুবিধাসমূহঃ

  • এর কর্মদক্ষতা অপেক্ষাকৃত বেশি এবং ভোল্টেজ রেগুলেশন কম।
  • এটি আকারে ছোট ফলে কম জায়গা লাগে।
  • লো-ভোল্টেজে এটি ব্যবহার করা সুবিধাজনক।
  • এতে তুলনামূলক ওয়াইন্ডিং এর জন্য কপার তার কম লাগে।

অসুবিধাসমূহঃ

  • এর প্রাইমারিতে হাই ভোল্টেজ থাকে বিধায় অপারেশন যথেষ্ট নিরাপদ নয়।
  • হাই রেশিওতে কাজ করা যায় না।
  • প্রাইমারি ও সেকেন্ডারির মধ্যে বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকায় সব সময় বিপদের আশংকা থাকে। কারণ টেপিং খুলে গেলে কয়েল জ্বলে যাবে।

ট্রান্সফরমার সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়ুন