সেমিকন্ডাক্টরের ইতিহাস | History of Semiconductors

সেমিকন্ডাক্টরের ইতিহাস – আপনি যখন এই ব্লগটি পড়ছেন আপনার সামনের ডিভাইসটির দিকে তাকিয়ে একটু চিন্তা করুন। আপনার জীবন এটি কত সহজ করে দিয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সেমিকন্ডাক্টরের প্রভাব বিদ্যমান। কোন সন্দেহ নেই সেমিকন্ডাক্টর বিশ্ব বদলে দিয়েছে এবং বদলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেমিকন্ডাক্টরের ইতিহাস অনেক বড় এবং জটিল খুব সংক্ষেপে আলোচনা করা সম্ভব না হলেও কিছু বিষয় তুলে ধরছি এই ব্লগের মাধ্যমে।

সেমিকন্ডাকটিং (Semiconducting) শব্দ টি প্রথম ব্যবহার করেন Alessandro Volta ১৭৮২ সালে। অনেকের মতে সেমিকন্ডাক্টর এর জন্ম ১৮৭৪ সালের দিকে rectifier উদ্ভাবন এর মাধ্যমে। ১৯৪৬ সালের দিকে University Pennsylvania ভ্যাকুয়াম টিউবের সাহায্য একটি কম্পিউটার তৈরি করে। ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করার ফলে আকার দাড়ায় বিশাল দখল করে পুরো একটি বিল্ডিং সাথে প্রয়োজন হয় বিপুল পরিমান বিদ্যুৎ।

শতাব্দীর পর, ১৯৪৭ সালে আমেরিকার বেল ল্যাবে John Bardeen এবং Brattain উদ্ভাবন করেন point-contact ট্রানজিস্টর। পরবর্তীতে William Shockley ১৯৪৮ সালে উদ্ভাবন করে জাংশন ট্রানজিস্টর এবং সূচনা ঘটে ট্রানজিস্টর যুগের। ট্রানজিস্টর উদ্ভাবনের পর ক্যালকুলেটর (কম্পিউটার) আকারে ছোট হয়ে আসে। ১৯৫৬ সালে William Shockley, Bardeen এবং Brattain সেমিকন্ডাক্টরে অবদানের জন্য এবং ট্রানজিস্টর নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নে পদার্থ বিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন।

ট্রানজিস্টর উদ্ভাবনের পর সেমিকন্ডাক্টর শিল্প খুব দ্রুত প্রসারিত হতে থাকে। ১৯৫৭ সালে এটি ইতিমধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলারের স্কেল অতিক্রম করে। আমেরিকার Texuas Instrument এ কাজ করার সময় ১৯৫৯ সালে Jack Kilby উদ্ভাবন করেন bipolar IC, এই আবিস্কার সেমিকন্ডাক্টরের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন। বিশ্বকে তাক লাগানোর আরেক ধাপে পৌছে যায় সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, এটি আকারে ছোট এবং ওজনে হালকা হওয়ায় ব্যাপকভাবে সারাবিশ্বে ব্যবহৃত হতে থাকে।

১৯৫৭ সালের দিকে Texas Instrument বাজারে নিয়ে আসে ইলেকট্রনিক ডেক্সটপ কম্পিউটার এর সাথে পাল্লা দিয়ে জাপান একের পর এক চমক দেখায়, এই ক্যালকুলেটর যুদ্ধ ১৯৭০ সাল প্রর্যন্ত চলতে থাকে। আসতে থাকে IC ছোট করার নতুন নতুন প্রযুক্তি।

সেমিকন্ডাক্টরের ইতিহাস
Jack St. Clair Kilby (November 8, 1923 – June 20, 2005)

IC ছোট করার কিছু প্রযুক্তি নিচে দেয়া হলঃ

NameYear Transistor Count
SSI (small-scale integration)19641 to 10
MSI (medium-scale integration)196810 to 500
LSI (large-scale integration)1971500 to 20 000
VLSI (very large-scale integration)198010 000 to 99 999
ULSI (ultra-large-scale integration)1984100 000 and more

সেমিকন্ডাক্টরের ইতিহাস
intel core i7 processor

কখনও ভেবে দেখেছেন আপনার টেবিলে রাখা Core i7 প্রসেসরটির মধ্য প্রায় ৭৩১ মিলিয়ন ট্রানজিস্টর রয়েছে কিন্তু এটি মাএ ১.৬৭ স্কয়ার ইঞ্চি। মাইক্রোস্কোপ ছাড়া এই চীপের ভেতরের যন্ত্রাংশ কখনই দেখতে পাবেন না।

তড়িৎ পরিবাহী পদার্থ সমূহকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়ঃ

  • সুপরিবাহী (Conductor): যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজে ইলেকট্রন অর্থাৎ তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে সেই সকল পদার্থ কে সুপরিবাহী বলে। যেমনঃ তামা, লোহা, সোনা ইত্যাদি।
  • অর্ধপরিবাহী (Semi Conductor): যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত মাত্রার ইলেকট্রন অর্থাৎ তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে সেই সকল পদার্থ কে অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন: সিলিকন, জার্মেনিয়াম ইত্যাদি।
  • অন্তরক (Insulator): যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে না সেই সকল পদার্থ কে অন্তরক বা কুপরিবাহী বলে। যেমন: কাঁচ, প্লাস্টিক, কাগজ, কাঠ ইত্যাদি।

*পরবর্তী ব্লগে সেমিকন্ডাক্টরের গঠন ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে