আজকের আর্টিকেলটিকে শুধুমাত্র আর্টিকেল বললে ভূল হবে, এটি রীতিমত সবারই মনের কথা। সব চাকুরিপ্রত্যাশীদেরই একটা ড্রীম থাকে যে, পাওয়ার সেক্টর এ একটা আরামের জব করবে এবং মাস শেষে মোটা টাকা হাতে পাবে। বাংলাদেশের চাকরির বাস্তবতা কি বলে? বাস্তবতা আর এই প্রত্যাশা কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ? এই আশা কি দিবা স্বপ্ন? চলুন আজকে চাকরিক্ষেত্রের এই রহস্য তুলে ধরা যাক।
চাকরির সারমর্ম কথা
চাকরি শব্দটির সাথে শারীরিক এবং মানসিক পরিশ্রম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ পরিশ্রম না করলে কতৃপক্ষ আপনাকে মাস শেষে কেন স্যালারি দিবে? আপনার স্যালারির অংক যত বেশি হবে, আপনার দায়িত্বও অনেক বেড়ে যাবে। হ্যা, তবে অল্প স্যালারিতে অধিক শ্রম দিয়ে জব করার কথাও আমাদের দেশে বহুলভাবে প্রচলিত। এটা কোম্পানির মালিক ও হর্তাকর্তাদের নিজস্ব সীমাবদ্ধতা বলা যায়। কারণ, শ্রম আইনে জবের আদর্শ সময় হল ৮ ঘন্টা। আপনার যাবতীয় কার্যক্রম এ সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। তবে কোম্পানিভেদে কাজের ভিত্তিতে কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে পরিশ্রমের মাত্রা কম বেশি হতেই পারে যাকে আপেক্ষিকভাবে আরামের জব বলা যেতে পারে। যেমন আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সরকারি জবকে তুলনামূলক আয়েশের এবং ক্যারিয়ারের সুনিশ্চিত সোপান বলে গণ্য করা হয়ে থাকে। কিন্তু আপনাকে কর্ম করেই বেতন নিতে হবে।
কোন পাওয়ার সেক্টরে কাজের চাপ তুলনামূলক কম?
এবার চলুন আমাদের দেশের পাওয়ার সেক্টরের চাকরিগুলোর মধ্যে আপেক্ষিকভাবে কোনটি আরামের হতে পারে তা জেনে নেই।
পাওয়ার সিস্টেম মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত। যথাঃ
- জেনারেশন
- ট্রান্সমিশন
- ডিস্ট্রিবিউশন
এবার আসুন এই তিন জায়গার কোনটিতে জব করে রিলাক্স পাবেন? এটা আসলে নির্দিষ্ট করে বলাটা খুবই কঠিন। কারণ বলতে গেলে তিন জায়গাতেই আরাম আছে আবার কোন জায়গাতেই নেই। এখন ব্যাপারটা ক্লিয়ার করা যাক। কিছু ফ্যাক্টরের উপর আপনার চাকরির পরিশ্রমের ধরন নির্ভর করবে। যথাঃ
- প্রথমত, আপনাকে পদায়নকৃত সাবস্টেশনের রেটিং, লোড, গ্রাহক বা ফিডার লাইনের সংখ্যা এসব কিছুর উপর নির্ভর করবে। কারণ ফিডার সংখ্যা, সাবস্টেশনের ক্যাপাসিটি যত বেশি হবে ফল্ট হবে তত বেশি। তাই মনিটরিং লেবেল অনেক বেড়ে যাবে। আবার সাবস্টেশন ক্যাপাসিটি, ডিমান্ড কম থাকলে আপনার কাজের প্রেসার তুলনামূলক কম হবে।
- তারপর আপনার কাজের চাপ নির্ভর করবে আপনার সহকর্মীদের উপর। আপনি যে টিম নিয়ে কাজ করছেন সেই টিমের বাকিরা কতটুকু কর্মদক্ষ তার উপরেও আপনার কাজের প্রেসার নির্ভর করবে। কথায় আছে, দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।
- তারপর আপনার কর্মপরিবেশের উপরেও অনেকাংশে আপনার মানসিক চাপের তারতম্য ঘটে। আপনার কর্মপরিবেশ যদি হয় নিরিবিলি, কার্যালয় যদি হয় সুশৃংখল এবং পরিপাটি তাহলে আপনি মানসিকভাবে অনেক চাঙ্গা থাকবেন। তখন কাজের অতিরিক্ত চাপকেও চাপ মনে হবেনা। অনায়সেই কাজ করতে পারবেন।
- তাছাড়া আপনার সিনিয়র বসের উপরেও আপনার কাজের প্রেসার নির্ভর করবে। আপনার বস যদি ফ্রেন্ডলি, সাহায্যপরায়ণ হয় তাহলে আপনাকে অনেক ছাড় দিবে। পক্ষান্তরে বস যদি ঘাড়ত্যাড়া প্রকৃতির মানুষ হয় তাহলে আপনার বিপদ আছে। ইমার্জেন্সিতেও ছুটি দিতে চাইবেনা, অতিরিক্ত কাজের চাপ দিতে চাইবে।
সবশেষে বলা যায়, আপনার চাকরি আরামের নাকি ঘুম হারামের সেটা নির্ভর করছে অনেকটাই আপনার ভাগ্যের উপর। প্রতিষ্ঠানভিত্তিক স্পেসিফিক করে এ ব্যাপারে বলাটা অনেকটাই কঠিন।
আরো কিছু আর্টিকেল
সরকারি চাকরি পেতে যে ৬ টি টিপস সহায়ক হতে পারে
চাকরি থেকে অব্যহতি দেয়ার দরখাস্ত। কেমন হওয়া উচিত?
উপ-সহকারি সরকারি জবের প্রশ্নের ধরন দেখে নিন