A,B,C,D,K,Z টাইপ MCB সার্কিট ব্রেকার ও সার্কিট ব্রেকার লকিং

ট্রিপিং কোয়ালিটি/ব্রেকিং ক্যাপাসিটির উপর ভিত্তি করে MCB সার্কিট ব্রেকার/Miniature Circuit Breaker কে বিভিন্ন টাইপে ভাগ করা যায়।

ব্রেকিং ক্যাপাসিটি/ ট্রিপিং কোয়ালিটি বলতে কি বোঝায়?

ব্যাপারটিকে মানবদেহের সাথে খুব সুন্দরভাবে তুলনা করা যায়। আমরা জানি, মানবদেহের রক্ত একটি বাফার দ্রবণ। অর্থাৎ আপনি এসিডিক বা ক্ষারীয় খাদ্যদ্রব্য একসাথে খেলেও রক্তের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে না। সেটি নিরপেক্ষ থাকে। কিন্তু তাই বলে যদি আপনি সালফিউরিক এসিড সরাসরি খেয়ে নেন সেক্ষেত্রে মৃত্যু অনিবার্য। আপনার ভেতরে পুরো বটি কাবাব হয়ে যাবে। অর্থাৎ আপনার রক্ত একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় অম্ল বা ক্ষার গ্রহণ করতে পারে। তার উপরে গেলে মহাবিপদ। একইভাবে সার্কিট ব্রেকারও একটি নির্দিষ্ট মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহ পর্যন্ত আর্ক অবদমন করতে পারে। বিদ্যুৎ প্রবাহ সেই মাত্রার উপরে গেলে সার্কিট ব্রেকারটি নিজেই নষ্ট হয়ে যাবে বা পুড়ে যাবে। সার্কিট ব্রেকারের আর্ক অবদমনের এই নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটিই হল ব্রেকিং ক্যাপাসিটি। যার একক সাধারণত KA (Kiloampere)।

সার্কিট ব্রেকার এবং মানবদেহ
সার্কিট ব্রেকারের ব্রেকিং ক্যাপাসিটি এবং মানবদেহ

নিচে বিভিন্ন টাইপ/ক্যাটাগরির এম সি বি এর পার্থক্য তুলে ধরা হল:

A type MCB

  • A type MCB খুব হাই সেন্সিটিভ সার্কিট ব্রেকার।
  • সাধারণত সেন্সিটিভ ডিভাইসগুলোতে এ ধরনের ব্রেকার ব্যবহার করা হয়।
  • ব্রেকারটি তার সংশ্লিষ্ট ডিভাইসের রেটেড কারেন্টের দুই বা তিনগুণ পর্যন্ত ট্রিপ করতে সক্ষম।

B type Miniature Circuit Breaker

  • এই ধরনের সার্কিট ব্রেকার ডিভাইস শর্ট সার্কিট ফল্টের কবলে পড়ে তার লোড কারেন্ট রেটেড কারেন্টের ৩ বা ৫ গুণ পর্যন্ত ট্রিপ করতে সক্ষমতা রাখে।
  • এটির অপারেটিং টাইম ০.০৪ থেকে ১৩ সেকেন্ড।

যেসব লোডের জন্য ব্যবহার করা হয়

বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত রেজিস্টিভ লোড যেমন লাইটনিং সার্কিট।

টাইপ C MCB

  • এই ধরনের সার্কিট ব্রেকার সাধারণত লোডের রেটেড কারেন্টের ৫-১০ গুণ পর্যন্ত কারেন্ট প্রবাহ পর্যন্ত ব্রেকিং ক্যাপাসিটি রাখে।
  • এটির অপারেটিং টাইম ০.০৪ থেকে ৫ সেকেন্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে।

কোথায় ব্যবহার করা হয়?

এই ধরনের সার্কিট ব্রেকার সাধারণত ইন্ডাস্ট্রির ইন্ডাক্টিভ লোডসমূহ যেমন ট্রান্সফরমার, মোটর এবং ফ্যানের জন্য ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ যেসমস্ত লোডে রাশ কারেন্ট হওয়ার প্রবণতা বেশি সেখানে ব্যবহার হবে।

টাইপ D Miniature Circuit Breaker

  • এই ধরনের সার্কিট ব্রেকারের ব্রেকিং ক্যাপাসিটি লোডের মূল কারেন্টের ১০-২০ গুণ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • এটির অপারেটিং টাইম ০.০৪ সেকেন্ড থেকে ৩ সেকেন্ড পর্যন্ত।

ব্যবহারের ক্ষেত্র

সাধারণত হাই পাওয়ার ইন্ডাস্ট্রিয়াল লোডসমূহ যেমন হাই পাওয়ারের মোটর, ওয়েল্ডিং মেশিন, এক্স-রে এগুলোর জন্য ডি টাপ এম সি বি ব্রেকার ব্যবহার করা হয়।

টাইপ K এম সি বি

  • K ক্যাটাগরির MCB এর ব্রেকিং ক্যাপাসিটি মূল লোড কারেন্টের ৮-১২ গুণ।
  • অপারেটিং টাইম ০.১ সেকেন্ডেরও কম।

ব্যবহারের ক্ষেত্র

যেসমস্ত লোডে ইনরাশ কারেন্ট প্রবাহের প্রবণতা বেশি তাদের ক্ষেত্রে এই ব্রেকার ব্যবহার উত্তম।

টাইপ Z এম সি বি

  • এই ক্যাটাগরির এম সি বি এর ব্রেকিং কোয়ালিটি মূল লোড কারেন্টের দুই থেকে তিনগুণ।
  • অপারেটিং টাইম ০.১ সেকেন্ডেরও কম।

তুলনামূলকভাবে কোন সার্কিট ব্রেকার ভাল হবে?

তুলনামূলকভাবে ক্ষেত্রবিশেষে A,K,Z ব্রেকার ব্যবহার করা উত্তম। কারণ এদের অপারেটিং টাইম বাকিগুলোর তুলনায় কম। আর অপারেটিং টাইম কম মানে খুব দ্রুত ট্রিপিং করতে সক্ষমতা রাখে।

সার্কিট ব্রেকার লক করা হয় কেন?

সাধারণত নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বা সাবস্টেশনের বিশেষ কোন কাজের সময় সার্কিট ব্রেকার লক রাখা হয়। আর লক করার পর যে লক করেছে সেই ব্যক্তির নাম ব্রেকারের সাথে যুক্ত কার্ডে লিখে রাখতে হয়। উল্লেখ্য যে, এই কার্ডটি আগুনে পুড়ে যায়না। তাই কোন দূর্ঘটনা হলে এই লকের দায়িত্বে কে ছিল তা জানা যায়।

সার্কিট ব্রেকার লক
সার্কিট ব্রেকার লকিং

Circuit Breaker নিয়ে আরো মজার পোস্ট

সার্কিট ব্রেকারের বিভিন্ন সমস্যা এবং নিশিভূতের গল্প

ELCB এবং RCCB সার্কিট ব্রেকারের ৫টি পার্থক্য