সরকারি চাকরি পেতে যে ৬ টি টিপস সহায়ক হতে পারে

অনেকের প্রত্যাশা একটা সরকারি চাকরি এবং সরাকারি চাকরি কে অনেকেই সোনার হরিণ বলেও আখ্যা দিয়ে থাকেন। ভালো বেতন থেকে শুরু করে সরকারি ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সব দিক দিয়েই সরকারি চাকরির তুলনা হয় না। এছাড়াও অবসরের পর ভালো পেনশন এসব সুবিধাও একমাত্র সরকারি  চাকরিতে রয়েছে। তাই অনেকের প্রথম পছন্দ সরকারি চাকরি। কিন্তু বর্তমানে সরকারি চাকরি পাওয়া যেন সোনার হরিণ। আর এই সোনার হরিণ পেতে হলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়, তাও কাঙ্ক্ষিত চাকরিটা পাওয়া সম্ভব হয় না। সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নিচে ৬ টি টিপস দেয়া আছে যা পাঠকদের কিছুটা হলেও সহায়ক হবে বলে আশা করছি।

১. উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করুনঃ

কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেখান থেকে নির্দিষ্ট প্রশিক্ষনে অনেক ভালো প্রস্তুতি নিতে পারবেন। হ্যাঁ আপনি বাড়িতে বসেই প্রস্তুতি নিয়ে হয়তো সরকারি চাকরি পেতে পারেন, কিন্তু একটা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষন নিলে সঠিকগাইড লাইন পাবেন যা আপনার জন্য অনেক ভালো এবং সহজ হবে। কারন প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট প্রশিক্ষন দেওয়ার প্যানেল আপনাকে উপযুক্ত পদ্ধতি শিখাতে পারবেন। সেখানে বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নেওয়া হয়, তাতে আপনার প্রস্তুতিতে অনেক সাহায্য করবে।

২. যথেষ্ট সময় দিতে হবেঃ

সরকারি চাকরি খুবই কাঙ্ক্ষিত একটি ক্ষেত্র, তাই এই ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাও অনেক বেশি। কারন সবাই চাইবে চাকরিটা পেতে, সেখান থেকে আপনাকে সবার থেকে আলাদা হয়ে চাকরিটা পেতে হবে। তাই তার জন্য দরকার খুব ভাল প্রস্তুতি। আপনার নিজেকে সময় দিতে হবে, নিজেকে সকলের থেকে আলাদা ভাবে তৈরি করতে হবে। এবং পরিক্ষার জন্য ভালো ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। নির্দিষ্ট সময় মেনে পড়তে হবে আর প্র্যাকটিস করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি পড়াশুনার জন্য একটি রুটিন বা পরিকল্পনা সাজাতে পারেন। এতে করে আপনি ভালো কিছু আশা করতে পারবেন।

৩.  কোন ধরনের চাকরি করবেন সেটা সিদ্ধান্ত নিনঃ

অনেকেই হয়তো ভাবেন সরকারি চাকরির সব ক্ষেত্রেই প্রশ্নপত্র ধরন মোটামুটি একইরকম হবে। কিন্তু এটা একটি ভুল ধারনা। নির্দিষ্ট চাকরি না দেখে সবগুলোতে দিলে ভুল সিদ্ধান্ত হবে। আপনাকে প্রথমেই বাছাই করতে হবে আপনি কোন ধরনের চাকরি করবেন, কোন ধরনের চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিবেন। কারন উচু পদ বা  সব ক্ষেত্রের চাকরির পথ আলাদা আলাদা হয়। তাই তার জন্য প্রস্তুতিও আলাদা আলাদা ভাবে নিতে হয়। তাই প্রথমেই কোন চাকরি আপনি করবেন সেটা নির্বাচন করুন। আর আপনি কোন কাজের জন্য উপযুক্ত সেটাও ভাবুন এরপর সিদ্ধান্ত নিন।

৪. ইন্টারভিউ দিনঃ

ধরুন আপনি লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, আপনি যে প্রথম ভাইবাতেই চাকরি পাবেন তা নয়। হয়তো অনেকবার লেগে যেতে পারে। তাতে আপনি ঘাবড়ে যাবেন না। বরং আপনি আরও বেশি ইন্টারভিউতে যান। ইন্টারভিউয়ের সময় কখনও ধৈর্য্য হারাবেন না। ধৈর্য্য হারিয়ে ফেললে আপনি ঘাবড়ে যাবেন। তাই ধীরে সুস্থে মাথা ঠাণ্ডা রেখে অংশ নিবেন। বিভিন্ন ইন্টারভিউতে গেলে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা হবে। বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন তাতে আপনার অবিজ্ঞতা বাড়বে। আর ব্যর্থ হলেও খারাপ লাগানো যাবেনা। আপনি যতবার ইন্টারভিউ দেবেন আপনার অভিজ্ঞতা, আপনার দক্ষতা ততোই বাড়বে। এবং একসময় এগুলো আপনাকে অনেক সাহায্য করবে।

ভাইবা বোর্ডে কিছু কমন প্রশ্ন পড়ুন

৫. খোজ খবর রাখুনঃ

সরকারি চাকরি করতে হলে আপনাকে দেশ-বিদেশ সব ক্ষেত্রের ব্যপারে খোজ খবর রাখতে হবে। কখন কোথায় কি হচ্ছে সেটা আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। সব সময় সব ব্যপারে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। শুধু চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, চাকরি পাওয়ার পর পদন্নোতির জন্য এটা অনেক দরকার। এছাড়াও চাকরিতে অনেকসময় অনেক প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতিতে পরতে পারেন, তখন এই আপডেটেড থাকার কারনে আপনার অনেক সাহায্য হবে।

৬. একটি সুন্দর সি.ভি তৈরি করুনঃ

একটি সুন্দর সিভি চাকরিদাতার কাছে আপনার সম্পর্কে পুরো ধারনাটাই বদলে দিতে পারে। তাই খুব যত্ন করে সুন্দর ভাবে সিভি তৈরি করতে হবে। এখনকার জেনারেশন এমন যে নিজের গুন নিজেরই প্রকাশ করতে হয়। তাই খুব ভালোভাবে আপনার অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ইত্যাদি উল্লেখ করে আপনার রিজিউম তৈরি করুন। তাতে আপনার সব ভালো ভালো গুনের কথা উল্লেখ করুন। এবং রিজিউম বা সিভি লেখার সঠিক পদ্ধতি মানুন। সিভি প্রফেসনালি লিখার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবে।

একটি ভালো সিভি তৈরি করতে হয় কিভাবে পড়ুন

সবশেষে বলা যায়, সরকারি চাকরি সোনার হরিণ হলেও বা সরকারি চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন মনে হলেও উপযুক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নিলে সেই মোতাবেক পরিক্ষা দিলে এতো কঠিন হবে না। আর উপরে যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা মাথায় রাখলে অবশ্যই আপনার জীবনে সরকারি চাকরি আসবে। আপনাকে শুধু নিজে থেকে চেষ্টা করতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।