যাদের ভোল্টেজ কারেন্ট নিয়ে এখনো ঘোলা ধারণা আছে তাদের জন্য লিখা। আচ্ছা, আপনাদেরকে যদি প্রশ্ন করি ভোল্টেজ কি? কারেন্ট কি? অনেকে হয়ত বলবেন এ তো একেবারে সহজ প্রশ্ন। হুম আমিও জানি অনেকেই এ ব্যাপারে জানেন। কিন্তু ব্যাপারগুলোকে কি কখনো বাস্তবের নিরিখে কল্পনা করেছেন??
প্রকৌশল এমন একটি জিনিস যেটার সাথে আমরা খুব সহজেই বাস্তব জীবনের তুলনা করতে পারি। চলেন একটা সুন্দর উপমা দিই যার পর ভোল্টেজ কারেন্ট কে আরো ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন আশা করি।
ধরুন, আমরা সবাই বনভোজনে যাচ্ছি। যাত্রা পথে গাড়িটি খারাপ হয়ে গেল। এখন খারাপ হল এমন এক নির্জন জায়গায় যেখানে কোন সার্ভিসিং স্টেশন নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে গাড়িটিকে ধাক্কা দিতে দিতেই সার্ভিসিং স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে যাব। এবার কয়েকজন পালোয়ান মিলে গাড়িটাকে ধাক্কা দিতে শুরু করলাম
😀 . খেয়াল করলাম, ধাক্কা যত বেশি পরিমাণে দিচ্ছি গাড়ি তত সামনে যাচ্ছে। আর ধাক্কা যত আস্তে পড়ছে গাড়ি তত কম এগিয়ে যাচ্ছে। আর একটা জিনিস আমরা লক্ষ্য করলাম, রাস্তাটা মসৃণ নয়। উচু নিচু। তাই রাস্তার যে অংশ টা উচু নিচু সে অংশ দিয়ে গাড়িটিকে নিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তারপর অবশেষে আমরা তাকে নিয়ে সার্ভিসিং স্টেশন এ চলে গেলাম।
গল্পটা কেমন লাগল? নিশ্চয় অনেক ভাল? হুম এমনে এমনে গল্পটা বলা হয়নাই। নিশ্চয় উদ্দেশ্য আছে। এখন এই ঘটনা থেকে আমি ভোল্টেজ কারেন্ট চিহ্নিত করব।
দেখুন, যে রাস্তা দিয়ে গাড়িটিকে নিয়ে যাওয়া হল সেটা হল পরিবাহী। আর তাতে গাড়ির Movement হল কারেন্ট। আর আমাদের ধাক্কা হল ভোল্টেজ। আর রাস্তার উচু নিচু হওয়াটা রোধ। আর ধাক্কা যত দিচ্ছি গাড়ি তত সরছে। মানে ভোল্টেজ বাড়ছে, সেই সাথে কারেন্ট বাড়ছে। যেটাকে আমরা বলি Ohms law. দেখেন, বাস্তবতার সাথে কি মিল এই প্যারামিটার গুলোর।
অর্থাৎ, কারেন্ট হল পরিবাহীর মধ্যে ইলেকট্রনের প্রবাহ & ভোল্টেজ হল পরিবাহী হতে ইলেক্ট্রনগুলোকে নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ পেরিয়ে বিচ্যুত করতে যে পরিমাণ কাজ সম্পাদন করতে হয়।
অনেকেই ভোল্টেজকে বল বলে আখ্যা দেয়। সেটা একদম ভুল। কারণ, ইলেক্ট্রনকে বল প্রয়োগ করার পর যখন তার সরণ ঘটে। আর বল & সরণ মিলেই হয় কাজ। তাই ভোল্টেজ বল নয় কিন্তু এক প্রকার কাজ। যেটা তোমরা W=VQ এই ইকুয়েশন এও দেখেছেন।
আরেকটি প্রশ্ন অনেকেই করে থাকে যে, ভোল্টেজ কি প্রবাহিত হয় কারেন্টের মত?
আমি বলব না। ভোল্টেজ প্রবাহিত হয়না। কারণ, আগেই বলা হয়েছে ভোল্টেজ এক প্রকার কাজ যা পরিবাহীর ইলেক্ট্রনগুলোকে বিচ্যুত করে। আর কারেন্ট হল ইলেক্ট্রনের প্রবাহ। যেমন মনে করুন, একটি টেবিলকে কেউ ধাক্কা দিয়ে সামনে নিয়ে যাচ্ছে। এখানে বল প্রয়োগ করায় টেবিল টি সামনের দিকে যাচ্ছে। অর্থাৎ তার সরণ ঘটছে। আর ব্যক্তির বল তার উপর একটি নির্দিষ্ট দিকে ক্রিয়া করছে। কিন্তু বলের সরণ হচ্ছেনা। হচ্ছে টেবিল টির।
বিঃদ্রঃ বুঝার সুবিধার্থে লেখক Informal ভাষা ব্যবহার করতে পারেন।