আমাদের দেশের এসি ভোল্টেজ (সিংগেল ফেইজ) ২২০ ভোল্ট কিন্তু পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশে ১২০ / ১১০ ভোল্ট কেন? তাহলে কারা প্রযুক্তিগত দিক থেকে বুদ্ধিমান ও এগিয়ে আছে? চলুন আজকে এই মজাদার আলোচনাটা জমিয়ে তুলি।
প্রত্যেকের মানুষের একটা ধৈর্যের সীমা থাকে। এই সীমা অতিক্রম করলেই সে আক্রমনাত্নক হয়ে উঠবে সেটাই স্বাভাবিক। তাই তার ধৈর্য এর সীমা বুঝে তার সাথে সেইভাবে আচরণ করাটাই হবে বুদ্ধিমান ও ম্যাচিউর পার্সন এর পরিচয়।
একইভাবে বিভিন্ন দেশের ম্যানুফেকচাররা তাদের ডিভাইসগুলো ভোল্ট রেটিং নানাভাবে নির্ধারণ করে থাকে। যেমন আমেরিকার নিজস্ব ব্যবহারের জন্য বেশিরভাগ কোম্পানির প্রস্তুতকৃত ডিভাইস এর রেটিং ১২০ ভোল্ট। তাই ডিভাইস এর সীমা বুঝে সেইভাবে সাপ্লাই দেয়া হয়। নাহলে সীমার বাইরে গেলে সে প্রতিবাদ করতে চাইবে।
এছাড়াও কম ভোল্টেজ এ সাপ্লাই এর একটা সুবিধা হল বিপদের আশংকা কমানো। যেমন
বাংলাদেশের 220 ভোল্ট (rms) এর পিক ভেল্যু হচ্ছে
= 220 x 1.4142 = 311 volt
অর্থাৎ বাংলাদেশের একজন মানুষ শক খাবে 311 volt এ
অন্যদিকে আমেরিকার 120 Volt (rms) এর পিক ভেলু
= 120 x 1.4142 = 169 Volt
অর্থাৎ একজন আমেরিকার মানুষ মূলত শক খাবে 169 Volt এ। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষটির বিপদের আশংকা অনেক বেশি।
অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, পিক ভেলু টাই কি, আবার rms টাই আবার কি জিনিস? আমি পিক ভেলুকেই কেন হিসেবে আনতেছি?
আসলে আমরা শক অনুভূতি লাভ করি পিক ভেলুর জন্য। আর ২২০ ভোল্ট সেটা এসি সাপ্লাই এর পিক ভেলু নয়। আর এম এস ভেলু। এসি সিগনালের পজিটিভ এবং নেগেটিভ অর্ধচক্রকে পিক ভেলু বলে। আর ভোল্টেজের বিভিন্ন মানের বর্গের যোগফলের মূল ই হল তার আর এম এস ভেলু। Peak vaule যদি Vm এবং RMS value যদি Vrms হয় তাহলে,
Vm = 1.4142 x Vrms
তাই কিছু সংখ্যক দেশ কম ভোল্ট সাপ্লাই করে।
এবার তাহলে প্রশ্ন আসাই স্বাভাবিক, ২২০ এ সাপ্লাই করে কি কোন লাভ নেই?
নিশ্চয় আছে। এটাতে একটা প্রধান লাভ হল লস ও অযাচিত তাপমাত্রা কমানো। ভোল্ট তুলনামূলক বেশি বলে কারেন্ট ড্র হবে কম। আর কম কারেন্ট ড্র বলতেই i^2 * R বা লস কম হবে। আর লস কম হওয়া মানেই ডিভাইস এ অযাচিত তাপমাত্রা সৃষ্টি না হওয়া।
সবশেষে বলা যায়, ব্যক্তির নিরাপত্তা, ডিভাইস রেটিং, সিস্টেম লস এর কথা বিবেচনায় রেখেই সাপ্লাই ভোল্ট নির্ধারিত হয়।