ইতোমধ্যেই আপনাদের সাথে ইন্সুলেটরের ট্যান ডেল্টা টেস্ট নিয়ে আলচনা করেছি। আজ আরো একটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম যেটি হল ইন্সুলেটরের ফ্লাশ ওভার টেস্ট। চলুন শুরু করা যাক।
ফ্লাশ ওভার টেস্ট কি?
ওভারহেড লাইনের ইন্সুলেটরসমূহের সঠিকতা, দৃঢ়তা, কার্যকারিতা, ডাই-ইলেকট্রিক শক্তি এবং টেনসাইল শক্তি ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হবার জন্য যে টেস্ট করা হয়, তাকে ফ্লাশ ওভার টেস্ট বলে।
ফ্লাশ ওভার টেস্টের প্রকারভেদ
ফ্লাশ ওভার টেস্ট সাধারণত চার ধরনের। যথাঃ
- ৫০ সাইকেল ড্রাই (শুষ্ক) ফ্লাশ ওভার টেস্ট
- ৫০ সাইকেল ৩০ সেকেন্ডের জন্য সিক্ত টেস্ট
- ৫০ সাইকেল ফ্লাশ ওভার টেস্ট
- ইম্পালস ফ্রিকুয়েন্সি ফ্লাশ ওভার টেস্ট
ফ্লাশ ওভার টেস্টিং কিভাবে করা হয়?
৫০ সাইকেল ড্রাই (শুষ্ক) ফ্লাশ ওভার টেস্টিং
- এই টেস্ট করার সময় ইন্সুলেটরের ইলেকট্রোডদুটোর মধ্যে স্বাভাবিক ভোল্টেজ প্রয়োগ করে ধীরে ধীরে ইন্সুলেটরের রেটিং-এ উল্লেখিত নূন্যতম ভোল্টেজ সীমার চেয়ে বেশি ভোল্টেজ প্রয়োগ করা হয়।
- এই সীমার ভোল্টেজ এক মিনিটকাল বজায় রেখে ইন্সুলেটরের সহ্যক্ষমতা দেখা হয়।
৫০ সাইকেল ৩০ সেকেন্ডের জন্য সিক্ত টেস্ট
- এক্ষেত্রেও অনুরুপভাবে ভোল্টেজ বৃদ্ধি করা হয়।
- তবে এক্ষেত্রে ইন্সুলেটরের চতুর্দিকে ৪৫ ডিগ্রী কোণে পানি ছিটানো হয়।
- এ অবস্থায় ইন্সুলেটরের অন্তত ৩০ সেকেন্ড সর্বনিম্ন স্ট্যান্ডার্ড ভোল্টেজ সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হয়।
৫০ সাইকেল ফ্লাশ ওভার টেস্টিং
- এ পরীক্ষা পদ্ধতি ২ নং পদ্ধতির অনুরুপ।
- শুধু চতুর্দিকের বাতাস আয়োনাইজড হয়ে কত ভোল্টেজে ফ্লাশ ওভার সংঘটিত হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
- এই ফ্লাশ ওভার ভোল্টেজ ইন্সুলেটরে সর্বনিম্ন ভোল্টেজের অবশ্যই সমান হতে হবে।
ইম্পালস ফ্রিকুয়েন্সি ফ্লাশ ওভার টেস্টিং
- বজ্রপাতজনিত কারণে যে ওভার ভোল্টেজ হয় তা সহ্য করার ক্ষমতাসম্পন্ন কিনা তা যাচাই করার জন্য ফ্লাশ ওভার টেস্ট করা হয়।
- এখন প্রশ্ন আসবে, বজ্রপাতের সমমানের ভোল্টেজ কিভাবে তৈরি করা হবে? নাকি এই পরীক্ষা বৃষ্টির সময় হবে?
- সাধারণত হাই ভোল্টেজ জেনারেটরের মাধ্যমে বজ্রপাতের সমান ভোল্টেজ তৈরি করা হয় এবং স্পার্ক ভোল্টেজ নোট করে রাখা হয়।
- ইম্পালস রেশিও = ইম্পালস স্পার্ক ওভার ভোল্টেজ/৫০ সাইকেল স্পার্ক ওভার ভোল্টেজ
- পিন টাইপ ইন্সুলেটরের জন্য এই রেশিও 1.4 এবং সাসপেনশন টাইপ ইন্সুলেটরের জন্য এই রেশিও 1.3 হওয়া বাঞ্ছনীয়।
ট্রান্সফরমার, টাওয়ার বডির সুরক্ষার জন্য ইন্সুলেটরের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তবে একজন মানুষ যেমন বৃদ্ধ হবার সাথে সাথে যেমন তার শক্তি-সামর্থ্য, ধৈর্য শক্তি কমতে থাকে তেমনি ইন্সুলেটরেরও সহ্য ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে আসে। তাই এক্ষেত্রে ফ্লাশ ওভার টেস্ট খুব জরুরি ভূমিকা রাখে।
আরো কিছু পোস্ট