মহাকাশে মৃত্যু হলে লাশের কি হবে? | মহাকাশ রহস্য

মহাকাশ নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্নের কোন কমতি নেই। এই নামটি শুনলেই যেন আমাদের চোখে ভেসে বেড়ায় গ্রহ, নক্ষত্রের মেলা। এই মহাকাশ প্রচুর রহস্যমন্ডিত। এই রহস্য উদঘাটন করতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বিভিন্ন প্রজেক্ট হাতে নিচ্ছে। এই প্রজেক্ট সফল করতে গিয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে অনেক নভোচারীদের। আর এখান থেকেই একটা প্রশ্ন মাথায় চলে আসে যে, মহাকাশে যদি কোন নভোচারীর মৃত্যু হয় তাহলে তার লাশের কি অবস্থা হবে? প্রশ্নটি হয়ত অনেকদিন ধরে অনেকেরই মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আশা করি আজ আপনার কাঙ্ক্ষিত উত্তর পেয়ে যাবেন।

মহাকাশ বলতে কি বুঝায়?

বায়ুমন্ডল থেকে অসীম পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশকে মহাকাশ বলে। মহাকাশের শেষ সীমানা নির্ধারণ করা যায়না। আর এ কারণেই মূলত অসীম শব্দটি ব্যবহার করা হল। এবার মূল প্রশ্নে ফিরা যাওয়া যাক।

মহাকাশে মৃত্যু হলে লাশের কি হবে?

ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, ”Man is mortal”। তার অর্থ হল মানুষ মরণশীল। বাকি সবাই থেকে পালিয়ে বাঁচলেও মৃত্যু থেকে পালিয়ে বাঁচতে পারবেন না। তবে কবে কোথায় কার মৃত্যু হবে এটা আগে থেকে বলা যায়না। পৃথিবীতে কেউ মারা গেলে তার লাশের পচন ঘটে। এখন মূল্যবান প্রশ্ন হলো মহাকাশে কোন নভোচারীর মৃত্যু হলে তার লাশে কি পচন ধরবে নাকি অক্ষত থাকবে?

মহাকাশ পুরোপুরি ফাঁকা নয়। মহাকাশে এমন অনেক কিছু আছে যা মানুষের কল্পনারও বাইরে। প্রধানত, অতি অল্প পরিমাণ হাইড্রোজেন প্লাজমা, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন, ম্যাগনেটিক ফিল্ড এবং নিউট্রিনো এই শূন্যে অবস্থান করে। তাত্ত্বিকভাবে, এতে কৃষ্ণবস্তু এবং কৃষ্ণশক্তি বিদ্যমান। তাই পৃথিবীর মত মহাকাশে মৃতদেহ পচে না। কেননা দেহের পচন ঘটাতে যেসব ব্যাকটেরিয়া বা মাইক্রো-কনজিউমার সাহায্য করে মহাকাশের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন, বাতাস না থাকার কারণে সেসব ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। তাহলে লাশটি কি অক্ষত থাকবে? জি, বলতে গেলে অনেকটা মমির মত। আপনারা মিশরের পিরামিডের মমির কথা শুনেছেন নিশ্চয়ই?

কিভাবে লাশটি মমিতে পরিণত হবে?

ইতালির পম্পেইতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি মনে আছে আপনাদের? আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ধ্বংস হওয়া নগরীতে যেসব লাশ উদ্ধার হয়েছিল তারা অনেকটা মমিতে রুপান্তরিত হয়ে গিয়েছিল। তেমনিভাবে লাশটা যদি পৃথিবীর কক্ষপথের সাথে চলতে থাকে তবে তা কম চাপের কারণে সিদ্ধ হয়ে মমিতে পরিণত হবে। যদি লাশটি পৃথিবীর কক্ষপথের সাথে না চলে তখন কি হবে?

যদি লাশটা পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে সৌরজগতের বাইরের দিকে থাকে তাহলে কি ঘটবে?

ধরলাম, লাশটা পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে সৌরজগতের বাইরের দিকে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর এই অংশে তাপমাত্রা হিমাংকের নীচে মানে মাইনাস তাপমাত্রায় থাকে। এই পরিস্থিতিতে লাশটা জমে শক্ত হয়ে যাবে। এখন প্রশ্ন হতে পারে, মহাকাশ ত বায়ুশূন্য। তাহলে তাপের পরিবহন ত ধীরে হবে। সেক্ষেত্রে লাশের জমাট বাঁধতে কেমন সময় লাগতে পারে?

যেহেতু বায়ুশূন্যতায় তাপের পরিবহনও দ্রুত হয়না তাই এরকম হতে কয়েকদিন এমনকি কয়েক সপ্তাহও লেগে যেতে পারে। মাউন্ট এভারেস্ট বা আল্পস পর্বতমালার হিমবাহের মাঝে লাশ যেমন বছরের পর বছর ভাল থাকে, তেমনি মহাকাশেও লাশটা কয়েক মিলিয়ন বছর পরেও চেনা যাবে যতক্ষণ না এটা কোন জ্যোতিষ্কে পতিত হচ্ছে।

আরো কিছু আর্টিকেল

পার্কার সোলার প্রোব কি? সূর্যের নিকট থেকে তোলা ছবি কেমন?

মরুভূমিতে সোলার প্যানেল স্থাপন এবং সীমাবদ্ধতা

রাডার কি এর ব্যবহার ও কার্যপ্রনালী সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়ুন