কয়েকমাস ধরেই রবিনদের খুব চওড়া বিদ্যুৎ বিল গুণতে হচ্ছে। রবিনের দাদী ত বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনদের গালমন্দ দিয়ে চৌদ্দগুষ্টিকে অপদস্ত করেই ছাড়ল। তারপর রবিনের চাচা রবিনের বাবাকে পরামর্শ দিল জিরো ওয়াটের বাল্ব কিনে আনতে। তাহলে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে। সাইন্সের ছাত্র হবার দরুণ জিরো ওয়াট বাল্বের ব্যাপারটি রবিনকে বেশ নাড়া দিল। সে ভাবতে লাগল বাতির ওয়াট কিভাবে জিরো হয়? জিরো হলে বিদ্যুৎ প্রবাহই ত হবার কথা নয়। আসলে প্রকৃত বাস্তবতা কি বলে? চলুন জেনে আসা যাক।
জিরো ওয়াট বাল্ব এবং কারিগরি বাস্তবতা
আমাদের অনেকের ধারণা জিরো ওয়াটের বাল্ব ব্যবহার করলেই বাড়তি বিদ্যুৎ বিল থেকে মুক্তি মিলে। তার মানে বাতিটির কি কোন পাওয়ার নেই? না থাকলে তাতে ভোল্টেজ এবং বিদ্যুৎ প্রবাহ আসছে কিভাবে? কিভাবেই বা আলো দিচ্ছে? সত্যটা হল বাজারে জিরো ওয়াটের বাতি বলে যেসব বাতি বিক্রি হচ্ছে এগুলো মূলত ১৫ ওয়াটের বাতি। ব্যবসায়িক মুনাফা বা মার্কেটিং পলিসির দরুণ তারা এই জিরো ওয়াটের কথা বলে বেড়ায়। কারণ টেকনিক্যালি বাতির জিরো ওয়াট অসম্ভব ব্যাপার। কারণ আমরা জানি,
P = VI
এখানে পাওয়ার যদি শূণ্য হয় তাহলে ভোল্টেজ অথবা কারেন্ট যেকোন একটি প্যারামিটারকে শূন্য হতে হবে যা বাস্তবে অসম্ভব। কারণ ভোল্টেজ আছে কারেন্ট নেই কিংবা কারেন্ট আছে ভোল্টেজ নেই এমন ডিভাইস তৈরি করা অসম্ভব।
বিলের হিসেব
এই ১৫ ওয়াটের বাতিটি যদি একদিন জ্বালানো হয়, তাহলে বিদ্যুৎ খরচ হবে,
W = Pt
বা, W = 15 x 24/1000 kWh = 0.36 kWh = 0.36 unit
অর্থাৎ, বাতিটি টানা একদিন জ্বালিয়ে রাখলেও আপনার হাফ ইউনিট বিদ্যুৎ ও খরচও হবেনা। তার মানে বিল গুণতে হচ্ছে দুই এক টাকা। সেই অর্থে হাইপোথিটিক্যালি বাতিটির পাওয়ার জিরো ভাবা হয় যদিও টেকনিক্যালি এ কথার কোন ভিত্তি নেই।
রবিনকে এই বিজনেস পলিসিটি খুব আকৃষ্ট করল এবং সে এই রকম বিজনেসে আগ্রহ প্রকাশ করল। আপনাদের আশে পাশে অনেকেই আছে যারা এই ভূল ধারণা বহন করে। কারিগরি বিভাগের ছাত্র হিসেবে আমাদের উচিত তাদের ভূল ভেঙ্গে দেয়া। এরকম আরো ইউনিক আর্টিকেল পেতে ভোল্টেজ ল্যাব ফ্যামিলির সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
আরো কিছু আর্টিকেল
নেগেটিভ এসি ভোল্টেজে বৈদ্যুতিক বাতি কি জ্বলবে?
বৈদ্যুতিক বাতিতে ২২০ ভোল্ট এসির পরিবর্তে ২২০ ভোল্ট ডিসি দিলে কি ঘটবে?
ট্রান্সমিশন লাইনে এসিএসআর / ACSR তার বহুলভাবে ব্যবহৃত হয় কেন? | কপার বেচারা কি দোষ করল?