পিএলসি ল্যাডার ডায়াগ্রাম ইনস্ট্রাকশন পরিচিতি । PLC Bangla Tutorial – 3

PLC bangla tutorial – ৩য় পর্বে আপনাদের সকলকে স্বাগতম। পিএলসি নিয়ে যাদের হাতে খড়ি হয়েছে তাদের অধিকাংশ শুরু করেছেন সিমেন্স লোগো পিএলসি দিয়ে। এই সিমেন্স লোগো পিএলসির একটি সফটওয়্যার যার নাম হলো LOGO! Soft Comfort.

PLC Bangla Tutorial-1 পড়ুন । PLC (পি এল সি) সম্বন্ধে বিস্তারিত সহজ ভাষায় আলোচনা  

PLC Bangla Tutorial-2  পড়ুন । পিএলসি সুবিধা-অসুবিধা, ডায়াগ্রাম, বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজ 

PLC Bangla Tutorial – 4 পড়ুন  ।  LOGO! Soft ইন্টারফেস, প্রোগ্রাম আপ্লোড-ডাউনলোড

PLC Bangla Tutorial – 5 পড়ুন ।  AND, OR, NOT লজিক এর সাহায্যে Ladder প্রোগ্রাম

ল্যাডার লজিক সিম্বল সূচিঃ 

  1. নরমালি ওপেন / মেক কন্টাক্ট
  2. নরমালি ক্লোজ / ব্রেক কন্টাক্ট  
  3. টাইমার
  4. কাউন্টার
  5. রিলে কয়েল
  6. শিফট রেজিস্টর
  7. এনালগ কম্পারেটর 

এখন প্রশ্ন হতে পারে বেশিরভাগ মানুষের কেন সিমেন্স লোগো পিএলসি দিয়ে হাতি খড়ি হয়! এর মূল কারন সিমেন্স লোগো পি এল সির দাম কম, সহজলভ্য ও সফটওয়্যার ইন্টারফেস অনেক ভালো।

ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি যে পিএলসির অনেকগুলো প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ রয়েছে। আমরা এতগুলো ল্যাঙ্গুয়েজ না শিখে মূলত PLC ল্যাডার লজিক দিয়ে শুরু করবো। আপনাদের অনেক আগ্রহ থাকলে আমরা অন্যান্য ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়েও ভবিষ্যতে লেখার চেষ্টা করবো।

একটা বিষয় জেনে রাখা খুব জরুরী, PLC বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ড অনুযায়ী সফটওয়্যারের ইন্টারফেস ও ইনস্ট্রাকশনের সিম্বল ভিন্ন রকম হয় এছাড়া ইনস্ট্রাকশনের নামও ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে যেকোন একটি সফটওয়্যার দিয়ে ল্যাডার ডায়াগ্রাম ল্যাংগুয়েজে এক্সপার্ট হতে পারলে বাকিগুলো খুব সহজ হয়ে যায়।

PLC Ladder Logic symbol

নরমালি ওপেন কন্টাক্টঃ

এই কন্টাক্ট ০(বন্ধ) এবং ১(চালু) কন্ডিশনে কাজ করে থাকে। নরমালি ওপেন অর্থাৎ স্বাভাবিক অবস্থায় এটি খোলা (০) থাকবে মানে কন্টাক্ট থাকবে না। এই কন্টাক্টটি অন সুইচ হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ সুইচ পুশ করলে ১(চালু) হবে এবং ছেড়ে দিলে ০ (বন্ধ) হবে।

নরমালি ক্লোজ কন্টাক্ট 

এই কন্টাক্ট ০(বন্ধ) এবং ১(চালু) কন্ডিশনে কাজ করে থাকে। নরমালি ক্লোজ অর্থাৎ স্বাভাবিক অবস্থায় এটি বন্ধ (১) থাকে মানে কন্টাক্ট পেয়ে থাকবে। এই কন্টাক্টটি অফ সুইচ হিসেবে কাজ করে থাকে অর্থাৎ সুইচ পুশ করলে ০(বন্ধ) হবে এবং ছেড়ে দিলে ১ (চালু) হবে।

টাইমার

অন ডিলে ও অফ ডিলে

অন ডিলে টাইমার       ।      অফ ডিলে টাইমার
অন ডিলে টাইমার

বাম পাশের টাইমার টি হলো অন ডিলে টাইমার এর সিম্বল। অন ডিলে টাইমার হলো এমন একটা টাইমার যা আপনি যে নির্দিষ্ট সময় সেট করে দিবেন সেই নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর টাইমার অন হবে (অর্থাৎ ০ থেকে ১ হবে )।

অন ডিলে টাইমার আবার দুইপ্রকার

ক) NOTC (Normally Open Timed Close): এটা নরমালি ওপেন থাকে , একটা নির্দিষ্ট সময় পর অন হয় বা ক্লোজ হয় ।

খ) NCTO (Normally closed, Timed open): এটা নরমালি ক্লোজ থাকে , একটা নির্দিষ্ট সময় পর অন হয় বা ওপেন হয়।

উদাহরণ স্বরুপ বলা যেতে পারে আপনি একটি মটর অন করবেন কিন্তু মটর টি অন হবে সুইচ অন করার ৫ সেকেন্ড পর।

ক) NOTC (Normally Open Timed Close)

এটা নরমালি ওপেন থাকে, একটা নির্দিষ্ট সময় পর অন হয় বা ক্লোজ হয়। নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন।

দেখুন টাইমার টি অন হওয়ার পর ৫ সেকেন্ড পর কনট্যাক্ট ক্লোজ হয়েছে , অর্থাৎ মটর টি বা যেটাতে কানেকশন দেয়া আছে সেটি ৫ সেকেন্ড পর অন হবে।

খ) NCTO (Normally closed, Timed open)

এটা নরমালি ক্লোজ থাকে, একটা নির্দিষ্ট সময় পর অন হয় বা ওপেন হয়। আবার আপনি যদি এমনটি করতে চান যেন টাইমার অন হওয়ার ৫ সেকেন্ড পর মটর অফ করবেন তাহলে শুধু NCTO ব্যবহার করলেই হয়ে যাবে। নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন

অফ ডিলে টাইমার

এটা জাস্ট অন ডিলে টাইমারের অপোজিট। অফ ডিলে টাইমার আবার দুইপ্রকারঃ
ক) NOTO (Normally Open, Timed Open): এটা নরমালি ওপেন থাকে, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওপেন থাকে।

খ) NCTO (Normally closed, Timed Closed): এটা নরমালি ক্লোজ থাকে, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ক্লোজ থাকে।

ক) NOTO (Normally Open, Timed Open)

দেখুন কয়েল পাওয়ার অফ হওয়ার ও ৫ সেকেন্ড পর কনট্যাক্ট ওপেন হয়েছে অর্থাৎ যতক্ষণ টাইম সেট করে দিবো ততক্ষণ পর্যন্ত কনট্যাক্ট ক্লোজ থাকবে NOTO তে।

খ) NCTO (Normally closed, Timed Closed)

এই ধরণের কনট্যাক্ট নরমালি ক্লোজ থাকবে যখন কয়েল আনপাওয়ার্ড থাকবে। কয়েল এনার্জাইজড হওয়ার সাথে সাথেই কনট্যাক্ট ওপেন হবে কিন্তু কয়েল ডিএনার্জাইজড হওয়ার পর আপনি যতক্ষণ সময় সেট করবেন ততক্ষণ পর ক্লোজ হবে। যদিও অফ ডিলে টাইমার এর ব্যবহার অন ডিলে টাইমারের চেয়ে অনেক কম।

অন-অফ ডিলে টাইমার

অন অফ ডিলে টাইমার এর সিম্বল এটা। এটাও মূলত একধরণের টাইমার যেখানে একটা টাইমার দিয়েই আপনি অন ডিলে আর অফ ডিলে টাইমার ব্যবহার করতে পারেন।

ধরা যাক আপনি টাইমার দিয়ে একটি কয়েল অন করাতে চাচ্ছেন, আবার অফ ও করাতে চাচ্ছেন এবং টাইম সেট করে দিলেন অন টাইম ৫ সেকেন্ড এবং অফ টাইম ৭ সেকেন্ড। সেক্ষেত্রে টাইমার অন করার ৫ সেকেন্ড পর কয়েল অন হবে এবং টাইমার অফ করার ও ৭ সেকেন্ড পর কয়েল অফ হবে।

রিটেনটিভ অন ডিলে টাইমার

রিটেনটিভ অন ডিলে টাইমার এর ক্ষেত্রে দুইটি ইনপুট আছে। আপনি একটি ইনপুট বা ট্রিগার দিয়ে শুধু টাইমার অন করাতে পারবেন এরপর আপনি যতবার ট্রিগারে ভোল্টেজ দেন না কেন টাইমার অন থাকবে। টাইমার অফ করার জন্য রিসেট নামক আর একটা ইনপুট আছে। এটাতে ০ থেকে ১ হলেই অর্থাৎ ভোল্টেজ দিলেই টাইমার অফ হয়ে যাবে।

উইপিং রিলে টাইমার

এটা আর এক ধরণের মজার টাইমার যেখানে আপনি যতক্ষণ টাইমারে টাইম সেট করে দিবেন ততক্ষণই টাইমার অন থাকবে। ধরুণ আপনি টাইমার ১০ সেকেন্ড সেট করলেন এখন টাইমার এর ইনপুট আপনি যখন অন করলেন বা ০ থেকে ১ করলেন সাথে সাথেই আউটপুট ১ হবে কিন্তু ১০ সেকেন্ড পর আবার ০ হয়ে যাবে। অর্থাৎ যতক্ষণ টাইম সেট করা থাকবে ততক্ষণই টাইমার অন থাকবে।

উইকলি টাইমার

এটা দিয়ে সপ্তাহের যে কোনো দিন যতক্ষণ ইচ্ছা টাইমার অন এবং যতক্ষণ ইচ্ছা টাইমার অফ রাখতে পারবেন।

ইয়ারলি টাইমার

এই ধরণের টাইমারে একটি অন আর অফ ডেট থাকে। আপনি নির্দিষ্ট বছর, নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে টাইমার অন করতে পারবেন আবার আপনার পছন্দের সময়ে টাইমার অফ করতে পারবেন। সিমেন্স এর লোগো পি.এল.সি তে জানুয়ারি ১, ২০০০ সাল থেকে ডিসেম্বর ৩১, ২০৯৯ পর্যন্ত সিলেক্ট করতে পারবেন। আমাদের সাধারনত সবচেয়ে বেশি লাগে ১ আর ২ নাম্বার টাইমার। মোটামুটি এই সব টাইমার দিয়ে পি.এল.সির প্রোগ্রাম করা হয়ে থাকে।

কাউন্টার 

কাউন্টার শব্দের বাংলা অর্থ গণনা করা। এটা কম থেকে বেশি বা বেশি থেকে কমে গণনা করতে পারে। অর্থাৎ এর ভিতরে আমরা যে ভ্যালুটি দিব সেই ভ্যালুটি এটা শূন্য থেকে কাউন্ট করবে এবং ঐ ভ্যালু তে রিচ করা মাত্র এটি ১ কন্ডিশনে যাবে।

রিলে কয়েল

রিলে কয়েলটি মূলত আউটপুট হিসেবে ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ এটি PLC আউটপুট।  লজিক কন্ডিশন অনুযায়ী এটি আউটপুট দেখাবে।

শিফট রেজিস্টর

শিফট রেজিস্টর এমন একটি রেজিস্টর যা সাধারণত ইনপুটকে ভ্যালুকে রিড করে এবং বিট কে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে শিফট করে দেয়।

এনালগ কম্পারেটর 

Comparator একটি ইংরেজি শব্দ যার বাংলা অর্থ হচ্ছে তুলনা করা। এটি ঠিক তুলনার কাজ করে থাকে অর্থাৎ >, <, =, ইত্যাদি টাইপের তুলনার কাজ করার জন্য এনালগ কম্পারেটর ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এছাড়া PLC তে আরো অনেক ধরনের ইনস্ট্রাকশন রয়েছে যা আমরা ধীরে ধীরে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করবো। আজ এই পর্যন্ত বন্ধু। ভালো খারাপ বা আপনার অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন কিংবা সাজেশন দিতে পারেন।

PLC Bangla Tutorial-1 পড়ুন । PLC (পি এল সি) সম্বন্ধে বিস্তারিত সহজ ভাষায় আলোচনা  

PLC Bangla Tutorial-2  পড়ুন । পিএলসি সুবিধা-অসুবিধা, ডায়াগ্রাম, বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজ 

PLC Bangla Tutorial – 4 পড়ুন  ।  LOGO! Soft ইন্টারফেস, প্রোগ্রাম আপ্লোড-ডাউনলোড

PLC Bangla Tutorial – 5 পড়ুন ।  AND, OR, NOT লজিক এর সাহায্যে Ladder প্রোগ্রাম