আমরা জানি যে ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে হাই ভোল্টেজ পরিমাপ করা খুব সহজ নয়। হাই ভোল্টেজ পরিমাপ করার জন্য ইনস্ট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার ( পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার ) ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের কারেন্ট পরিমাপ করার জন্য কারেন্ট ট্রান্সফরমার, ভোল্টেজ পরিমাপ করার জন্য পটেনশিয়াল বা ভোল্টেজ ট্রান্সফরমার ব্যবহার করা হয়। আমরা কারেন্ট ট্রান্সফরমার নিয়ে বিস্তারিত জেনেছি। আজ আমরা জানবো পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার সম্বন্ধে।
“পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার কে ভোল্টেজ ট্রান্সফরমারও বলা হয়ে থাকে। এটি এমন একটি ট্রান্সফরমার যা দিয়ে অধিক পরিমানের ভোল্টেজকে কমিয়ে কম রেঞ্জে রূপান্তর করা হয়। এটি কম রেঞ্জের মিটার দিয়ে সার্কিটের বেশি পরিমান ভোল্টেজ পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়”
আমরা জানি ভোল্টেজ পরিমাপ করার জন্য মিটারকে লোডের সহিত প্যারালালে সংযোগ করতে হয়। পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার এর বেসিক প্রিন্সিপাল এবং কার্যপদ্ধতি অনেকটা স্টান্ডার্ড পাওয়ার ট্রান্সফরমারের মতই। পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার কে সংক্ষিপ্ত পিটিও বলা হয়ে থাকে।
পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমারের ফাংশন ও কার্যপ্রনালীঃ
উপরের চিত্র হতে, প্রাইমারি সাইড মূলত হাই ভোল্টেজ সাইড ও সেকেন্ডারি সাইড লো ভোল্টেজ সাইড। পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার এর প্রাইমারি উইন্ডিং এর প্যাঁচ সংখ্যা সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর চেয়ে বেশি থাকে যা চিত্র লক্ষ করলে বুঝা যাবে। সুতারাং এটি একটি স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার। সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর সাথে একটি ভোল্টমিটার যুক্ত আছে যার সাহায্যে ভোল্টেজ পরিমাপ করতে পারবো।
পিটির সেকেন্ডারি ভোল্টেজ সাধারনত ১১০ ভোল্ট এর ডিজাইন করা হয়ে থাকে। যেহেতু পিটির ভোল্টমিটার এবং অন্যান্য মিটারের পটেনশিয়াল কয়েলে হাই ইম্পিড্যান্স থাকে, তাই পিটির সেকেন্ডারিতে অল্প পরিমানে কারেন্ট ফ্লো হবে। একারনে পিটি আচরণ করে নো লোড অবস্থায় Two winding ট্রান্সফরমারের মত। পিটিতে কম লোড থাকার কারনে পিটির VA রেটিং খুবই কম। সেকেন্ডারি সাইডে নিরাপত্তা সুবিধার্থে একটি প্রান্তের সাথে গ্রাউন্ড করে দেওয়া হয়েছে।
সাধারন ট্রান্সফরমারের মত পিটির ট্রান্সফরমেশন রেশিও,
V1 / V2 = N1 / N2
উপরের ইকুয়েশন থেকে যদি ভোল্টমিটারের পাঠ এবং ট্রান্সফরমেশন রেশিও জানা যায় তাহলে হাই ভোল্টেজ সাইড পরিমাপ করা যাবে।
তবে আইডিয়াল ভোল্টেজ ট্রান্সফরমারের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি ঠিক। কিন্তু প্রকৃত পিটির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ঠিক নয়। কারন পিটির প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি উইন্ডিং এ ভোল্টেজ ড্রপ হয়ে থাকে। এটা সাধারনত পাওয়ার ফ্যাক্টর, রেজিস্ট্যান্স এর কারনে হয়ে থাকে। একারনে পিটির রেশিও এবং ফেজ এংগেল এরর দেখা যায়।
পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার এররঃ
Is – Secondary current.
Es – Secondary induced emf.
Vs – Secondary terminal voltage.
Rs – Secondary winding resistance.
Xs – Secondary winding reactance.
Ip – Primary current.
Ep – Primary induced emf.
Vp – Primary terminal voltage.
Rp – Primary winding resistance.
Xp – Primary winding reactance.
KT – Turns ratio = Numbers of primary turns/number of secondary turns.
I0 – Excitation current.
Im – Magnetizing component of I0.
Iw – Core loss component of I0.
Φm – Main flux.
β – Phase angle error.
কারেন্ট ট্রান্সফরমারের ক্ষেত্রে, প্রাইমারি কারেন্ট Ip হলো এক্সাইটেশন কারেন্টের ভেক্টর যোগফল এবং এই কারেন্ট সেকেন্ডারি কারেন্টের বিপরীতমুখি সমান যা 1/Kt রেশিও গুনিতক।
তাহলে, Ip = ( Io + Is ) / Kt
যদি পিটির প্রাইমারিতে Vp সিস্টেম ভোল্টেজ সাপ্লাই দেওয়া হয় তাহলে প্রাইমারি উইন্ডিং এ রেজিস্ট্যান্স ও রিয়াক্ট্যান্স এর কারনে ভোল্টেজ ড্রপ হবে যেখানে প্রাইমারি কারেন্ট Ip ও আসবে। এই ভোল্টেজ ড্রপ Vp কে বাদ দেবার পর Ep পাওয়া যাবে। এই Ep প্রাইমারি ইনডিউসড ই,এম,এফ এর সমান।
এই প্রাইমারি ই,এম,এফ সেকেন্ডারি উইন্ডিং এ মিউচুয়াল ইন্ডাকশন এর সাহায্যে রুপান্তর হবে। আবারও এই Es ভোল্টেজ সেকেন্ডারি উইন্ডিং এ রেজিস্ট্যান্স এবং রিয়াক্ট্যান্স থাকার কারনে ভোল্টেজ ড্রপ হবে। ফলে একে Burden terminal এ পাওয়া যাবে যাকে Vs দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
Burden সম্বন্ধে না জেনে থাকলে লেখার একদম নিচে লক্ষ করুন
আদর্শ ভাবে চিন্তা করলে, যদি সিস্টেম ভোল্টেজ Vp হয় তাহলে পিটির সেকেন্ডারি ভোল্টেজ হবেঃ Vp / Kt, কিন্তু বাস্তবিক ভাবে পিটির প্রকৃত সেকেন্ডারি ভোল্টেজ Vs
তাহলে আইডিয়াল ভ্যালু Vp / Kt এবং প্রকৃত ভ্যালু Vs এর মাঝে পার্থক্য হলো ভোল্টেজ ইরর অথবা রেশিও ইরর। এটাকে প্রকাশ করা হয়ে থাকে নিচের ইকুয়েশন দ্বারাঃ
পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার এর প্রয়োগঃ
- ইলেকট্রিক মিটারিং সিস্টেমে
- ইলেকট্রিক প্রোটেকশন সিস্টেমে
- গ্রিডের সাথে সিনক্রোনাইজিং জেনারেটরে।
- জেনারেটরের ইম্পিড্যান্স প্রোটেকশনে।
পিটির Burden: Burden মূলত এপারেন্ট পাওয়ারকে নির্দেশ করে থাকে যা পটেনশিয়াল ট্রান্সফমারের সাথে সম্পর্কযুক্ত। ট্রান্সফরমারের Burden রেটিং এপারেন্ট পাওয়ারের সর্বোচ্চ মান প্রদান করে যেটা ট্রান্সফরমার সাধারনত নির্দিষ্ট কিছু কন্ডিশনে করে থাকে। প্রকৃত Burden হলো প্রকৃত এপারেন্ট পাওয়ারের মান যা ট্রান্সফরমারের আউটপুট লোড দিয়ে থাকে।