কিভাবে রাডারকে ফাঁকি দেয়া যায়? | রাডার ফাঁকি দেয়ার প্রযুক্তি

0
858

রাডার সিস্টেম সম্পর্কে আমরা কম-বেশি সকলেরই ধারণা আছে। রাডার সিস্টেম নিয়ে যদি আপনি আরো অধিকতর ধারণা লাভ করতে চান তাহলে আমাদের রাডার সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন। তাহলেই আজকের আর্টিকেলটি আপনার বোধগম্য হবে এবং বেশ উপভোগ করবেন বলে আশা রাখি। কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।

রাডার মূলত কিভাবে কাজ করে?

রাডার সিস্টেমে একটি আইসোট্রপিক এন্টেনা ৩৬০ ডিগ্রী কোণে চারদিকে ঘুরে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পালস রেডিয়েট করতে থাকে এবং টার্গেট (যুদ্ধ জাহাজ, যাত্রীবাহী জাহাজ) কে স্ক্যানিং করতে থাকে। রেডিয়েট করা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পালস যখন টার্গেটের সারফেসে পতিত হবার পর প্রতিফলিত হয়ে এন্টেনায় ফিরে আসে, তখন সেই প্রতিফলিত পালস থেকেই মূলত টার্গেটের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। অনেকটা বাদুড়ের পথ চলার ন্যায়। বাদুড়ও কিন্তু আলট্রাসনিক ফ্রিকুয়েন্সি সিগন্যাল প্রেরণের মাধ্যমেই পথের বাধা সম্পর্কে ধারণা নিয়েই পথ চলতে পারে।

কিন্তু কেমন হবে যদি এন্টেনা টার্গেটের অবস্থান চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়? মনে করুন, আপনি শত্রুপক্ষের বিমানের প্রকৌশলী। তারা আপনাকে এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে বলল যেন অপরপক্ষ আপনাদের যুদ্ধবিমানকে ট্রেস করতে ব্যর্থ হয়। এখন এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হলে আপনাকে আগে বুঝতে হবে রাডার কিভাবে একটি টার্গেটের অবস্থান চিহ্নিত করে থাকে? আর ইতোমধ্যেই আমরা সেটা জেনে ফেলেছি।

কিভাবে রাডারকে ফাঁকি দেয়া যায়?

রাডারকে ফাঁকি দিতে হলে এমন কায়দা আবিষ্কার করতে হবে যেন রাডারের প্রেরিত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পালস রাডারে ফিরে না আসে। আর এই প্রক্রিয়াটি সফল হবার জন্য কয়েকটি উপায় অবলম্বন করা যায়। সেগুলো নিম্নরুপঃ

স্টিলথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে

স্টিলথ প্রযুক্তি হল এমন যুদ্ধজাহাজ নির্মাণকালীন প্রযুক্তি। পুরানো দিনের যুদ্ধজাহাজগুলো রাউন্ড সারফেসের হয়ে থাকে। যার কারণে শত্রুপক্ষের এন্টেনার সিগন্যাল সেখানে পতিত হবার পর খুব সহজেই প্রতিফলিত হয়ে রাডার সিস্টেমে পৌঁছে যেতে পারত। কিন্তু স্টিলথ প্রযুক্তিতে যুদ্ধবিমানগুলোর সারফেস হল প্লেইন এবং শার্প। যার দরুণ রেডিও সিগন্যাল প্রতিফলিত না হয়ে বরং বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে যুদ্ধবিমানকে ট্রেস করা যায়না।

এলুমিনিয়াম বা টাইটেনিয়ামের রাফ সারফেস ব্যবহার করে

আপনাদের নিশ্চয়ই খেয়াল আছে জাহাজ এবং উড়োজাহাজে কিভাবে আর্থিং করা হয়? এই আর্টিকেলে আমি বলেছিলাম যে, উড়োজাহাজের এক ধরনের এলুমিনিয়াম সারফেস থাকে যা যেকোন রেডিও বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পালসকে শোষণ করে নিতে পারে। একইভাবে যুদ্ধবিমানে এলুমিনিয়াম বা টাইটেনিয়ামের রাফ সারফেস ব্যবহার করলে রাডারকে সহজেই ফাঁকি দেয়া যেতে পারে।

এন্টি-রেডিও সিগন্যাল রেডিয়েটর

একটি পুরানো প্রবাদ আছে, “বিষে বিষে বিষক্ষয়”। তার মানেই বিষকে বিষ দিয়েই দমন করা সম্ভব। একইভাবে যুদ্ধবিমানে যদি কোন এন্টি-রেডিও সিগন্যাল রেডিয়েটর রাখা যায় তাহলে তা রাডার থেকে আগত সিগন্যালকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে।

আধুনিক যুদ্ধবিমানগুলোতে এসব প্রযুক্তি বিদ্যমান থাকে। চীন, রাশিয়া এরকম প্রযুক্তির বিমান তৈরি করছে। যেমনঃ মিগ-২৯।

আরো কিছু আর্টিকেল

নাসা কিভাবে মঙ্গলগ্রহের ছবি পৃথিবীতে নিয়ে আসে?

মহাকাশে মৃত্যু হলে লাশের কি হবে? | মহাকাশ রহস্য

গুগল ম্যাপ কিভাবে কাজ করে? | Google Map

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here