বিদ্যুৎ আমাদের জন্য যেমন কল্যাণময় তেমনি এই বিদ্যুৎ যেকোন মুহুর্তে আমাদের জন্য হতে পারে জীবন বিপন্নের কারণ। আমাদের অসাবধনতার জন্য অনেক সময় ঘটে যায় দূর্ঘটনা। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের কাজে ব্যবহার করা হয় ট্রান্সমিশন লাইন। এই ট্রান্সমিশন লাইন নদী, পাহাড়, সাগরও পাড়ি দেয়। আমাদের দেশে যদিও সাগরের উপর ট্রান্সমিশন লাইন নির্মিত হয়নি কিন্তু যেসব দেশে OTEC (Ocean Thermal Energy Convertion) সিস্টেমে সাগরের উপর জেনারেটিং স্টেশন আছে সেসমস্ত দেশে সাগরের মধ্যেও সুবিশাল ট্রান্সমিশন লাইন চোখে পড়ে। আর সাগরের উপর ট্রান্সমিশন লাইন দেখলেই আমরা একটা প্রশ্ন মাথায় চলে আসে যে, ট্রান্সমিশন লাইভ লাইন সমুদ্রগামী জাহাজ বা অন্য কোন নৌযানের সংস্পর্শে এলে কি হবে?
ট্রান্সমিশন লাইভ লাইন সমুদ্রগামী জাহাজের সংস্পর্শে এলে কি হবে?
- প্রথমত লাইন ছিড়ে পানিতে পড়া এক প্রকার ইলেকট্রিক্যাল ফল্ট।
- যাকে লাইন টু গ্রাউন্ড ফল্ট হিসেবে আখ্যা দেয়া যায়।
- আর ফল্ট হওয়া মানেই অটোরিক্লোজারের সাহায্যে লাইন অটোমেটিকভাবে ট্রিপ করে। এটা ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমের সাধারণ নিয়ম।
- এ কারণেই মূলত সাজানো হয় সুইচগিয়ার সিস্টেম। হিংস্র বাঘকে যেমন খাঁচায় বন্দী করে রাখা হয় তেমনি সুইচগিয়ার সিস্টেমের সাহায্যে বিদ্যুৎ থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায় বের করা হয়।
- কিন্তু যদি খাচার তালা কোন কারণে ভেঙে যায়, খাচার রডে জং ধরে যায় তখন হিংস্র বাঘ খাচা ভেঙে বের হয়ে আসতে চাইবেই।
- লবণাক্ত পানি এবং লোহা দুটোই কিন্তু বিদ্যুৎ উত্তম পরিবাহী। তাই কোন পাওয়ার লাইন জাহাজ বা অন্য কোন ধাতব নৌযানের সংস্পর্শে আসলে শর্ট সার্কিট দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা প্রবল। কি মহাবিপদ তাইনা? চলুন তাহলে এক বাস্তব ঘটনা বলা যাক।
আর্টিকেল প্রসঙ্গে একটি বাস্তব ঘটনা
কিছু বছর আগে আমেরিকান এক মেরিন কর্মকর্তা তার পরিবার সহকারে ২২ ফুট দীর্ঘ একটি ওয়াটার বোটে করে সমুদ্রবিলাস করছিলেন।
হুট করে উনি উনার বোটের চারপাশে একটি শব্দ শুনতে পান।
মৌমাছির পাল ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে যেরকম শব্দ হয় সেই শব্দটি ছিল অনেকটা ঐরকম।
উনি বিস্মিত হলেন যে, এই সাগরের মাঝে মৌমাছি কিভাবে আসবে?
তখন তিনি লক্ষ করলেন একটি ট্রান্সমিশন লাইনের তার সমুদ্রের দিকে ঝুঁকে আছে।
তখন উনার জাহাজের কাপ্তানকে খুব দ্রুত জাহাজ ঐ এরিয়া থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে বললেন এবং তিনি সপরিবারে রক্ষা পেলেন।
এমতবস্থায় করণীয় কি?
- সাধারণত এরকম ঘটনার সম্মুখীন হলে অনেক বুদ্ধিমান প্রকৌশলীও কি করবে বুঝে উঠতে পারেনা। রীতিমত কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে।
- এমতবস্থায় উচিত আতংকিত না হওয়া। তাছাড়া জাহাজ বা নৌযানের কোন অংশ স্পর্শ না করা।
- এমনকি জাহাজ থেকে লাফিয়ে পানিতেও ঝাপ না দেয়া। যদিও আতংকিত হয়ে অনেকে এই কাজটি করে বসে।
আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের নিশ্চয়ই ভাল লেগেছে। বৈদ্যুতিক সতর্কতামূলক আর্টিকেলগুলো বেশি শেয়ার করে আপনার নিকট বন্ধুদের জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ।
বৈদ্যুতিক সতর্কতামূলক আরো কিছু আর্টিকেল
বর্ষাকালে বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার কারণ এবং করণীয়
পাওয়ার লাইন গাড়ির উপর ছিঁড়ে পড়লে গাড়ি থেকে বের হওয়া উচিত নয় কেন?
স্টেপ পটেনশিয়াল এবং টাচ পটেনশিয়াল | Step potential & Touch potential