সাধারণত সিংগেল ফেজ ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে থ্রি-ফেজ সাপ্লাই দেয়া যেতে পারে। আর এই ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং এর সময় পোলারিটি ঠিক থাকাটা অত্যাবশ্যক। আর সেইজন্য আজ আপনাদের সাথে ট্রান্সফরমার পোলারিটি টেস্ট নিয়ে আড্ডা জমাতে এসেছি। চলুন শুরু করা যাক।
ট্রান্সফরমার পোলারিটি দিয়ে মূলত কি বোঝানো হচ্ছে?
প্রথমে জেনে নিব “পোলারিটি” শব্দটি দিয়ে কি বুঝানো হচ্ছে? ট্রান্সফরমার পোলারিটি দিয়ে মূলত ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি কয়েলে আবিষ্ট ভোল্টেজের দিককে বুঝানো হচ্ছে। এবার জেনে আসা যাক কেন আমরা এই পোলারিটি টেস্ট করব?
কেন এই ট্রান্সফরমার পোলারিটি টেস্ট করতে হবে?
ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং সিস্টেমে যখন দুটো ট্রান্সফরমার প্যারালালে সংযুক্ত করা হয় তখন সঠিক কানেকশনের জন্য পোলারিটি জানা আবশ্যক। পোলারিটি ঠিক না থাকলে অনেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সেগুলো হলঃ
- ট্রান্সফরমারগুলোর নিজেদের মাঝে সার্কুলেটিং কারেন্ট প্রবাহিত হয়। যার ফলে অতিরিক্ত তাপমাত্রা সৃষ্টি হয় এবং লস বৃদ্ধি পায়।
- ট্রান্সফরমারে শর্ট সার্কিট হবে।
- পুরো ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
- সংযোগ দেয়া লোডে কারেন্ট প্রবাহিত হয় না।
ট্রান্সফরমার পোলারিটি টেস্টের প্রকারভেদ
সাধারণত ট্রান্সফরমার উইন্ডিং কানেকশনের ক্ষেত্রে দুই ধরনের পোলারিটি আছে। যথা:
- Additive Polarity
- Substractive Polarity
Additive Polarity
যদি প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর একই টার্মিনাল সংযুক্ত থাকে, সেইক্ষেত্রে তাকে Additive Polarity বলে।
Substractive Polarity
আর যদি প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর ভিন্ন সাইড সংযুক্ত থাকে তাকে substractive polarity বলে।
চিত্রের সাহায্যে পোলারিটির ব্যাখ্যা
- চিত্র প্রদর্শিত প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উইন্ডিং এর প্রতিটা টার্মিনাল এসি কারেন্টের দিক পরিবর্তন অনুসারে পজিটিভ এবং নেগেটিভ দুটোই হতে পারে।
- ধরা যাক, ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি সাইডের সাপেক্ষে A1 এবং A2 দুটোই যথাক্রমে পজিটিভ এবং নেগেটিভ টার্মিনাল ও a1, a2 সেকেন্ডারি সাইডের সাপেক্ষে পজিটিভ ও নেগেটিভ টার্মিনাল।
- যদি প্রাইমারি সাইডের A1, সেকেন্ডারি সাইডের a1 এবং A2 যদি a2 এর সাথে সংযুক্ত থাকে তাহলে এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, প্রাইমারি সাইড এবং সেকেন্ডারি সাইডের একই টার্মিনাল পরস্পর সংযুক্ত। এই ধরনের পোলারিটিকে বলে Additive Polarity।
- আবার যদি ট্রান্সফরমারের প্রাইমারির A1 প্রান্ত যদি সেকেন্ডারির a2, A2 প্রান্ত যদি a1 এর সাথে যুক্ত থাকে, তার মানে দাঁড়ায় প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি সাইডের ভিন্ন প্রান্ত পরস্পরের সাথে যুক্ত। এই ধরনের পোলারিটিকে বলে Substractive Polarity।
- যদি প্রাইমারি সাইডের A1, সেকেন্ডারি সাইডের a1 এবং A2 যদি a2 এর সাথে সংযুক্ত থাকে তাহলে Additive Polarity এর ক্ষেত্রে নীট ভোল্টেজ হবে V1+V2 আর যদি ট্রান্সফরমারের প্রাইমারির A1 প্রান্ত যদি সেকেন্ডারির a2, A2 প্রান্ত যদি a1 এর সাথে যুক্ত থাকে Substractive Polarity এর ক্ষেত্রে নীট ভোল্টেজ হবে V1-V2 হবে।
পোলারিটি টেস্টের ধাপসমূহ
- উপরের চিত্রানুসারে সার্কিট তৈরি করে অটো-ট্রান্সফরমারকে জিরো পজিশনে সেট আপ করুন।
- সিংগেল ফেজ সাপ্লাই চালু করুন।
- ভোল্টমিটার সংযুক্ত করে বিভিন্ন প্রান্তের ভোল্টেজ মেপে নিন।
- যদি প্রাইমারি ভোল্টেজ V1 এবং সেকেন্ডারি ভোল্টেজ V2 হয় তাহলে Additive Polarity সংযোগে ভোল্টেজ পাওয়া যাবে V3 = V1 + V2।
- আবার যদি Substractive Polarity হয় তাহলে এক্ষেত্রে ভোল্টমিটারের রিডিং হবে V3 = V1-V2।
ট্রান্সফরমার নিয়ে আরো কিছু পোস্ট