রঞ্জুদের সেমিস্টার ফাইনাল এক্সাম শেষ। তাই সে তার বন্ধুদের সাথে দূরে কোথাও ভ্রমণের পরিকল্পনা করল। কেউ সমুদ্র যেতে চাইল আবার কেউ পাহাড়ের চূড়ায়। অবশেষে সিদ্ধান্ত হল তারা বান্দরবান যাবে। যেই কথা সেই কাজ। রঞ্জু আর তার বন্ধুরা মিলে চলল সুদূর পাহাড়ি এলাকা বান্দরবানের দিকে।
বান্দরবানে তারা সারাদিন ঘুরাঘুরি করল। সেখানে আমিয়াখুম নামক একটি স্থানের পাহাড়ের চূড়ায় তারা রাত্রি যাপনের জন্য একটি কটেজ ভাড়া করল। রঞ্জুর মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না। পাহাড়ের পাদদেশে টেলিটকের কিছুটা নেটওয়ার্ক ছিল কিন্তু চূড়ার কটেজে একদম নেটওয়ার্ক ছিল না। কিন্তু পাশে ফিরতেই রঞ্জু রীতিমত অবাক!!
পাশে ফিরতেই রঞ্জু দেখল তার বন্ধু প্রান্ত তার বাড়িতে ফোন দিয়ে বাবা মা এর সাথে কথা বলছে। প্রান্তের কথা বলা শেষে রঞ্জু জানতে পারে প্রান্ত কোন মোবাইল সিম ছাড়াই বাসায় ফোন কল করেছে। রঞ্জু ত আরো অবাক বনে গেল! প্রান্ত থেকে সে জানতে পারল এই কাজটি সম্ভব হয়েছে স্যাটেলাইট ইরিডিয়াম ফোনের মাধ্যমে।
স্যাটেলাইট ইরিডিয়াম ফোন
স্যাটেলাইট ইরিডিয়াম ফোন এক ধরনের বিশেষ ফোন যা কোন প্রকার সেলুলার মোবাইল নেটওয়ার্কের সাহায্য ছাড়াই স্যাটেলাইট ফুটপ্রিন্টকে কাজে লাগিয়ে অন্য রেডিও নেটওয়ার্কের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। এটি খুব হালকা। ফলে ব্যবহার করতে আরামদায়ক। এখন জানব স্যাটেলাইট ইরিডিয়াম ফোন কোন ধরনের স্যাটেলাইটের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম।
স্যাটেলাইট ইরিডিয়াম ফোন কোন ধরনের স্যাটেলাইটের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে?
ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৭০০ মাইল বা প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার উপরে যে স্যাটেলাইট অবস্থান করে থাকে, তাকে বলা হয় LEO (Low Earth Orbit)। পৃথিবী থেকে দূরত্ব কম হবার দরুণ এই স্যাটেলাইটগুলো টেলিযোগাযোগে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও কিছু স্যাটেলাইট মোবাইল ফোন GEO (Geostationary Earth Orbit) এর সাথে যোগাযোগ তৈরি করতে সক্ষম। কিন্তু এতে রাউটিং তথা সিগন্যাল ট্রান্সমিশনে এ প্রচুর সময় নিয়ে থাকে। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে LEO ব্যবহার করা হয়।
স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহারের সুবিধা
- স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করে দুর্গম এলাকা, নির্জন দ্বীপ, পাহাড়ি এলাকা, সমুদ্রগামী জাহাজ, উড়োজাহাজ থেকেও কল করা সম্ভব। ফলে যেকোন প্রতিকূল বা বিপদ মুহূর্তে সহজে কারো সহযোগিতা পাওয়া সহজ হয়ে পড়ে।
- হিমালয় ট্র্যাকার, বৈমানিক, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, ফরেস্ট এডভেঞ্চারাররা স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করে থাকে।
স্যাটেলাইট ইরিডিয়াম ফোনের অসুবিধা
- ফ্রি স্পেস কমিনিউকেশন হওয়ার দরুণ এ ধরনের কল স্ট্যাবলিশড হতে সেলুলার ফোন কল থেকেও তুলনামূলক বেশি সময় নেয়।
- ঝড় বৃষ্টি, তুষারপাতের সময় স্যাটেলাইট কলে বিঘ্ন ঘটার সম্ভবনা বেশি।
- এই ধরনের কমিউনিকেশনে Signal Distortion/Fading এর প্রবণতা থাকে।
আরো কিছু আর্টিকেল
বিদেশ থেকে কল দিলে কথা কয়েক সেকেন্ড পর শোনা যায় কেন?
মোবাইল টাওয়ার বাড়ির ছাদে বসানো থাকে কেন? | Base Transceiver Station
চলন্ত অবস্থায় এক টাওয়ার থেকে অন্য টাওয়ারে প্রবেশ করলে মোবাইল কল কেটে যায় না কেন?