সার্কিট ব্রেকার ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার সিস্টেমের জন্য এক অতন্দ্র প্রহরী সেটা আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি। আমাদের ব্লগে ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার, SF6 সার্কিট ব্রেকার, অয়েল সার্কিট ব্রেকার নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছি। আজ আপনাদের সাথে এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকার নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি। খুব বেশি কথা না বলে, অল্প এবং সহজ ভাষায় বুঝানোর চেষ্টা করব।
এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকার কি?
বস্তুত সার্কিট ব্রেকারের কাজ কি? একটি পাওয়ার সিস্টেমে যখন ফল্ট বা শর্ট সার্কিট দূর্ঘটনা ঘটে তখন অতিরিক্ত প্রবাহের দরুণ সৃষ্ট আর্ককে অবদমন করা। এই আর্ক অবদমনের জন্য ব্যবহৃত পদার্থ একেক সার্কিট ব্রেকারে একেক রকম। সাধারণত এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকারে এই অযাচিত প্রবাহের দরুণ সৃষ্ট আর্ককে অবদমনের জন্য কম্প্রেসড এয়ার ব্যবহার করা হয়। সহজ ভাষায় বললে, এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকার এক ধরনের সুইচিং ডিভাইস যা কম্প্রেসড এয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে আর্ক অবদমন করতে সক্ষম।
এই সার্কিট ব্রেকারের অপারেটিং ভোল্টেজ কত?
এই সার্কিট ব্রেকারের অপারেটিং ভোল্টেজ 15kV-230kV পর্যন্ত হতে পারে। বিভিন্ন পাওয়ার কোম্পানিগুলো এই ব্রেকারটি ব্যবহার করে থাকে। এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকারের পরিবর্তে অনেকক্ষেত্রে প্লেইন এয়ার সার্কিট ব্রেকারও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকারের ধরন
এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকার তিন ধরনের হতে পারে। যথাঃ
- এক্সিয়াল ব্লাস্ট এসিবি
- ক্রস ব্লাস্ট এসিবি
- সাইড মুভিং কন্ট্যাক্ট সংযুক্ত এক্সিয়াল ব্লাস্ট এসিবি
এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকারের ফাংশন
প্রতিটি এয়ার সার্কিট ব্রেকার কন্ট্যাক্টের চারপাশে একটি চেম্বার লাগানো থাকে। এই চেম্বারকে বলা হয় ‘আর্ক চুট’। তাতে আর্ক অবদমন করা হয়। যদি আর্ক চুটের ভিতরে উপযুক্ত আকৃতি দেওয়া হয় এবং যদি আর্ককে আকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা যায়, তাহলে আর্ক চুট আর্ক অবদমন করতে সাহায্যে করবে।কাচের ফাইবার এবং সিরামিক দিয়ে শক্তিশালী উচ্চ তাপমাত্রার প্লাস্টিক আর্ক চুট তৈরি করা হয়।
আর্ক উপরের দিকে চালিত হওয়ার সাথে সাথে এটি স্প্লিটার সমন্বিত আর্ক চুটে প্রবেশ করে। চুটে থাকা আর্ক ঠান্ডা হয়ে যাবে, লম্বা হবে এবং বিভক্ত হবে তাই এয়ার সার্কিট ব্রেকার চালানোর সময় আর্ক ভোল্টেজ সিস্টেম ভোল্টেজের চেয়ে অনেক বড় হয়ে যায় এবং তাই শূণ্য কারেন্টে আর্কটি পুরোপুরিভাবে অবদমিত হয়ে যায়।
এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকারের সুবিধাগুলোঃ
- এ ধরনের ব্রেকারে অগ্নিকান্ডের সম্ভাবনা নেই।
- এই সার্কিট ব্রেকারের ব্রেকিং স্পীড অন্যান্য সার্কিট ব্রেকারের তুলনায় অনেক বেশি।
- আর্ক অবদমন প্রক্রিয়া খুব দ্রুত এবং সরল প্রকৃতির।
- এ ধরনের সার্কিট ব্রেকারের স্ট্যাবিলিটি খুবই ভাল।
- উচ্চমানের কারেন্ট থেকে সৃষ্ট আর্কও সহজেই অবদমন করতে পারে।
- এ ধরনের ব্রেকারে মেইন্টেনেন্সের তেমন দরকার পড়েনা।
তবে এই ব্রেকারের কিছু অসুবিধাও আছে। সেগুলো হলঃ
এয়ার ব্লাস্ট সার্কিট ব্রেকারের অসুবিধাগুলোঃ
- উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার কম্প্রেসর দরকার।
- পাইপ থেকে এয়ার প্রেসার লিকেজ হবার সম্ভবনা থাকে।
- রিস্ট্রাইকিং ভোল্টেজ সৃষ্টির প্রবল সম্ভবনা থাকে।
আরো কিছু আর্টিকেল
MPCB – মোটর প্রটেকশন সার্কিট ব্রেকারের ময়নাতদন্ত | মোটর মামার বডিগার্ড
ইন্ড্রাস্টিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সার্কিট ব্রেকারের সাথে পরিচিতি