প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর (Plant capacity factor):
কোন পাওয়ার প্ল্যান্টের এভারেজ লোড ও প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটির অনুপাতকে প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর (Plant capacity factor) বলা হয়। অর্থাৎ,
প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর = এভারেজ লোড : প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি
⇒ প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর = এভারেজ লোড / প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি
যদি এর সময়কে এক বছর বিবেচনা করা হয় তাহলে,
বার্ষিক প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর = বার্ষিক আউটপুট kWh / (প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি × 8760)
মূলত প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর দ্বারা একটি পাওয়ার প্ল্যান্টের রিজার্ভ ক্যাপাসিটি (Reserve capacity) বা সংরক্ষিত ক্ষমতাকে বুঝিয়ে থাকে।
একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট ডিজাইনের সময় কিছু রিজার্ভ ক্যাপাসিটি রেখেই ডিজাইন করা হয় যাতে ভবিষ্যতের ম্যাক্সিমাম ডিমান্ড মেটাতে পারে।
অর্থাৎ, প্ল্যান্টের ইনস্টল ক্যাপাসিটি সব সময় ম্যাক্সিমাম ডিমান্ড এর চেয়ে কিছুটা বেশি রাখা হয়।
সুতরাং, রিজার্ভ ক্যাপাসিটি = প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি – ম্যাক্সিমাম ডিমান্ড
এটি লক্ষণীয় যে, লোড ফ্যাক্টর এবং প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টরের মধ্যে যে পার্থক্য থাকে তা মূলত রিজার্ভ ক্যাপাসিটিকেই নির্দেশ করে।
প্ল্যান্টের ম্যাক্সিমাম ডিমান্ড যদি প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটির সমান হয় তাহলে লোড ফ্যাক্টর ও প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর এর মান একই হবে এবং এক্ষেত্রে প্ল্যান্টের কোন রিজার্ভ ক্যাপাসিটি থাকবে না।
প্ল্যান্ট ইউজ ফ্যাক্টর (Plant use factor):
জেনেরেটিং স্টেশন হতে উৎপাদিত শক্তি এবং প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি ও যতো ঘন্টা চলছে তার গুনফলের অনুপাতকে প্যান্ট ইউজ ফ্যাক্টর বলা হয়। অর্থাৎ,
প্ল্যান্ট ইউজ ফ্যাক্টর = উৎপাদিত শক্তি : (প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি × যতো ঘন্টা চলেছে)
⇒ প্ল্যান্ট ইউজ ফ্যাক্টর = উৎপাদিত শক্তি / (প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি × যতো ঘন্টা চলেছে)
চলুন একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বুঝার চেষ্টা করিঃ
একটি 20 মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট বছরে 2190 ঘন্টা ব্যবহার করার ফলে বছরে যদি মোট 7.35 × 106 কিলোওয়াট / ঘন্টা আউটপুট দেয় তাহলে এর প্ল্যান্ট ইউজ ফ্যাক্টর = 7.35 × 106 / {(20 × 103) × 2190} = 0.167 = 16.7%
এখানে একটি কথা উল্লেখ্য যে, পাওয়ার প্ল্যান্ট যদি বছরের সব সময়ই চলতে থাকে, তাহলে এর ক্যাপাসিটি ও ইউজ ফ্যাক্টরের মান সমান হবে।
কিন্তু সাধারণত কোনাে পাওয়ার প্ল্যান্টের সকল ইউনিট সমানভাবে সব সময় কাজ করে না, তাই প্ল্যান্ট ইউজ ফ্যাক্টরের মান সাধারণভাবে সব সময় সমান থাকে না যার ফলে এর মান ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টরের তুলনায় বেশি হয়। একইভাবে, পাওয়ার প্ল্যান্টের ক্যাপাসিটির সব অংশও সারাক্ষণ ব্যবহার করা হয় না, যার ফলে কখনোই ক্যাপাসিটি ও ইউজ ফ্যাক্টরের মান সমান হয় না।
বিঃ দ্রঃ
- লোড ফ্যাক্টর, ডিমান্ড ফ্যাক্টর, ডাইভার্সিটি ফ্যাক্টর ও ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর এর মান যত বেশি হবে প্ল্যান্ট পরিচালনা খরচ তত কম হবে।
- প্ল্যান্টের ম্যাক্সিমাম ডিমান্ড ও রেটেড ক্যাপাসিটি সমান হলে লোড ফ্যাক্টর ও ক্যাপাসিটি ফ্যাক্টর এর মান একই হবে।
এ সম্পর্কিত অন্যান্য লেখা পড়ুনঃ
ম্যাক্সিমাম ডিমান্ড ও ডিমান্ড ফ্যাক্টর সম্বন্ধে পড়ুন।
লোড ফ্যাক্টর ও ডাইভার্সিটি ফ্যাক্টর সম্বন্ধে পড়ুন।
কানেক্টেড লোড ও এভারেজ লোড সম্বন্ধে পড়ুন।
পাওয়ার প্ল্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সম্বন্ধে পড়ুন।
ইলেকট্রিক্যাল সাবস্টেশন সম্বন্ধে সহজ ভাষায় আলোচনা।
সাবস্টেশনের বিভিন্ন উপাদান সম্বন্ধে আলোচনা।
সহজ ভাষায় পাওয়ার ফ্যাক্টর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও প্রশ্ন-উত্তর।