করোনা ইফেক্ট এই টার্মটি আমাদের কাছে খুবই সুপরিচিত। বিভিন্ন বই-পুস্তকে এই নাম দেখে দেখে আমাদের চোখের ক্লান্তি চলে এসেছে। তার উপর এলো আবার করোনা ভাইরাস। এই করোনার যন্ত্রণায় প্রাণ যেন ওষ্ঠাগত! আজ ট্রান্সমিশন লাইনে করোনা ইফেক্ট নিয়ে এমন একটি আনন্দদায়ক আর্টিকেল শেয়ার করব যা আপনাদের মনকে পুলকিত করবে।
একটা মজার প্রশ্ন হল, এই করোনাকে আমরা এই নামে ডাকি কেন?
ধরুন, মনটা ভাল নেই। তাই রাতের আকাশের চাঁদ দেখে মনটা ভাল করার জন্য ছাদে গেলেন। গিয়ে দেখলেন আকাশের চাঁদ এর চারপাশে বৃত্তাকার এক আলোর আভার সৃষ্টি হয়েছে। সেটাকেই Astronomy তে Corona হিসেবে গণ্য করা হয়।
সাধারণত চাঁদ যখন পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে অবস্থান করে তখন এই দৃশ্য চোখে আসে। Corona effect এই শব্দটাও তার সাথে মিল করে করা হয়েছে। এখন হয়তো অনেকেই একটু একটু আন্দাজ করতে পারছেন করোনা মহাশয়ের ব্যাপারে।
Electrical Transmission লাইনে এই ইফেক্ট টা দেখা যায় কেন?
যখন ট্রান্সমিশন লাইনে দুটো conductor এর মধ্যে Spacing টা পারফেক্ট হয়না তখন এই ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এখন হয়তো অনেকের চোখে বৈদ্যুতিক খুটি ভেসে উঠছে।
এখন Spacing Perfect না হলে কেন এই সমস্যা হবে?
সাধারণত, Transmission line এ কন্ডাকটরগুলোর মাঝে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব রাখা হয়। যদি conductor এর দূরত্ব পারফেক্ট না হয় তখন দুই কন্ডাকটরের মধ্যবর্তী Air Electrostatic stress এর কারণে সহজেই আয়নিত হয়ে পড়ে। ফলে Air insulation strength break করে। যেটাকে আমরা ” Breakdown strength ” বলে থাকি।
অর্থাৎ, প্রত্যেক conductor এর মাঝে যদি কোন insulator থাকে তাহলে তাদের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। নাহলে একটি ভোল্টেজের উচ্চ চাপে ঐ অন্তরক পরিবাহীর ন্যায় আচরণ শুরু করে। এখন Air ionized হওয়ার ফলে বড় সড় বেগুনী স্পার্কিং সৃষ্টি করে, ঝিম ঝিম শব্দ করে আর এটাই করোনা ইফেক্ট (Corona effect)।
অনেকে ভাবছেন জানা জিনিসগুলো আবার বলার মানে কি? আসলে আমার আলোচনার মূল বিষয়বস্তু করোনা ইফেক্টের সংজ্ঞা না। আমার আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হল করোনার কারণে কি ধরনের পাওয়ার লস হল সেই হিসেব নিয়ে আলোচনা। সেজন্য সংজ্ঞার মাধ্যমে ব্যাপারটিকে গল্পের ছলে একটু স্মরণে নিয়ে আসলাম। কারণ করোনা ভাইরাস নিয়ে আর্টিকেল দেখতে দেখতে কনফিউজড হওয়াটাই স্বাভাবিক। চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় আসা যাক।
করোনা পাওয়ার লসের হিসেব
করোনা সংঘটিত হলে সবসময় এনার্জির লস হয় এবং এ লস আলো, তাপ এবং শব্দ শক্তিতে রুপান্তরিত হয়। সাধারণত ডিসরাপটিভ ভোল্টেজের মান অতিক্রম করলে করোনা পাওয়ার লস সংঘটিত হবে। এখন মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, এই ডিসরাপটিভ ভোল্টেজ আবার কি?
ডিসরাপটিভ ভোল্টেজ
সর্বনিম্ন যে ফেজ টু নিউট্রাল ভোল্টেজে করোনা সংঘটিত হয়, তাকে ডিসরাপটিভ ভোল্টেজ বলে।
করোনা পাওয়ার লসের সমীকরণ নিচে দেয়া হলঃ
এখানে, P = করোনা পাওয়ার লস
f = সাপ্লাই ফ্রিকুয়েন্সি, সাইকেল/সেকেন্ড/হার্জ
V = ফেজ টু নিউট্রাল ভোল্টেজের আর এম এস ভ্যালু
Vc = ডিসরাপটিভ ক্রিটিক্যাল ভোল্টেজের আর এম এস ভ্যালু
r = পরিবাহী তারের ব্যাসার্ধ
d = কন্ডাক্টরগুলোর মধ্যবর্তী দূরত্ব
সাধারণত ট্রান্সমিশন লাইন লসের ৩৩% লস করোনা ইফেক্টের কারণে সংঘটিত হয়ে থাকে।
আরো কিছু পোস্ট
করোনা ইফেক্ট, স্কিন ইফেক্ট, প্রক্সিমিটি ইফেক্ট, ফেরান্টি ইফেক্ট নিয়ে আলোচনা