এই লেখাতে যেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছেঃ
- ফ্রান্সিস টারবাইন সম্বন্ধে প্রাথমিক জ্ঞান।
- ফান্সিস টারবাইন যেসব অংশ নিয়ে গঠিত।
- ফ্রান্সিস টারবাইনের প্রকারভেদ–
- বন্ধ প্রকৃতির (cloase type) ফ্রান্সিস টারবাইন।
- খোলা প্রকৃতির (open type) ফ্রান্সিস টারবাইন।
- ফ্রান্সিস টারবাইনের সুবিধা ও অসুবিধা।
- ফ্রান্সিস টারবাইনের কার্যপদ্ধতি (ভিডিও)।
ফ্রান্সিস টারবাইন সম্বন্ধে প্রাথমিক জ্ঞানঃ
ফ্র্যান্সিস টারবাইন মূলত এক ধরনের রিয়্যাকশন টারবাইন। ১৮৪৮ সালে জেমস বি ফ্রান্সিস (James B Francis) এটি তৈরি করেন বলে তার নাম অনুসারে একে ফ্রান্সিস টারবাইন বলা হয়। এই টারবাইনকে মধ্যম উচ্চতা বিশিষ্ট পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রাইম মুভার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ফ্রান্সিস টারবাইন সাধারণত-
- ফ্রান্সিস টারবাইন ৪০ মি. থেকে ৬০০ মি. পর্যন্ত মধ্যম হেডে ব্যবহার করা হয়।
- এর আপেক্ষিক দ্রুতি (Specific speed) ১৫ থেকে ৯০ পর্যন্ত দেখা যায়।
- এটি ৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত পাওয়ার উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে।
ফান্সিস টারবাইন যেসব অংশ নিয়ে গঠিতঃ
ফ্রান্সিস টারবাইন নিম্নেলিখিত অংশগুলো নিয়ে গঠিতঃ
1. Turbine runner (টারবাইন রানার)
la. Runner cone (রানার কোন)
1b. Runner crown (রানার ক্রাউন)
lc. Runner band (রানার ব্যান্ড)
Id. Runner bucket (রানার বাকেট)
2. Wearing rings (ওয়েরিং রিংস)
3. Facing plates (ফেসিং প্ল্যাটস)
4. Spiral casing -SC (স্পাইরাল কেসিং)
5. Stay vanes (স্টে ভেনেস)
6. Guide vanes -GV (গাইড ভেনেস)
7. Draft tube (ড্রাফট টিউব)
8. Dischargering (ডিসচার্জিং)
9. Turbine shaft (টারবাইন শ্যাফট)
10. Turbine guide bearing (টারবাইন গাইড বিয়ারিং)
11. GV servomotor (গাইড ভেনেস সার্ভোমটর)
12. Servomotor rod (সার্ভো মোটর রড)
13. GV opening ring (গাইড ভেনেস রিং)
14. GV link (গাইড ভেনেস লিংক)
15. GV arm (গাইড ভেনেস আর্ম)
16. Pacing box or stuffing box (প্যাকিং বাক্স বা স্টফিং বক্স)
17. Head cover (হেড কভার)
18. Runner blade (রানার ব্লেড)
ফ্রান্সিস টারবাইনের প্রকারভেদঃ
ফ্রান্সিস টারবাইনের গঠনের পার্থক্যভেদে দুইভাগে ভাগ করা হয়। যেমনঃ
১. বন্ধ প্রকৃতির (close type) ফ্রান্সিস টারবাইন এবং
২. খোলা প্রকৃতির (open type) ফ্রান্সিস টারবাইন
১. বন্ধ প্রকৃতির (close type) ফ্রান্সিস টারবাইন:
এই জাতীয় ওয়াটার টারবাইন আনুভূমিক বা খাড়াভাবে স্থাপন করা হয়। খাড়া প্রকৃতির ফ্রান্সিস টারবাইনই সচরাচর ব্যবহার করা হয়। তবে, আনুভূমিক ওয়াটার টারবাইনের ঘূর্ণনগতি বেশি হয় বলে ইহার ব্যবহার অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। কারণ, ঘূর্ণনগতি বেশি হলে রানারের সঙ্গে জেনারেটর বেশি ঘূর্ণনগতিতে ঘুরে বাড়তি বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করতে পারবে।
এই টারবাইনের রানার spiral কেসিং-এর মধ্যে যুক্ত থাকে এবং তা সাহায্যকারী ভেনের মধ্য দিয়ে পানি সরবরাহ করে, সেই পানির ধাক্কায়ই টারবাইনের রানার ঘুরতে শুরু করে। পরবর্তীতে রানার হতে বিতাড়িত পানি tail race-এ যেয়ে জমা হয়। তবে কোন বড় আকৃতির ওয়াটার টারবাইনের সাহায্যকারী ভেনে পানি পাঠানোর জন্য কেসিং-এর মধ্যে স্টে ভেন (stay vane) যুক্ত করা হয়।
২. খোলা প্রকৃতির (open type) ফ্রান্সিস টারবাইন:
খােলা প্রকৃতির ফ্রান্সিস টারবাইন ৬ মিটার হতে ৯ মিটার পর্যন্ত পানির উচ্চতায় ব্যবহার করা হয়। তবে বর্তমান সময়ে এর ব্যবহার অনেকটাই কমে গেছে।
খোলা প্রকৃতির (open type) ফ্র্যান্সিস টারবাইন সম্বন্ধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেওয়া হলোঃ
ফ্রান্সিস টারবাইনের সুবিধাসমূহঃ
- এই ধরনের টারবাইনে রানার শ্যাফটের সাথে দুই বা ততোধিক সংখ্যক রানার যুক্ত করে শ্যাফটের ঘুর্ণন গতি বাড়িয়ে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের মাত্রা বাড়ানো যায়।
- সাহায্যকারী ভেন খোলা এবং বন্ধ করার মাধ্যমে ‘খোলা প্রকৃতির’ ফ্র্যান্সিস টারবাইনের গতি নিয়ন্ত্রন করা হয়।
- এর রেগুলেটিং শ্যাফট গভর্নরের মাধ্যমে চালানো হয়।
- এর কার্য ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সোজা আকৃতির ড্রাফট টিউব ব্যবহার করা হয়।
1. এটি সবচেয়ে বেশি দক্ষ ওয়াটার টারবাইন।
2. অপারেটিং হেডে ফ্রান্সিস টারবাইনের তারতম্য (variation) অনেক সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
3. এর যান্ত্রিক দক্ষতা পেল্টন টারবাইনের চেয়ে কম হ্রাস পায়।
4. ফ্রান্সিস টারবাইনকে পেল্টন টারবাইনের চেয়ে অনেক সহজভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
5. এর রানারের আকার ছোট।
6. সাধারণত পানি কম প্রবাহিত হলেও এর কোন হেড ফেইলুর (head failure) ঘটেনা।
ফ্রান্সিস টারবাইনের অসুবিধাসমূহঃ
1. সামান্য ময়লাযুক্ত পানির কারণে এর মারাত্মক ক্ষতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
2. এর Inspection (পরিদর্শন) তুলনামূলকভাবে কঠিন।
3. এর রানার সহজে পাওয়া যায় না।
ফ্রান্সিস টারবাইনের কার্যপদ্ধতি:
ফ্রান্সিস টারবাইনের কার্যপদ্ধতি দেখতে নিচের ভিডিওটি মনোযোগ সহকারে দেখুনঃ
হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্ট সম্বন্ধে অন্যান্য লেখাসমূহঃ
“হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্টের সকল কম্পোনেন্ট বা উপাদান সম্বন্ধে জানতে ক্লিক করুন।”
পেল্টন টারবাইন সম্বন্ধে আলোচনা।
হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্টের সকল কম্পোনেন্ট বা উপাদান।
পাওয়ার প্ল্যান্টঃ সংজ্ঞা, প্রকারভেদ ও কার্যপদ্ধতি।
পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইতিহাস ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্টের সুবিধা-অসুবিধা।
হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকারভেদ ও বিস্তারিত আলোচনা।