কমপ্লেক্স সার্কিটকে সহজভাবে সমাধান করার জন্য আমরা বিভিন্ন থিওরেম এর সাহায্য নিয়ে থাকি। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় একই সার্কিটে ভোল্টেজ সোর্স ও কারেন্ট সোর্স উভয়ই বিদ্যমান। সেক্ষেত্রে সার্কিটকে সহজভাবে সমাধান করার জন্য কারেন্ট সোর্সকে ভোল্টেজ সোর্সে বা ভোল্টেজ সোর্সকে কারেন্ট সোর্সে রুপান্তরের প্রয়োজন হয়। আর এই এক সোর্স হতে অন্য সোর্সে রুপান্তরের পদ্ধতিকে বলা হয় সোর্স ট্রান্সফরমেশন।
আমরা আজ সোর্স ট্রান্সফরমেশন সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আমাদের আজকের আলোচনায় যা যা থাকছেঃ
- ভোল্টেজ সোর্স কি?
- কারেন্ট সোর্স কি?
- ভোল্টেজ সোর্সকে কারেন্ট সোর্সে রুপান্তরের পদ্ধতি।
- কারেন্ট সোর্সকে ভোল্টেজ সোর্সে রুপান্তরের পদ্ধতি।
ভোল্টেজ সোর্স কি?
ভোল্টেজ সোর্স এমন একটি উৎস যার লোড পরিবর্তন হলেও নির্দিষ্ট পরিমান ভোল্টেজ সরবরাহ করতে থাকে।
ভোল্টেজ সোর্স এর ইন্টারনাল রেজিস্ট্যান্স খুবই কম।
কারেন্ট সোর্স কি?
কারেন্ট সোর্স এমন একটি উৎস যার লোড পরিবর্তন হলেও নির্দিষ্ট পরিমান কারেন্ট সরবরাহ করতে থাকে।
কারেন্ট সোর্স এর ইন্টারনাল রেজিস্ট্যান্স অসীম।
ভোল্টেজ সোর্সকে কারেন্ট সোর্সে রুপান্তরের পদ্ধতি:
ভোল্টেজ সোর্সকে কারেন্ট সোর্সে রুপান্তর করতে হলে আমাদেরকে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিম্নে উদাহরণসহ ধাপ সমূহ বর্ণনা করা হলোঃ
ধাপ ১: প্রথমে ভোল্টেজ সোর্স ও এর সংলগ্ন রেজিস্ট্যান্সকে মূল সার্কিট (চিত্র ১) হতে আলাদা করে নিতে হবে। (চিত্র ২)
ধাপ ২: এবার AB প্রান্তকে শর্ট করে একটি একক পূর্নাঙ্গ সার্কিটে রুপান্তর করতে হবে। (চিত্র ৩)
ধাপ ৩: ওহমের সূত্র (V = IR, I = V/R) অনুযায়ী সার্কিট হতে I এর মান নির্ণয় করতে হবে।
ধাপ ৪: I এর মানকে কারেন্ট সোর্স হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
ধাপ ৫: ভোল্টেজ সোর্স সংলগ্ন সিরিজ রেজিস্ট্যান্সকে কারেন্ট সোর্সের সাথে প্যারালালে সংযোগ করতে হবে। (চিত্র ৪)
ধাপ ৬: এবার তৈরিকৃত সম্পূর্ণ সার্কিটকে মূল সার্কিটের পূর্বের স্থানে সংযোগ করতে হবে। (চিত্র ৫)
উল্লেখ্য যে, ভোল্টেজ সোর্সকে কারেন্ট সোর্সে রুপান্তর করতে হলে প্রথম শর্ত হলো, ভোল্টেজ সোর্স এর সাথে সিরিজে রেজিস্টর থাকতে হবে।
কারেন্ট সোর্সকে ভোল্টেজ সোর্সে রুপান্তরের পদ্ধতি:
কারেন্ট সোর্সকে ভোল্টেজ সোর্সে রুপান্তর করতে হলে আমাদেরকে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিম্নে উদাহরণসহ ধাপ সমূহ বর্ণনা করা হলোঃ
ধাপ ১: কারেন্ট সোর্স ও এর সংলগ্ন প্যারালাল রেজিস্ট্যান্সকে মূল সার্কিট (চিত্র ৬) থেকে আলাদা করতে হবে। (চিত্র ৭)
ধাপ ২: ওহমের সূত্র (V = IR) সুত্র অনুযায়ী V এর মান নির্ণয় করতে হবে।
ধাপ ৩: V এর মানকে ভোল্টেজ সোর্স হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
ধাপ ৪: কারেন্ট সোর্স সংলগ্ন প্যারালাল রেজিস্ট্যান্সকে ভোল্টেজ সোর্সের সাথে সিরিজে সংযোগ করতে হবে। (চিত্র ৮)
ধাপ ৫: এবার তৈরিকৃত সার্কিটকে মূল সার্কিটের পূর্বের স্থানে সংযোগ করতে হবে। (চিত্র ৯)
অন্যান্য লেখাসমূহঃ
ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়ুন।